@ সিরিয়ায় চলা গনহত্যার উপর এক বড়সড় পোষ্ট লিখলাম। ইরানি মিডিয়ার ভাড়াটিয়ারা ব্লগগুলোতে খুবই কপিপেস্ট মারতেছে দেখে ভাবলাম এটা নিয়ে লিখতেই হয়। আসল খবর সবাই জানুক। তিউনেশিয়ার বেন আলীর বিরুদ্বে মানুষ জাগছে, ঠিক আছে।
মিশরের মোবারকের বিরুদ্বে মানুষ জাগছে, ঠিক আছে।
ইয়েমেনের সালেহের বিরুদ্বে মানুষ জাগছে, ঠিক আছে।
বাহরাইনের শেখের বিরুদ্বে মানুষ জাগছে, ঠিক আছে।
সিরিয়ার আসাদের বিরুদ্বে মানুষ জাগছে, ঠিক নাই ঐডা ষড়যন্ত্র!!
দেখুন কিভাবে এই শিয়া আলাওয়িরা সিরিয়ার ক্ষমতায় এলো, কিভাবে সিরিয়ার টেলিফোন,মোবাইল ব্যবসা, তেল, গ্যাস, সব ধরনের ব্যাংক ও ব্যবসা বানিজ্য এই সংখ্যালঘু আলাওয়ি শিয়ারা নিয়ন্ত্রন করে আর বাকি ৯০% সুন্নীদের ভুখা রাখে।
সিরিয়াকে যখন ফ্রান্স উপনিবেশিক বানায়, তখন সিরিয়ার সুন্নীরা ফ্রান্সের বিরুদ্বে সশস্র যুদ্ব চালিয়ে যেতে থাকে। হামাসের সামরিক সংগঠন ইজ্জাদিন আল কাশেম নাম করন করা হয় ঐ সিরিয়ার সশ্স্র সুন্নী গেরিলা লিডারের নাম দিয়ে।
এই সুন্নিদের ঠেকাতে ধুদন্ধর ফ্রান্স সরকার ও ব্রিটিসদের মতো ডিভাইড এন্ড রুলে যায়।
ফ্রান্স সরকার তখন সিরিয়ার জাতীয় আর্মী গঠন করে যাদের ৮০% এর ও বেশী আলাওয়ী শিয়া। এই আলাওয়ী শিয়ারাই তখন সিরিয়ার আর্মি ডোমিনেট করতো। ফ্রান্স সিরিয়া ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় এদের হাতেই ক্ষমতা দিয়ে যায়। এরাই সিরিয়া ১৯৬০ হতে শাসন ও শোষন করে আসছে।
তারপর এলো হাফেজ আল আসাদ। তার মৃত্যুর পর হাফিজ আল আসাদ।
সিরিয়ার সেনাবাহিনী হতে ব্যবসা বানিজ্য, প্রশাসন সবকিছুই এই আসাদ ফ্যামিলি নিয়ন্ত্রন করে।
আরব বসন্তের ধাক্কায় এই সিরিয়ার লোকেরাও রাস্তায় নামে স্বৈরাচারের বিরুদ্বে।
কিন্তু বিধি বাম!!!!!
সিরিয়ার সেনাবাহিনী তিউনেশিয়া বা মিশরের মতো নয়, যারা জনগনের উপর বুলেট না চালানোর অভিপ্রায় ব্যাক্ত করে, যারা বলে আমরা পারবোনা আমাদের দেশের লোকদের উপর গুলি চালাতে।
সিরিয়ার আর্মিতো আর ৯০% সুন্নীদের নয়, ওরা আলাওয়ী শিয়া। তাই গুলি চলতে থাকে বিক্ষোভকারীদের উপর। কিছু সুন্নি আর্মীও ছিলো ওদের মাঝে যারা গুলি চালাতে অস্বীকার করে, এবার সিরিয়ার শিয়া আর্মি ওদের উপরই গুলি চালায়, সুন্নি আর্মিও পাল্টা লড়াই শুরু করে। এবার শান্তিপূর্ন মিছিলগুলো ভায়োলেন্ট হয়ে উঠে।
এবার আর্মিদের মধ্যে থাকা সুন্নিরা জনগনকে প্রটেক্টশন দিতে শুরু করে।
এটা অনেকটা আমাদের দেশের স্বাধীনতা যুদ্বের মতো। বাঙালী সৈন্যরা যারা সেনাবাহিনীতে ছিলো, ওরা বাঙালীদের উপর গনহত্যা দেখে ডিফেক্ট হয়ে মুক্তিযুদ্বে অংশগ্রহন করে।
সিরিয়ার যুবকদের ৭০% বেকার। ৪০ বছর ধরে দেশটা লুটেপুটে খেয়ে খোসাটা রেখেছিলো আসাদ পরিবার। এমনিতে বেকার তার উপর সরকারের বিরুদ্বে প্রতিবাদ করায় লাশ হয়ে ফিরতে তাই ওরাও অস্র হাতে তুলে নেয়।
নেলসন মেন্ডেলা একবার বলেছিলেন, ইটস ফিউটাইল এন্ড ইউজলেস ফর আস টু কনটিনিউ মেইক নন-ভায়োলেন্স প্রটেস্ট এগেইনস্ট এ গভার্নমেন্ট হুজ রিপ্লাই অনি সেভেজ এটাক ওন ইন্নোসেন্ট সিভিলিয়ান।
আমার শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু, আমার শত্রুর বন্ধু আমার শত্রু, এইভাবে বিভিন্ন সুবিধাবাধী দেশ এগিয়ে আসে।
যেমন, ব্রিটেন, আম্রিকা ও ফ্রান্স। অথচ এই ফ্রান্সই একসময় এই শিয়াদের ক্ষমতায় এনেছে সুন্নিদের টেকাতে।
তুরস্ক এখানে এসেছে ভাতৃত্বের বন্ধনে, যদি তুরস্কে একেপি ক্ষমতায় না থেকে কামাল আতাতুর্কের দলটা থাকতো, তাহলে কোন সিরিয়ানকে তুরস্কে শরনার্থী হিসেবে ঢুকতেই দিতোনা।
সৌদি এখানে এসেছে ইরান ও হিজবুল্লাহকে কাউন্টার দিতে। সৌদি বরাবরই ইরানকে নিজেদের জন্যে থ্রেট মনে করে।
ছোট্ট দেশ কাতার ২০০৬ সালে লিবানান-হিজবুল্লাহ-ইসরাইল যুদ্বে হিজবুল্লাহ ও লেবাননকে অনেক সাহায্য করে। বিভিন্ন সড়ক, পুল, হসপিটাল তৈরী করে। তাই কাতারের আমিরকে নিয়া হিজবুল্লার টিভি আল-মানার প্রসংসার গান ও তৈরী করে।
হামাসকে ও কাতার প্রচুর সাহায্য করে, কিছুদিন গাজায় তিনিই প্রথম সফর করেন কোন দেশের প্রধান হয়ে। ৫০০ িলিয়নের ও বেশী সাহায্য দেন। তাছাড়া হামাসের প্রধান খালিদ মিশেল ও তার হেডকোয়ার্টার সিরিয়া ছেড়ে কাতার ও কায়রোর মধ্যে করেছে।
এইভাবে কাতার যেই বিপন্ন তাকে সাহায্য করে তাই, তারা ফ্রি সিরিয়ান আর্মিকেও সাহায্য করে।
তবে আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্স শুধু লিপ সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে এখনো, একটা বুলেট ও দেয়নি।
এ জন্যে ফ্রি সিরিয়ান আর্মিও তাদের উপর ক্ষেপ্যা।
বিপরীতে সিরিয়াকে অস্র ও অর্থ দিয়ে রাশিায়া, ভেনেজুয়েলা, উত্তর কোরিয়া ও ইরান সাহায্য করছে।
১৯৯৬ সাল হতে ২০০৮ পর্যন্ত ইসরাইলের সাথে কাতারের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিলো। কিন্তু গত ২০০৮ এর গাজা যুদ্বের পর কাতার সবধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে। সিরিয়ার সাথেও এই ধরনের সম্পর্ক ছিলো, তারাও ২০০৮ এর যুদ্বে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে।
এই ডা দেখতে পারেন, Click This Link
কাতারের আমিরই সর্বপ্রথম কোনো দেশের প্রধান অবরুদ্ব গাজা ভিজিট করে $৪০০ মিলিয়ন দিয়েছে ফিলিস্তিনিদের। হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়া সয়ং কাতারের আমিরের গাড়ি চালিয়ে রাফা বর্ডার হতে গাজা সিটিতে নিয়ে আসেন।
মূল খবর এখানে, Click This Link
এই গত নবেম্বরে চলা গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসনে আহত ফিলিস্তিনিদের চিকিৎসার জন্যে $১০ মিলিয়ন ডলার দেয়। Click This Link
হামাসের খালিদ মিশাল। সিরিয়ার দামেস্কে থাকতেন।
কিন্তু সিরিয়ার চলা সুন্নিদের গনহত্যায় তিনি সমর্থন দেন নি। হামাসের সকল লিডাররা দামেস্কে ছেড়ে দিয়ে নতুন আরব বসন্তের দেশ মিশর, তিউনেশিয়ায় পাড়ি জমান। শত হলেও হামাস একটা সুন্নী সংগঠন, সুন্নীদের উপর শিয়াদের গনহত্যা এরা মেনে নেয় নি।
এজন্যে খালিদ মিশালের মতো হামাসের লিডারকেও ইরানের মিডিয়াগুলো "জায়োনিস্টের এজেন্ট" বলেছে। কি রকম নীচু মানুসিকতার হলে এরা এমন হয়।
Click This Link
সিরিয়ার সুন্নি বিদ্রোহীরা পশ্চিমাদের উপর রেগে আছে, শুধু লিপ সার্ভিস দেওয়ায়। কোন অস্রতো দিচ্ছেনা বরং কাতার ও তুরস্ককেও মানা করছে পোর্টেবল ক্ষেপনাস্র না দেওয়ার জন্যে।
সুন্নিদের উপর চলা গনহত্যা। ইউটিউবে হাজার হাজার ভিডিও পাবেন। এখন আর আগের দিন নাই।
সবার হাতে হাতে মোবাইল। রেকর্ড করে ইউটিউবে আপলোড করা যায় সহজে, যাতে বিশ্ব জানতে পারে।
এটা খুবই করুন। গুগলে লগিন ছাড়া দেখতে পারবেন না। গুগলে লগিন করে নিজের বয়স যাচাই দিয়ে দেখতে পারেন।
এ পর্যন্ত
এ পর্যন্ত ৬০,০০০ লোককে আসাদের শিয়া আর্মি হত্যা করছে।
এবার প্রশ্ন করতে পারেন কেন তুরস্ক ও কাতার সাহায্য করছে।
ব্রিটিস সাংবাদিক ১৯৭১ সালে ইন্দিরা গান্ধিকে প্রশ্ন করেছিলো, আপনারা কেন বাংলাদেশের গেরিলাদের সাহায্য করেছেন।
উত্তরে ইন্দিরা বলেছিলেন, আপনারা কি চান যে বাংলায় গনহত্যা চলতে থাকুক? নারীদের উপর ধর্ষন চলতে থাকুক। ওদের উপর গনহত্যা চলতে থাকে যখন কোন গেরিলা ছিলো না।
এটা তোমাদের পত্রিকা, আমেরিকার পত্রিকা, আরব পত্রিকায় দেখতে পারেন।
গনহত্যা থামাতেই আমরা বাংলার গেরিলাদের সাহায্য করছি।
এবার আসুন সিরিয়ায় বিদেশী যোদ্বা সম্পর্কে। সিরিয়ার এই যুদ্বে সবকিছু সেক্টেরিয়ান লাইনে চলে গেছে। ২০০৩ এ আম্রিকার ইরাক আগ্রাসনের পর পাশবর্তী সুন্নী দেশগুলো হতে যুবকরা দলে দলে ইরাকে ঢুকতে থাকে।
ওরা আমেরিকার বিরুদ্বে অনেকদিন গেরিলা লড়াই চালিয়ে যায়। সূরা নিসার ৭৫ নাম্বার আয়াতে আছে যে ' তোমাদের কি হলো, যে তোমরা লড়াই করছোনা ঐ সব নির্যাতীত নারী ও শিশুদের পক্ষে যারা অত্যাচারে অতিস্ট হয়ে বলছে, হে আল্লাহ আমাদের এই জালিমদের হাত হতে রক্ষা করুন। "
এই আয়াতের উপর ভিত্তি করেই অল্প কিছু লোক বিভিন্ন দেশ হতে গিয়েছে যাদের মধ্যে বেশীর ভাগই ইরাকের সাবেক সুন্নি গেরিলা যোদ্বা । বিপরীতে যে খবরটা ইরানি মিডিয়া প্রকাশ করেনা তা হলো লেবাননের হেজবুল্লাহ ও ইরাকের মোক্তাদা আল-সদরের মাহদী আর্মী ও দলে দলে ঢুকে তাদের সিরিয়ান শিয়া আর্মির সাথে সুন্নিদের হত্যা করে চলেছে। ওরাও কিন্তু বিদেশী যোদ্বা।
হিজবুল্লাহর অনেক যোদ্বা সিরিয়ায় নিহত ও হয়েছে।
সিরিয়ার শিয়ারা গড ইন্কারনেশানে বিশ্বাসী, তার মানে খোদা যে কারো ভিতর রুপ ধরে আসতে পারে। তেমনি খোদা এখন বাশার আল-আসাদের রুপ ধরে আছে, এরা মূর্তি পূজা ও করে। এবার দেখুন সিরিয়ার বাশার আল-আসাদকে শিয়ারা সেজদা করছে, তাকে খোদা হিসেবে ঢাকছে। আসাদের সমর্থরা বলছে তারা আল্লাহর আগে আসাদের ইবাদাত করে এবং বাথিজম তাদএর ধর্ম।
আল-জাজিরাতে লাইভ তর্ক বিতর্কে আসাদের সাপোর্টার বলছে আমি তোমাকে ও তোমাকে যে আল্লাহ সৃষ্টি করেছে তাকে চ্যালেন্জ করছি। হিজবুল্লাহ আল-মানার টিভিতে আরেক আসাদ সাপোর্টার বলছেন, যে কেউই আমাদের কর্নারে নিয়ে আসতে চাইবে আমার তার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকেই বরং ধাক্কা দিয়ে কর্নারে নিয়ে আসবো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।