আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফেসবুকের যতকথা



বর্তমানে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর যিনি কিনা জীবনে ফেসবুক শব্দটা শুনেন নাই (গ্রাম্য মানুষ বাদ)। বাংলাদেশেও ফেসবুক ব্যবহারকারির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কিছুদিন আগেই মনে হয় পড়লাম ৩৩ লাখ। এখন কত জানি না। তবে উত্তরোত্তর তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ফেসবুক অনেকটা ড্রাগ এডিক্টের মত। যার একবার নেশা পাইছে সে নাওয়া খাওয়া ভুলে সারাদিন এইটা নিয়েই পরে থাকেন। কয়েকদিন আগে একটা বাসায় বেড়াতে গেলাম। দেখলাম একটা ছোট ছেলে খুব মনোযোগ নিয়ে পিসির সামনে বসে আসে। মনে করলাম গেম-টেম খেলছে।

আলাপ জমানোর জন্য জিজ্ঞেস করলাম '' কি কর? '' তার উত্তর '' ফেসবুকে আসি''। আমি রীতিমত ধাক্কা খেলাম। এত্তটুকু ছেলে ফেসবুক। বয়স সবে ৫-৭ বছর হবে। যার এখন একটু দৌড়াদৌড়ি করার কথা, বিকালে একটু খেলার কথা সেও এখন এই ফেসবুক নিয়ে পরে আসে।

ফেসবুকের মাধ্যমে এখন অনেক অপ্রীতিকর ঘটনার কথাও কানে আসে। ইন্ডিয়াতে কোন এক মেয়ে নাকি সুইসাইডো করছে। তার নামে ফেইক আইডি খোলার কারণে। ফেসবুকের মাধ্যমে এখন হয়রানির স্বীকারো অনেকে হচ্ছেন। আপনি যখন কোনো ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলবেন আপনি আপনার নিজের সব তথ্যদি দিয়েই খুলবেন।

যার দ্বারা আপনাকে হুমকি, হয়রানি যে কেউ খুব সহজে করতে পারে। ফেসবুকে বেশি আসক্ত হলে পরিবারের সাথে বেশি সময় কাটানো যায় না। আগে যেখানে বাচ্চাদের সাথে খেলেতেন অথবা সবাই মিলে আড্ডা দিতেন সেটাও সম্ভব হয় না। হয়তো দেখা যাচ্ছে আপনি সেই সময়টুকু আপনার লেপটপ বা মোবাইলে সাইবার ক্যাফেতে ব্যয় করছেন। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ফেসবুক আরো বেশি ক্ষতিকর।

ফেসবুকে অনেক ড্রাগ এডিক্টেড ফটো, মদ্যপানের ফটো, মাদকাসক্ত ব্যাক্তি ছবি, ভিডিও অনেক কিছুই থাকে যার সাহায্যে খুব সহজেই একজন কিশোর বা কিশোরি মাদকাসক্তের প্রতি স্বীকার হয়। খারাপ কাজে লিপ্ত হয়। তার দেখা দেখি আরো অনেকেই তার পথ অনুসরণ করে। সোজা কথায়, নষ্ট হোয়ার পথ সুগম হয়। ফেসবুকে বেশি থাকার কারণে এক ধরণের মানসিক রোগো নাকি হয়।

আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে কত শত ফ্রেন্ড। আপনি তাদের নাম মনে রাখছেন, তাদের প্রোফাইল পিকচার আরো কত কি? এর ফলে মস্তিষ্কের উপরে চাপ পড়ে, মনে রাখার ক্ষমতা কমে যায়। ফেসবুকের আবিষ্কর্তা মার্ক জুকারবার্গ। তিনি বর্ণান্ধ। তাই ফেসবুকে এতো নীল রংয়ের ছড়াছড়ি।

নীল রং দেখলে আমাদের মস্তিষ্ক এক ধরণের হরমোন নিঃসরণ হয়। যা আমাদের প্রশান্তি জাগায়। এর কারণেই কিনা জানি না, মানুষ এতো সোসিয়াল নেটোয়ার্ক থাকতে ফেসবুকে এতো আনন্দ পায়। এতক্ষণ না হয় খালি ফেসবুকের অপকারিতাই বর্ণনা করলাম। ফেসবুকের উপকারিতা কি নেই? অবশ্যই আছে।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনি অনেক কিছু জানতে পারছেন। শিক্ষামূলক অনেক পেইজ গ্রুপ আছে। বই পড়া, সাধারণ জ্ঞান, বি সি এস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হোয়া সম্পর্কে- এক কথায় ফেসবুক জানার বিশাল ক্ষেত্র। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা একে নিজেরাই খারাপ কাজে ব্যবহার করছি। ইন্টারনেট আসলে ভালোর জন্যই।

মাথায় একটা প্রশ্ন জাগল, কী বোর্ডে কয়েকটা টাস টুস করার পরই আপনার সামনে সেই প্রশ্নের উত্তর চলে আসল। আগের মত আর আপনাকে লাইব্রেরিতে যেতে হয় না, হাজার হাজার বই খুঁজতে হয় না। কিন্তু আমরা সেটার অপব্যভার করি। বাজে কাজে সময় নষ্ট করি। আসেন, সবাই ভালো কাজের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহর করি।

খারাপ সাইট থেকে দূরে থাকি। ইন্টারনেটকে শুধু বিনোদনের জিনিস না রেখে নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করি।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.