আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাগলের পাগলী (শেষ পর্ব)

আজও নিজের মাঝে অসাধারণতার ছাপ খুঁজে বেড়াই কিন্তু প্রতিবারই নিজেকে খুব সাধারণরূপে আবিষ্কার করি। মন্দ কি...ভালই তো আছি।
দুজনেই নিরিবিলি হাঁটছে। তবে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হল না। পাশে পরীর মত চটপটে এক মেয়ে থাকলে যা হয় আরকি।

চট করেই বলে উঠে 'চল লাচ্ছি খাব। ' ওকে। রিয়াজ ও তাতে সায় দিয়ে হোটেল ফার্মগেটের দিকে হাঁটা দেয়। কিন্তু তাতেও বাগড়া দেয় পরীর নতুন পাগলাটে আবদার! - ওই শোন না...আমাকেও তোমাদের সাথে এলিফ্যান্ট রোড নিয়ে চল না প্লিজ। - মানে কি??? আমরা তো লেগুনায় করে যাব! তাছাড়া রাস্তায় অনেক কাদা।

সো কোনই প্রয়োজন নেই। - তাতে কি? না হয় রিক্সায় যাব। - রিক্সায়! তিনজন!!! মাথা খারাপ??? - প্লিজ প্লিজ প্লিজ না করো না। আমি এখন রুমে গিয়ে একা একা কি করব? - একটা কথাও বলবা না। মেজাজ খারাপ হচ্ছে কিন্তু।

- হোক তোর মেজাজ খারাপ। আমি তাতে ভয় পাই নাকি!! আসছে...ঢং করতে। আমি যাবোই যাব। এটাই ফাইনাল। আবার বেঁধে যায় তুমুল ঝগড়া।

পাবলিক রিঅ্যাকশন সামাল দিতে অনিচ্ছা সত্ত্বেও রিয়াজকে বারবার 'আরে দোস্ত...কি যে বলিস না তুই' বলে দাঁতে দাঁত খিঁচে হাসির অভিনয় করে যেতে হচ্ছে। আর তাতে গাধীটা আরও তেলেবেগুনে জ্বলে উঠছে। এক পর্যায়ে তো 'থাক তুই কুত্তা' বলে উল্টো দিকে হাঁটা শুরু করে দিল। রিয়াজ ও মেজাজ খারাপের দরুন কোন বাঁধা দিল না। তবে পাগলীটা কোথায় যাচ্ছে তা আড়চোখে ঠিকই লক্ষ্য রাখছে।

কিন্তু হায়! দেখতে দেখতে এক সময় যে ভিড়ে হারিয়ে গেল!! তার চোখদুটি একরাশ উৎকণ্ঠা নিয়ে হন্যে হয়ে কেবল একটি চেহারাকে খুঁজে ফিরছে। উৎকণ্ঠা দুশ্চিন্তায় রূপ নেয়ার আগেই সে সামনের দিকে হাঁটা দেয়। হঠাতই রাস্তার ওপাশের মোটা বিদ্যুতের খাম্বায় তার চোখ আঁটকে যায়। যা সন্দেহ করছিল ঠিক তাই! আরেকটু এগিয়ে গিয়েই দেখে পাগলীটা একটু পর পর উঁকি মেরে তার পাগলটাকে খুঁজছে। তাই দেখে নিজের অজান্তেই রিয়াজ মুচকি হেসে ফেলে।

ধীরে ধীরে কাছে গিয়ে পিছন থেকে ভোঁ করে উঠে এতে আহ্লাদীকন্যা থতমত খেয়ে রেগেমেগে অগ্নিমূর্তি ধারন করে। - ওই ওই শয়তান। তুই আবার আসছিস কেন? - ইচ্ছে হইসে তাই। তাতে তোর কি?? রাস্তাটা কি তোর নানার?? - খবরদার আর একটি কথাও বলবি না। তুই কি ভেবেছিস তোরে ছাড়া আমি একা রাস্তায় চলতে পারব না? - হুম তা তো দেখতেই পাচ্ছি।

হে হে হে - এবার আর কিছু বলল না (লজ্জা পাইছে বোধ হয় ) কি আর করা! শেষ মুহূর্তে বাধ্য হয়েই শয়তান মেয়েটাকে সাথে করে নিয়ে যেতে হল। কাজ শেষে অনেকক্ষণ হল বাটা সিগন্যাল দাঁড়িয়ে আছে। আরে আজব! একটি রিক্সাও যেতে চাচ্ছে না। ধীর পায়ে দুজনেই পাশাপাশি হাঁটছে। রিয়াজ পরীর হাতটি ধরে আছে।

- আচ্ছা এই মেয়ে তুমি এত পাগলামী কর কেন? - আবার কি করলাম - না এইযে আজ যেটা করলে?? - না করলে কি এভাবে হাতটি ধরে হাঁটতে!! গাধা ছেলে - পুরাই পাগলী একটা। - হি হি হি আমার পাগল টা। রিয়াজ আর কিছু বলে না। এক দৃষ্টিতে তার পাগলীটার দিকে তাকিয়ে আছে। গানের গলা না থাকলেও তার আজ চিৎকার করে গাইতে ইচ্ছে করছে, ***আমি যত বেশি ভাল বাসি তোমায়...তার চেয়ে বেশি ভাল বাসতে চাই***
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।