আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশ সেনা,নৌ ও বিমান বাহিনীর সর্ব শেষ সংযোজন



সারাক্ষন শুধু বিদেশের ট্যাংক, প্লেনের উপর চোখ থাকে । তাই ভাবলাম এইবার আমাদের দেশের দিকে নজর দেই । নজর দেওয়ার পর দেখলাম বাংলাদেশ কোন অংশেই কম না । প্রতি বছর বিশাল বাজেট থাকে এই কেনাকাটার পেছনে । প্রতিরক্ষা নীতিকে সামনে রেখে মূলত কেনাকাটা করে থাকে ।

এখানে শুধু ২০১৩ সালের নতুন সংযোজন গুলোর সাথে পরিচিত করার চেস্টা করেছি । বাংলাদেশ সেনাবাহিনী : ১. BTR-80(Armoured Transporter) : ১৯৯৪ সাল থেকে বাংলাদেশে বিটিআর-৮০ এর ব্যাবহার শুরু হয়েছে । এর মধ্যে ২০১২ সালে রাশিয়া থেকে ১৫০ টি বিটিআর-৮০ আনা হয়েছে যার মধ্যে ১৪০ টি এপিসি(আর্মড পারসনেল ক্যারিয়ার) , ৫ টি এপিসি-এ্যাম্বুলেন্স ভার্সন, ৫ টি এআরভি(আর্মড রিকভারি ভেহিকেল) । বিটিআর-৮০ তে কমান্ডার, ড্রাইভার ও গানারসহ ৭ জন সৈন্য বহন করতে পারে । ২৬০ এইচপি ইঞ্জিনের এই ভেহিকেলটি রাস্তায় ৮০ কিঃমিঃ/ঘন্টা ও ভাসমান অবস্থায় ৯ কিঃমিঃ/ঘন্টা বেগে ছুটতে পারে ।

সুরক্ষার কথা বলতে গেলে এটায় আছে এনবিসি(নিউক্লিয়ার,বায়োলজিকাল,কেমিক্যাল) প্রোটেকশন , অটোমেটিক ফায়ারিং সিস্টেম, কেমোফ্লোজ ডিভাইস ও সেলফ রিকভারি উইঞ্ছ । অ্যাটাকিং মোডে যাওয়ার জন্য এতে আছে 14.5mm ও 7.62 mm মেশিন গান যাদের ফায়ারিং রেঞ্জ যথাক্রমে ২ ও ১.৫ কিঃমিঃ । এতে আরো আছে ৬ টি স্মোক গ্রেনেড লাঞ্চার । ২. Cobra 2 LAV : বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অতি সম্প্রীতি তুরস্ক থেকে আমদানী করেছে Otokar Cobra II LAV(Light Armoured Vehicles) । ৫০ ক্যালিবারের হেভি মেশিন গান ছাড়াও এতে আছে ৫ টি স্মোক গ্রেনেড লাঞ্চার ও ইনফ্রারেড ক্যামেরা ।

প্রায় ৭ টন ওজনের এই ভেহিকেলটি ড্রাইভার বাদে ৮ জন সৈন্য বহন করতে পারে । ২৫০ এইচপির ইঞ্জিন নিয়ে সর্বোচ্চ ১১০ কিঃমিঃ/ ঘন্টায় ৭০০ কিঃমিঃ পর্যন্ত যেতে পারে । পেট্রল মিশনের সময় এই কোবরা সেনাবাহিনীর ফায়ারপাওয়ার ও মোবিলিটিতে বৃদ্ধিতে অনেক সহায়তা করবে । সাধারনত পেট্রল মিশনের সময় সেনাবাহিনীতে টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার ৭৯ সিরিজ ব্যাবহার করা হয় । নিকট ভবিষ্যতে সব গুলো টয়োটা কোবরার মাধ্যমে রিপ্লেস করা হবে ।

পুরাই হিরো হিরো ভাব । ৩. Polaris ATV : বাংলাদেশ আর্মির প্যারা কমান্ডো টিমের জন্য সম্প্রতি আমেরিকা থেকে আনা হয়েছে Polaris ATV(all-terrain vehicle) । হেলিকপ্টার ডেপ্লয়এবল এই ভেহিকেল গুলো যুদ্ধাবস্থায় যে কোন পরিবেশে দ্রুততম সময়ে স্নাইপার পৌঁছে দিতে পারে । প্রথমে দেখে খেলনা মনে করছিলাম পরে নেটে খুইজ্জা দেখলাম কামে আছে । বাংলাদেশ বিমানবাহিনী : ১. এফ-৭ বিজি১: বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যুক্ত হলো চীনে তৈরি চতুর্থ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান এফ-৭ বিজি১ ।

চীনে এটার নাম হচ্ছে J-7 যা মুলত রাশিয়ান মিগ-২১ এর লাইসেন্স বিল্ট ভার্সন এর উপর ভিত্তি করে তৈরি । এটা ফাইটার অথবা ইন্টারসেপ্টার দুই কাজেই ব্যাবহার করা যায় । এই প্লেনটি মূলত তৈরি করা হয়েছে গ্রাউন্ড অ্যাটাক মিশনের জন্য যা যেকোনো আবহাওয়ায় পারফর্ম করতে পারে । একেকটি প্লেনের মূল্য প্রায় ৯.৮ মিলিয়ন ডলার । সবই ঠিক আছে মাগার এয়ার টু গ্রাউন্ড অ্যাটাকের সাথে এয়ার টু এয়ার অ্যাটাকের ক্যাপাবিলিটি থাকলে ভালো হইত ।

২. এমআই-১৭১এসএইচ: বহুবিদ কাজের উপযোগী রাশিয়ার তৈরি এই এমআই-১৭১এসএইচ হেলিকপ্টার। এপ্রিলের শুরুর দিকে দেশে পৌছায় এমন ৬ টি হেলিকপ্টার । একেকটি কপ্টারের মূল্য ১৫ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি । বিভিন্ন মিশন যেমন- সৈন্য ও মালামাল পরিবহন, ট্রুপ ফায়ার সাপোর্ট, এয়ার টু সারফেস অ্যাটাক, কমব্যাট সার্চ এন্ড রেসকিউ অপারেশনে ব্যাবহার করা যায় । ৩ জন ক্রু সহ ৩৬ জন সৈন্য বহন করতে পারে ।

এটায় আছে অত্যাধুনিক Shturm-V high-precision গাইডেড মিসাইল সিস্টেম যেটা রিয়াক্টিভ আর্মর দ্বারা সুরক্ষিত যেকোনো ট্যাংককে ধ্বংস করতে পারে । এছাড়াও এতে আছে 80 S-8 আনগাইডেড রকেট, GSh-23L 23mm ক্যানন ও 7.62mm PKT মেশিন গান । চরম এক খান মাল নিছে , সব কামই করতে পারে । বাংলাদেশ নৌবাহিনী : ১. বিএনএস সমুদ্র জয় : বিএনএস সমুদ্র জয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় ও ভারী যুদ্ধ জাহাজ । এটার আগের নাম ছিল USCGC Jarvis যা আমেরিকান কোস্ট গার্ড এ কমিশন্ড হয়েছে ১৯৭২ সালে ।

বুঝলাম না এত পুরান মাল আনার কি দরকার ছিল । আমাদের দেশেই তো যুদ্ধ জাহাজ তৈরি হচ্ছে । আর আনলে তাদের নৌবাহিনীর একটা জাহাজই নিয়া আসত । যাই হোক নিয়া ফেলছে, এখন এইটা তো আমাদের কাজেই লাগবে । যদিও এখনো তেমন কিছু শুরু করে নাই তবুও প্ল্যান আছে এটায় ৮ টা অ্যান্টি শিপ মিসাইল, ৮ টা সারফেস টু এয়ার মিসাইল, ১ টা 76mm মেইন গান , ২ টা ৬ ব্যারলের 30mm গেটলিং গান এবং ৬ টা টর্পেডো লাগান হবে ।

গুড লাক । ২. ডোরনিয়ার ২২৮ এনজি : দেশের সমুদ্রসীমায় সার্বক্ষাণিক নজরদারি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সংযুক্ত হয়েছে অত্যাধুনিক ডোরনিয়ার ২২৮ এনজি মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট। নজরদারির কাজে বিশেষভাবে ব্যবহৃত এই উড়োজাহাজ দেশের পুরো সমুদ্রসীমা দ্রুততর সময়ে প্রদক্ষিণ করতে সক্ষম। জার্মানির তৈরি এই প্লেনটি একটানা ১০ ঘণ্টা আকাশে বিচরণ করে দুই হাজার কিলোমিটারেরও বেশি পথ অতিক্রম করতে সক্ষম। এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ।

শুধু সামরিক যানবাহনের দিক দিয়েই নয় প্রশিক্ষণ ও রণকৌশলেও অনেক দিক দিয়ে উন্নত আমাদের সেনারা । তারই একটা নিদর্শন বাংলাদেশ আর্মির প্যারা কমান্ডো টিমের ছবি । যদিও এটি পোস্ট বহির্ভুত ছবি তারপরেও আমার খুব পছন্দের । দেখলেই একটা জোস জোস ভাব আসে । তথ্যসূত্র – http://www.bdmilitary.com উইকিপিডিয়া ও গুগল মামা


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৭ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.