আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্বে শক্তির ভারসাম্য ফেরানোর উদ্যোগ ও রাশিয়ার অস্ত্র ক্রয়!!

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা ইগোর μুতচেঙ্কো বলেছেন, বিশ্বে শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেছে। কাজেই রাশিয়া বিশ্বে শক্তির ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাবে এবং এ লক্ষ্যে রুশ সেনাবাহিনীর আরো আধুনিকায়ন করা হবে। তিনি রুশ রেডিওকে দেয়া সাক্ষাতকারে আরো বলেছেন, রাশিয়া নিজের সেনাবাহিনী ও নৌ বাহিনীকে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত করার ব্যাপক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে এবং এরই অংশ হিসেবে বছরে কয়েকশ’ কোটি ডলার খরচ করবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার এ মন্তব্যকে বিশ্বের দুই পরাশক্তি বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে নতুন করে পরমাণু অস্ত্রসহ অন্যান্য অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার ইঙ্গিত বলে মনে করছেন। শীতল যুদ্ধ অবসানের পর সাবেক এ দুই পরাশক্তি গণবিধ্বংসী অস্ত্রের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছিল।

কিন্তু সেনাবাহিনীকে আধুনিকায়নের ব্যাপারে দু’দেশের কর্মকর্তাদের পদক্ষেপ ও কড়া বক্তব্য থেকে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, চলতি ২০১৩ সাল যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে অত্যাধুনিক অস্ত্র-সস্ত্র বিশেষ করে পরমাণু অস্ত্র বিস্তারের প্রতিযোগিতা শুরুর বছর হতে পারে। বিশ্বে মজুদ মোট পরমাণু অস্ত্রের ৯০ শতাংশ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার হাতে। এ অবস্থায় রাশিয়া বিশ্বে শক্তির ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার যে কথা বলছে তাতে বোঝা যায়, দেশটি তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন করে পরমাণুসহ অন্যান্য অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু করার ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ প্রক্ষোপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন দিনের সরকারি সফরে আজ রাশিয়া যাচ্ছেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটি রাশিয়ায় তার দ্বিতীয় সফর।

সফরকালে রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে ১ হাজার মেগাওয়াট পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনসহ প্রতিরক্ষা, শিক্ষা ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা রয়েছে। রাশিয়া থেকে ৮ হাজার কোটি টাকার সমরাস্ত্র কিনছে সরকার। রাশিয়ার কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় ঋণে আট হাজার কোটি টাকার (১০০ কোটি ডলার) সমরাস্ত্র কিনতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর মধ্যে সেনাবাহিনীর জন্য সাত ধরনের এবং বিমানবাহিনীর জন্য চার ধরনের সমরাস্ত্র কেনা হবে। সেনাবাহিনীর সমরাস্ত্রের তালিকায় রয়েছে ট্যাংকবিধ্বংসী মিসাইল মেতিস-এম-১ ও করনেট-ই; সাঁজোয়া যান বিটিআর-৮০ ও বিটিআর-৮০-কে; স্বয়ংক্রিয় গ্রেনেড লঞ্চার এজিএস-৩০, নৌপথে সাঁজোয়া যান ও ট্যাংক পারাপারের উপযোগী পিপি-৯১ পন্টুন ও ট্যাংকের মাধ্যমে পরিচালিত এমটিইউ-৯০ সেতু।

বিমানবাহিনীর কেনাকাটার তালিকায় রয়েছে ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ জঙ্গি বিমান, সামরিক পণ্য পরিবহন উপযোগী এমআই১৭১এসএইচ হেলিকপ্টার, গামা-ডিই/গামা-সি১ই রাডার ও কাস্তা-২ই২ রাডার। খসড়া চুক্তি অনুযায়ী, আট হাজার কোটি টাকার এই কেনাকাটার জন্য অগ্রিম হিসেবে রাশিয়াকে ঋণের ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৮০০ কোটি টাকা দিতে হবে। ঋণের সুদ হবে সাড়ে ৪ শতাংশ। ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে কেনাকাটার প্রক্রিয়া শেষ করার সময়সীমা ধরা হয়েছে। অর্থাৎ বিশ্বে শক্তির ভারসাম্য ফেরানোর উদ্যোগের এ পর্যায়ে বাংলাদেশ কতৃক রাশিয়ার অস্ত্র ক্রয় যথার্থ সিদ্ধান্ত ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।