আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মোহামেডানকে হারাল এক আফগান

চার ম্যাচ শেষে পয়েন্ট তালিকার পাঁচ নম্বরে মোহামেডান। আবাহনী পেছাতে পেছাতে ৯-এ। বোঝাই যাচ্ছে এবারের প্রিমিয়ার লিগে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছে না ঐতিহ্যবাহী দুটি ক্লাবের কোনোটিই। কাল তো দুই দলেরই ভাগ্যে জুটেছে গায়ে জ্বালা ধরানো হার। মিরপুরে মোহামেডানকে মাত্র ৬৭ রানে অলআউট করে ২৩৯ রানের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।

বাংলাদেশের মাটিতে লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে এখন পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। আগের রেকর্ডটি ছিল ২০০০ এশিয়া কাপে, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে ২৩৩ রানে হারিয়েছিল পাকিস্তান। লিগে এটি মোহামেডানের প্রথম হার।
বিকেএসপিতে কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমির বিপক্ষে ৮ উইকেটে হেরেছে আবাহনী। বড় দলগুলোর মধ্যে কাল জিতেছে শুধু ব্রাদার্স ইউনিয়ন।

ফতুল্লায় খেলাঘরকে তারাও হারিয়েছে ৮ উইকেটে।
একটু বিস্ময়করই বলতে হবে, শেখ জামালের ৭ উইকেটে ৩০৬ রানে কোনো সেঞ্চুরি নেই। মাত্র ৫৪ বলে সর্বোচ্চ ৯৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন আফগান ব্যাটিং অলরাউন্ডার গুলবাদিন নায়েব। ছক্কা মেরেছেন ৭টি, বাউন্ডারি হাফ ডজন। গুলবাদিনের এই ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সঙ্গে যেভাবে সবাই একটু একটু করে অবদান রেখেছে, তাতেই দলের রানটা উঠে গেছে আকাশে।

৬৭ রানের ওপেনিং জুটি গড়া জহুরুল করেছেন ৩৩, জুনায়েদ ৪৭। দিলশান মুনাবীরা (৫১) ও মুশফিকুর রহিম (৫০) করেছেন ফিফটি। এর মধ্যে গুলবাদিনের সঙ্গে অধিনায়ক মুশফিকের ৭২ রানের একটা জুটিও হয়েছে চতুর্থ উইকেটে। কালই প্রথম মোহামেডানের পক্ষে নেমে শ্রীলঙ্কান রহস্য স্পিনার অজন্তা মেন্ডিস ৫৫ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন, এর মধ্যে এক ওভারে ফিরিয়েছেন মুশফিক ও চিগুম্বুরাকে।
ব্যাটিংয়ে রান না পেলেও বল হাতে তা পুষিয়ে দিয়েছেন জিম্বাবুইয়ান চিগুম্বুরা।

২.৪ ওভারে মাত্র ১৩ রানে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে বলতে গেলে একাই কোমর ভেঙে দিয়েছেন মোহামেডানের। এমনিতেই মোহামেডান একটু হীনবলই ছিল কাল। মোহাম্মদ নবী চলে গেছেন। আঙুলে চোট নিয়ে ফিরে গেছেন দিলশানও। জাতীয় দলের ফিজিওর পরামর্শে বিশ্রামে থাকায় খেলতে পারেননি মাশরাফি বিন মুর্তজাও।

উপুল থারাঙ্গা, আসিলা গুনারত্নে আর মেন্ডিসকে দিয়ে তাঁদের অভাব পূরণ হয়নি বলেই মনে হলো।
৩৯, ১০০, ৭৬, ৬২—প্রিমিয়ার লিগটা স্বপ্নের মতো কাটছে মোসাদ্দেক হোসেনের। সেই লিগই আবার দুঃস্বপ্নের মতো যাচ্ছে মোসাদ্দেকের দল আবাহনীর জন্য। বিকেএসপিতে বৃষ্টির কারণে ঘণ্টা তিনেক দেরিতে শুরু হওয়া ৩৪ ওভারের ম্যাচে ৬ উইকেটে ১৮৮ রান করে আবাহনী। তবে ৮৯ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর পঞ্চম উইকেটে মোসাদ্দেক-কান্দাম্বির (৫৩*) ৮২ রানের জুটি না হলে স্কোরটা আরও কম হতে পারত।

দলের ১৫ রানে ওপেনার ভুসি সিবান্দাকে হারালেও আরেক ওপেনার মিজানুর রহমান (৯১) হ্যামিল্টন মাসাকাদজার (৮৫*) সঙ্গে ১৬৬ রানের জুটি গড়েই কলাবাগান একাডেমিকে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দেন।
ফতুল্লায় খেলাঘরকে মাত্র ১০২ রানে অলআউট করে দিয়ে বেলা ২টার মধ্যেই খেলা শেষ করে দিয়েছে ব্রাদার্স। ব্রাদার্সের ২ উইকেটে ১০৩ রানের মধ্যে শ্রীলঙ্কান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের একারই অপরাজিত ৫১! ৩০ রানের মধ্যে দুই ওপেনার তামিম ও ইমতিয়াজ ফিরে গেলে নাফিস-ম্যাথুজ মিলেই জিতিয়ে দেন দলকে।
সং ক্ষি প্ত স্কো র
 মোহামেডান-শেখ জামাল, মিরপুর
শেখ জামাল: ৫০ ওভারে ৩০৬/৭ (জহুরুল ৩৩, জুনায়েদ ৪৭, মুনাবীরা ৫১, মুশফিক ৫০, নায়েব ৯৩*, চিগুম্বুরা ০, বাশার ২২, নাহিদুল ৪, সানি ০*; মুক্তার ১/৫৬, দেলোয়ার ১/৬৯, গুনারত্নে ০/১০, মেন্ডিস ৩/৫৫, মুরাদ ০/৩২, সাকলাইন ১/৫৯, রাজিন ১/২৪)। মোহামেডান: ২২.৪ ওভারে ৬৭ (থারাঙ্গা ০, রাজিন ২, শামসুর ২২, গুনারত্নে ১৪, সায়েম ০, ধীমান ৯, মুক্তার ০, দেলোয়ার ১২*, সাকলাইন ১, মেন্ডিস ০, মুরাদ ০; শফিউল ১/২৭, নায়েব ১/৮, রাজ্জাক ১/১৩, চিগুম্বুরা ৪/১৩, সানি ২/৪, মুনাবীরা ০/২)।


ফল: শেখ জামাল ২৩৯ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: গুলবাদিন নায়েব (শেখ জামাল)।
 আবাহনী-কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমি, বিকেএসপি
আবাহনী: ৩৪ ওভারে ১৮৮/৬ (নাজিমউদ্দিন ৯, শাহরিয়ার ২৬, পারানাভিতানা ১৬, ডি সরম ৬, মোসাদ্দেক ৬২, কান্দাম্বি ৫৩*, আলাউদ্দিন ২, শাহাজাদা ১*; তালহা ০/২৮, সাব্বির ৩/৪৭, শরীফউল্লাহ ২/৩৪, অপু ১/৩০, রাজা ০/৩৫, মাকসুদুল ০/১১)। কলাবাগান সিএ: ৩০.৫ ওভারে ১৮৯/২ (মিজানুর ৯১, সিবান্দা ৫, মাসাকাদজা ৮৫*, মার্শাল ৬*; আল আমিন ১/৩২, আলাউদ্দিন ০/৩৯, নাবিল ১/৩৪, শাহাজাদা ০/১৪, মোসাদ্দেক ০/১৮, কান্দাম্বি ০/৩৬, রেজাউল ০/১৬)।
ফল: কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমি ৮ উইকেটে জয়ী।


ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মিজানুর রহমান (কলাবাগান সিএ)।
 ব্রাদার্স-খেলাঘর, ফতুল্লা
খেলাঘর: ৩৩.৪ ওভারে ১০২ (ভ্যানডর্ট ৩৫, ফজলে রাব্বী ০, নিজামউদ্দিন ৪, শুভাগত ৭, ওয়ার্নাপুরা ১, ফয়সাল ৪, ইফতেখার ২২, আরিফুল ১, নান্টু ১০, মাসুম ৬, ফোরকান ২*; সেনানায়েকে ২/১২, মেহমুদ ১/২১, ম্যাথুস ৩/১৭, সানজামুল ২/২৫, সোহরাওয়ার্দী ১/২৩)। ব্রাদার্স: ২৪.৫ ওভারে ১০৩/২ (তামিম ২১, ইমতিয়াজ ৫, নাফিস ১৫*, ম্যাথুস ৫১*; শুভাগত ০/১৩, ফয়সাল ১/২২, মাসুম ০/২৫, নিজামউদ্দিন ১/৩, আরিফুল ০/২৬, ফোরকান ০/১৪)।
ফল: ব্রাদার্স ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস (ব্রাদার্স)।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।