আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জীবন থেকে নেয়া দুইডা টুকরো ঘটনা...............

জীবন একটা বাঁশ ঝাড়........খালি মুথা আর মুথা.....

বৈশাখী মেলাঃ ২০০৩ সালের ঘটনা বাংলা কত ছিল এখন কইতারবোনা। সেবার মেলা উপলক্ষ্যে মামার বাড়ি আমলা-সদরপুর গেলাম। আমার কিউরিয়াস মাইন্ড তো বিরাট টাসকিত। মেলার সব স্টল গুলো সাজানোর দায়িত্ব আমার বড় ভাই+বন্ধুদের । আমিও যথারিতি এইদলের সদস্য ।

তো মেলার আগের সারা রাত ধরে সবাই মিলে আমরা স্টল তৈরীর কাজ করছি সাথে নিজেদের স্টলটাও সিরাম ভাবে শক্ত-পোক্ত করে নিচ্ছি। রাত ৪টার দিকে জরুরী সভা করে স্টল এর নাম ঠিক করা হল। আমারদের বন্ধুমহলে রাজনের আলাদা কদর ছিল শোলার কাজের। সবাই মিলে রাজন আর এক ছোট ভাই শুভকে দায়ীত্ব দেওয়া হল দোকানের নাম খোদায় করার জন্য। সারা রাতের ক্লান্তি ভুলে ওরা কাজ নিয়ে চলে গেল ভোর ৫ টার কিছু আগে।

বিকেলে যথারিতি মেলার উদ্বোধন করবেন এলাকার চেয়ারম্যান সাহেব। তিনি চলে এসেছেন কিন্তু আমাদের দোকানের নাম ফলক নিয়ে ওই দুই বান্দার খবর নাই। লেট লতিফরা ৬.৩০ এর কিছু পরে এসে তরিঘরি করে নামফলক লাগিয়ে দিল। আমরা কিছু বললাম না । নাম ফলক লাগানোর কিছুক্ষন পর থেকেই অদ্ভুত কিছু লক্ষ্য করা শুরু করলাম আমরা সবাই।

মেলায় আগত কোন মেয়েই আমাদের স্টল এ আসছে না কিন্তু আশে পাশে জটলা করে খালি দোকানের দিকে আঙুল তুলে সবাই কি যেন দেখাচ্ছে। আমার কিউরিয়াস মাইন্ড জানতে চাইল ঘটনা ডা কি। দোকান এর সামনে যেয়ে আমিও টাস্কিত হইলাম। গত রাতে সবার ডিসিশন মোতাবেক দোকানের নাম ঠিক করা হয়েছিল " ধানে ঘাসে" আর এ আমি কি দেখিলাম । সবাইরে বাহিরে ডাকলাম বললাম কি করেছে নিজের চোক্খে দেখ................ শালারা সকালে কোন কাজ করেনি।

সকাল থেকে মান্জামেরে ঘুমিয়ে বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে তরিঘড়ি করে শোলাকেটে নাম লিখেছে যে ........... ধানের ধ-আকার বাদ আর ঘাসের ঘ-আকার বাদ। দূর্গা পুজো : ২০০২ সালের দূর্গা পুজোর প্রতীমা বিসর্জন দেখবো বলে আলমডাঙ্গায় বিকালে সব বন্ধুরা মিলে গার্লস স্কুলের পিছনে আমাদের ঘাটি মৌসুমী নার্সারীতে অবস্থান নিয়েছি । কারন চন্দন দা দের প্রতীমা এই পথদিয়েই যাবে। আমি , চন্দন দা , চন্চলদা, উৎপল ভাই, রায়হান , মিন্টু, মিথুন সহ সবাই। হঠাৎ দেখিযে এক রিক্সা ওয়ালার সাথে চন্দন দা , চন্চলদা, উৎপল ভাই নার্সারীর ভিতরে চলে গেল।

রায়হান বলল পিনিক নিতে যাচ্ছে.... আমি আবার তখন পিনিক শব্দটার সাথে তেমন পরিচিত না। রায়হান বলল ওরা তিন জন সকাল থেকেই টাল অবস্থায় আছে ... ওদের নাকি সিডিউল ছিল দশমীর দিন ঘুম থেকে উঠে সব্জী পান( গাঁজা) দুপুরে বাংলা/ কেরুর ভদকা আর বিসর্জন এর আগে স্পিরিট স্প্রাইট যোগে পান। সকালের দুইটা সমান ভাবে হয়েছে তাই শেষ টার জন্য আদের ভিতরে গমন। মিনিট পাঁচেক পর ফিরে কমান্ড দিল উৎপল ভাই লিমন - রায়হান সবাই রিক্সাই ওঠ। আগেথেকে ৭ টা রিক্সা ঠিক করা ছিল আমরা সবাই একে একে রিক্সাই উঠলাম।

উৎপল ভাই বললেন আমার পরের রিক্সাই রায়হান আর লিমন আয়। তার কথামতই রিক্সা লাইন করা হল। আমাদের আগের রিক্সাই চন্চলদা আর উৎপল ভাই । রিক্সা যেই চলতে শুরু করেছে আর অমনি উৎপল ভাই তার রিক্সার হুড এর উপর দিয়ে লাফমেরে আমার রাক্সার সামনে। তার অভিযোগ কে নাকি তাকে মাতাল বলেছে।

উৎপল ভাই আমাকে বলছে " লিমন তুই বল আমি কি মাতাল??" বুঝলাম অবস্থা বেগতিক সারাদিন খাবার পেটে না পড়ুক মাল পড়েছে । বললাম কে বলছে ভাই আপনি মাতাল ? বললেন ওরা বলছে যে আমি নাকি মাতাল । তুই বল আমি কি মাতাল ??? আমি কি করবো বুঝেপারছিনা বললাম না ভাই আপনি মাতাল না । তখন তিনি বললেন তুই যদি মনে করিস আমি মাতাল তাহলে আমি মাতাল আর যদি মনে করিস আমি মাতাল না তাইলে এই দেখ আমি হাঁটলাম তোরা আয় রিক্সা নিয়ে আমার পিছনে বলে দ্রুত পায়ে হাটা শুরু করলেন। অবস্থা চরম বেগতিক আমি আর রায়হান রিক্সাথেকে নেমে দৌড়ে হিয়ে ভাইকে ধরে একপ্রকার জোড়করে রিক্সায় তুলে দিলাম ।

তার পর প্রতীমা বিসর্জনের সময় তার সে কি নাচ। আসলে আমি সেদিনের ঘটনা থেকে একটা বিষয় শিখেছি যে ওই অবস্থায় উৎপল ভাই যাইথাক না কেন একটা কঠিন ও বাস্তব সত্য আমার সামনে তুলে ধরেছিলেন তার ওই কথা গুলোর মাঝে। তুই যদি মনে করিস আমি মাতাল তাহলে আমি মাতাল আর যদি মনে করিস আমি মাতাল না তাইলে এই দেখ আমি হাঁটলাম তোরা আয় রিক্সা নিয়ে আমার পিছনে এই কথাটার সাথে একটু মিলিয়ে নিন আমাদের রাজনৈতিক দল ও ব্যাক্তিদের। দেখেন কোন কঠিন সত্য উপলব্ধি করতে পারেন কি না। বি:দ্র:- নাম ব্যবহার করার জন্য চন্দন দা , চন্চলদা, উৎপল ভাই আমাকে ক্ষমা করবেন।

আজ আপনাদের খুব মনে পড়ে। বিকালে বাড়ি যাব তাই হয়তো সবার মন্তব্যের উত্তর দেওয়া সম্ভব হবে না । ছুটি শেষে ফিরে সবার জবাব দিব। সবাই কে ঈদুল আযহা ও বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.