আর এক্ষেত্রে তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিকে ব্যবহার করছেন বলেও মনে করেন মুহিত।
নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক গণতন্ত্রের চ্যালেঞ্জ’ শিরোনামের এক আলোচনা সভায় তিনি এ অভিমত দেন।
আলোচনার শুরুতেই অর্থমন্ত্রী উপস্থিতদের কাছ থেকে প্রশ্ন আহ্বান করেন। সাংবাদিক, রাজনীতিক, সমাজকর্মী, লেখক, মুক্তিযোদ্ধাসহ ১৩ জন প্রশ্ন করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ইউনূস প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, “গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা মুহম্মদ ইউনূস নিজের তৈরি আইন লংঘন করেছেন।
এরপর সেই আইন লংঘনের দায় বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপানোর জন্যে তিনি তার আন্তর্জাতিক খ্যাতিকে ব্যবহার করছেন। ”
অর্থমন্ত্রী বলেন, নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর বহুমুখী ব্যস্ততার মধ্যে ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতি তেমন একটা মনোযোগ দিতে পারেননি। এতে প্রতিষ্ঠানটি এক ধরনের সমস্যা পড়ে।
মুহম্মদ ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার বিষয়ে মুহিত বলেন, “১২ বছর আগেই চাকরির বয়সসীমা পার হয়ে যাওয়ায় আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ জানিয়েছিলাম- ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ ছেড়ে দিন, আমরা আপনাকে একটি সম্মানজনক পজিশনে রাখবো। কিন্তু তিনি সেটি গ্রহণ করেননি।
আদালতে গেলেন। আদালতে তিনি জয়ী হতে পারেননি তার তৈরি আইনের কারণেই। ”
অর্থমন্ত্রী বলেন, মুহম্মাদ ইউনূস গ্রামীণের নাম ব্যবহার করে আরো ৫৪টি কোম্পানি গড়ে তোলেন, যা আইনসিদ্ধ নয়। এসব কোম্পানির সঙ্গে গ্রামীণ ব্যাংকের কোনো সম্পর্ক না থাকায় গ্রামীণ নাম ব্যবহারের জন্য তার ফি দেয়া উচিত ছিল। কিন্তু তিনি সেটি করেননি।
এভাবেই তিনি আইন লংঘন করেন।
দর্শকের এক প্রশ্নের জবাবে মুহিত বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের ৮২ লাখ অংশীদার (শেয়ার হোল্ডার) রয়েছে বলে মুহম্মদ ইউনূস দাবি করেন। কিন্তু কাউকেই লভ্যাংশ দেয়া হয়নি। তাদের মধ্যে মাত্র ৫৩ লাখ মানুষকে শেয়ার হোল্ডারের সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছে।
মুহম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক থেকে চলে যাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি আগের চেয়ে অনেক ভালভাবে চলছে বলেও উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী।
গ্রামীণ ব্যাংককে ১৯ টুকরো করার যে কথা দেশ-বিদেশে রটানো হয়েছে তা পুরোপুরি মিথ্যা বলেও জানান তিনি।
পদ্মা সেতু নিয়েও কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে এরইমধ্যে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই কার্যাদেশ দেয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিলের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
মুহিত বলেন, “পদ্মা সেতু নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিশ্ব ব্যাংকের ইনটেগ্রিটি ইউনিট জিহাদ ঘোষণা করায় আমরা সোচ্চার হয়েছি। তাদের আচরণের ব্যাপারে বিভিন্ন পর্যায়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এর ফলে আমরা লাভবান হচ্ছি। এখন অন্য প্রকল্পে দ্রুত অর্থ ছাড় দেয়া হচ্ছে। ”
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে সাবেক রাষ্ট্রদূত ও কলামনিস্ট মহিউদ্দিন আহমেদ, জাতিসংঘ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি একেএ মোমেন ও মিশনের প্রেসসচিব মামুন-অর রশীদ বক্তব্য দেন।
বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের চার দিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার সকালে নিউ ইয়র্কে পৌঁছান মুহিত। বুধবার সকালে তার ওয়াশিংটন ডিসিতে যাওয়ার কথা রয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।