আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সীমানা ছাড়িয়ে

বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন বাংলাদেশের কৃতী শিক্ষার্থীরা। তাঁদের মধ্যে কজন লিখেছেন প্রবাসে তাঁদের ক্যাম্পাস-জীবনের কথা

 

যেন এক টুকরো টিএসসি

আমাদের ক্যাম্পাসের সবচেয়ে ঐতিহাসিক স্থান হলো ‘হর্স শু’, যেটা অনেকটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরের মতো। ওখানে কেউ হয়তো ঘাসের মাঠে শুয়ে-বসে পড়ালেখা করছে, কেউ খেলছে ফ্রিসবি, দলবেঁধে গিটার নিয়ে গান করছে কেউ কেউ। পাশে রাসেল হাউসকে তুলনা করা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সঙ্গে। সেখানে নানা জাতির নানা রঙের অনুষ্ঠান লেগেই থাকে।

আমাদের একুশের অনুষ্ঠানে যেমন হয়তো আফ্রিকার কিংবা তুরস্কের মানুষ অংশ নিচ্ছে, ওদের অনুষ্ঠানেও যাচ্ছি আমরা—এভাবে সুন্দর একটা যোগাযোগ তৈরি হয় সব দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস অনুষদ বাংলাদেশিদের জন্য এক গর্বের জায়গা। কারণ, এখানে আটজন বাংলাদেশি শিক্ষক রয়েছেন। পাবলিক হেলথ বিভাগে এম মাহমুদ খান, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে জামিল খান আছেন বিভাগীয় প্রধান হিসেবে। তড়িৎকৌশল বিভাগে মোহাম্মদ আলী আছেন গ্র্যাজুয়েট ডিরেক্টর হিসেবে।

এ ছাড়া সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে জসিম ইমরান, নাভিদ সালেহ, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে প্রসূনকান্তি মজুমদার, তানভীর ফারুক, পাবলিক হেলথ বিভাগে ঋষিকেশ চক্রবর্তী— প্রত্যেকেই নিজ নিজ গবেষণার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সুনাম অর্জন করেছেন। প্রতি ঈদে বা কোনো উৎসবেই বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দাওয়াত করে খাওয়ান শিক্ষকেরা, এটা এখানে খুবই আনন্দের একটা ব্যাপার।

আমরা যারা বাইরে পড়তে এসেছি, যেখানেই থাকি, যেখানেই যাই, এক টুকরো বাংলাদেশ বানিয়ে ফেলি ওই জায়গাটিকে। যা কিছু বলি, যা কিছু করি আমাদের বুকের ভেতরটা বাংলাদেশের লাল-সবুজে রাঙানো সব সময়।

চমক হাসান

তড়িৎকৌশল বিভাগ

ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলাইনা, যুক্তরাষ্ট্র

 

দেশের বাইরে প্রথম

এ বছর ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে আমি গুজরাটে পড়তে এসেছি।

আমি পড়ছি গুজরাট টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির শংকলচান্দ প্যাটেল কলেজে। হোস্টেল আমাদের কলেজ কাম্পাসের মধ্যেই। শুরুতে আমাদের বিদেশিদের সবারই একটু দ্বিধা ছিল, নতুন জায়গা, নতুন লোকজন; তাদের সঙ্গে কীভাবে মিশব, তারা আমাদের কীভাবে নেবে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি, এখানকার সব শিক্ষার্থী অনেক ভালো, অনেক বন্ধুপরায়ণ। শিক্ষকেরাও আন্তরিক।

ক্লাসে নতুন কোনো শিক্ষক এলেই আমার সঙ্গে প্রথমে এসে কথা বলেন। জিজ্ঞাসা করেন, আমি কোন জায়গা থেকে এসেছি, কীভাবে এলাম, কোন ভাষায় পড়ালে আমি বুঝতে পারব ইত্যাদি। এখানে অনেক নতুন বন্ধু হলো। বন্ধুরা অনেক সাহায্য করে। নতুন কোনো বইয়ের খোঁজ তাদের কাছেই পাই।

এ ছাড়া তারা নিজের বই দিয়েও সাহায্য করে।

এভাবে শুরু হলো দেশের বাইরে নতুন পরিবেশে নতুন এক অধ্যায়। আর জীবনের চলার পথে যোগ হলো কোনো কিছু করে দেখানোর সম্ভাবনা। এখান থেকে অর্জিত জ্ঞান দেশের কাজে লাগাতে চাই। বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের সমমানের দেশ হিসেবে দেখতে চাই।

অর্ঘ্য চাকমা

কম্পিউটার প্রকৌশল, গুজরাট টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি, ভারত

 

অনেক নতুন নতুন বন্ধু পেয়েছি

আমার বিভাগের শিক্ষকদের ব্যবহারে আমি যারপরনাই মুগ্ধ। তাঁদের প্রোফাইলই বলে দেয় তাঁরা কী পরিমাণ ব্যস্ত, অথচ একটা মেইল করলে, সেটা যত সামান্য ব্যাপারেই হোক না কেন, ছয় ঘণ্টার মধ্যে বিস্তারিত জবাব হাজির! বাংলাদেশ আর যুক্তরাষ্ট্রের লেখাপড়ার বিরাট একটা পার্থক্য আমার চোখে পড়ে। দেশে ক্লাসে ভালো ফল করার জন্যই আমরা সব সময় পড়তাম। নতুন কিছু শেখার জন্য বা জানার জন্য কদিন পড়েছি তা মনেই পড়ে না! আর এখানে ক্লাস এসাইনমেন্ট আর প্রজেক্টগুলো এমনভাবে সাজানো থাকে যে কোনো কিছু পুরোপুরি না বুঝে, মনোযোগ না দিয়ে কোনো উপায়ই নেই। পড়াশোনার পাশাপাশি আমি বিভাগে রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবেও কাজ করছি।

দেশে সারা জীবনই বিভিন্ন স্টুডেন্ট গ্রুপের সঙ্গে জড়িত ছিলাম, এখানে এসেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ‘নিউ আরবানিজম’ নামক নগর পরিকল্পনার একটা নতুন ধারাকে প্রমোট করার জন্য আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে ‘স্টুডেন্টস ফর নিউ আরবানিজম নামে একটা সংগঠন খুলে ফেললাম। ’ আমাকে করা হলো এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। আর সেই সঙ্গে সবাই অনেকটা জোর করেই আমাকে আরেকটা সংগঠন ’স্টুডেন্ট প্ল্যানিং অ্যাসোসিয়েশন’-এর সহসভাপতি বানিয়ে দিল। এই সংগঠনগুলোর জন্য কাজ করতে গিয়ে অনেক নতুন বন্ধু পেয়েছি, অনেকে মিলে বিভিন্ন সম্মেলনে যোগ দিয়েছি।

সেমিস্টার ব্রেক বা অন্য কোনো উপলক্ষে ছুটি পেলেই আমরা বেরিয়ে পড়ি ঘোরাঘুরি করতে।

নাবিলা নূর

সিটি অ্যান্ড রিজিওনাল প্ল্যানিং

ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট অ্যারলিংটন, যুক্তরাষ্ট্র

 

যত ইচ্ছা বই নিতে পারব

যুক্তরাষ্ট্রকে বলা হয় সম্ভাবনার দেশ। বিভিন্ন দেশের মানুষ এখানে আসেন তাঁদের স্বপ্ন পূরণ করতে। কয়েক মাস হলো আমিও এখানে এসেছি।

শিক্ষার্থী ও বইপড়ুয়াদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের লাইব্রেরিগুলো যেন স্বর্গরাজ্য।

প্রথম যখন এখানে একটি লাইব্রেরিতে গেলাম, মনে হলো আমি আমার সারা জীবন ওখানেই বই পড়ে কাটিয়ে দিতে পারব। একদিন লাইব্রেরিতে বইয়ের সারিতে চোখ বোলাচ্ছি, হঠাৎ আমার বয়সী এক বিদেশি মেয়ে এসে আমাকে জিজ্ঞেস করল, ‘হ্যালো! তোমাকে কি আমি কোনো সাহায্য করতে পারি?’ ও আমাকে জানাল যে, পড়ার জন্য আমি বিনা পয়সায় যত ইচ্ছা বই লাইব্রেরি থেকে বাসায় নিয়ে যেতে পারি। মেয়েটা কথায় কথায় বলল, তার নাম অ্যানা এবং সে এখানে পড়াশোনা করতে এসেছে রাশিয়া থেকে। পড়াশোনার পাশাপাশি সে লাইব্রেরিতে খণ্ডকালীন কাজও করে। যুক্তরাষ্ট্রে অ্যানা আমার প্রথম বন্ধু।

এভাবেই আস্তে আস্তে যুক্তরাষ্ট্রকে পরিচিত মনে হতে লাগল।

রাইসা আমিন

ওয়ালনাট হিলস হাই স্কুল, ওহাইও, যুক্তরাষ্ট্র

 

বাংলায় কথা বলাটা অনেক মিস করি

বাংলাদেশকে যে আসলে কতটা ভালোবাসি, তা এখানে এসেই বুঝতে পেরেছি। তিন বছর আগে কানাডার মাটিতে পা রাখি। তখন ক্রেডিট ট্রান্সফারের মাধ্যমে এখানে ভর্তি হতে হয়েছিল।

কানাডা দেশটা এমন, এখানে বছরের প্রায় ১২ মাসই শীত থাকে।

এখানকার গ্রীষ্মে যে তাপমাত্রা থাকে, তা আমাদের দেশের শীতের তাপমাত্রার কাছাকাছি! এত শীত হলেও এখানে সবকিছু সাজানো-গোছানো আর নিয়মমাফিক। বিশেষ করে সারা দিন ল্যাবওয়ার্ক, অ্যাসাইনমেন্ট, কুইজ আর কাজের চাপে দিনগুলো কেমন করে পার হয়ে যাচ্ছে, টেরই পাচ্ছি না।

এখানে আমার অনেক বিদেশি বন্ধু আছে, যাদের সঙ্গেই অধিকাংশ সময় কেটে যায়। কানাডার এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ানো, কখনো আবার গ্রামের দিকগুলোয় চলে যাওয়া, বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়া—এমন করেই ছুটির দিনগুলো পার করি। আমার বন্ধুদের মধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিভিন্ন দেশের বন্ধু রয়েছে, তাই আমাদের মধ্যে নিজ নিজ দেশের ভাষা-সংস্কৃতির আদান-প্রদান চলতে থাকে প্রতিনিয়ত।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার পরিচিত কোনো বাঙালি নেই বলে বাংলায় কথা বলাটা অনেক মিস করি।

ফারিয়া সফিনা জামান

ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ইউনিভার্সিটি অব অটোয়া, কানাডা।

 

দেশে ফিরে শিক্ষক হতে চাই

২০১০-এ ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে পাশ করার পর চলে আসি যুক্তরাষ্ট্রে। ভর্তি হই সিটি ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগে। আমরা বাঙালি শিক্ষার্থীরা মিলে এখানে গঠন করেছি বিএসএ (বাংলাদেশ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন)।

নিউইয়র্কের প্রায় সব ক্যাম্পাসেই এই সংগঠন আছে। আমরা সাংস্কৃতিকসন্ধ্যার আয়োজন করি, অন্য দেশের শিক্ষার্থীদের সামনে নিজেদের দেশ ও সংস্কৃতি তুলে ধরি। বিদেশে দেশি মানুষ পাওয়া মানেই সে আপন কেউ। কাউকে ভর্তি হতে সাহায্য করা, নিজের অবস্থান থেকে ভর্তি তথ্য আদান-প্রদান করা, নতুন শহরে পড়তে আসা ছোট ভাইকে এক রুমের বাসা খুঁজে দেওয়া, খণ্ডকালীন কাজ করা—এই সব মিলিয়েই আমাদের জীবন। অবসরে সময় পেলে ফটোগ্রাফি করা, ফেসবুকে দেশে ফেলে আসা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, এক মাসের ‘আনলিমিটেড ট্রান্সপোর্ট’ কার্ড নিয়ে শহর ঘুরতে বের হওয়া, কিংবা বাঙালি খাবারের দোকান খুঁজে খেতে বসে পড়া।

এভাবেই এখানে সময় যাচ্ছে। একদিন গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি নিয়ে বের হওয়ার স্বপ্ন দেখি। পাহাড়ঘেরা ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের জীবন এখনো নস্টালজিক করে তোলে। খুব ইচ্ছা, ওখানে অন্তত একবার হলেও শিক্ষকতা করার।

আসিফ--ইলাহী

কম্পিউটার প্রকৌশল

দ্য সিটি কলেজ অব নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র

 

এখানে সহপাঠ সমান গুরুত্ব পায়

আমি থাকি সমদ্রের গা-ঘেঁষা আর পাহাড়ের চূড়ায় জাপানের বেপ্পু শহরে।

এখানে ব্যবসায় শিক্ষার ওপর পড়ালেখা করছি। আমার মনে হয় এত প্রাণবন্ত ক্যাম্পাস পৃথিবীতে খুব কমই আছে। পড়াশোনার পাশাপাশি এখানে সহপাঠ সমান গুরুত্ব পায়। যে ছেলেটার মিউজিক ভালো লাগে, সে ক্লাস শেষে চলে যায় মিউজিক প্র্যাকটিসে। কেউ চলে যায় জুডো-কারাতে চর্চায়, কেউ চলে যায় বেসবল গ্রাউন্ডে, কেউ ফুটবল।



এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জাপানের বিভিন্ন প্রান্তের জুনিয়র হাইস্কুল, এলিমেন্টারি স্কুল ও অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিজেদের ভাবনা বিনিময়ের সুযোগ পায়। যেখানে থাকে নিজ দেশের গান, নাচ ও জাতিগত পরিচয়ের স্মারক।

আমাদের ক্যাম্পাসে দেশের বেশ কিছু বড় ভাই, ছোট ভাই আর সহপাঠী আছে, বেশ জোরালো বন্ধন আমাদের সবার মধ্যে। প্রায় প্রতিদিনই খাবার টেবিলে বসা হয় সবার সঙ্গে। তাদের সঙ্গে সুখ-দুঃখের আলাপ করতে করতে কখন রাত পার হয়ে সূর্যের আলো এসে মুখে পড়ে, টেরই পাই না অনেক সময়।

হাসিবুল হক

স্ট্র্যাটেজিক ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড অর্গানাইজেশন

রিটসুমেইকান এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটি, জাপান

 

ক্লাসগুলো হয়ে ওঠে উপভোগ্য

২০১৩-এর প্রথম ভাগেই কানাডার শুলিক, অটোয়া, কনকর্ডিয়া, ম্যানিটোবা আর গুয়েলফ থেকে ভর্তি হওয়ার সুযোগ এল। শেষ পর্যন্ত বাছাই করলাম ইউনিভার্সিটি অব গুয়েলফকে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতি মূলত এর কৃষি ও প্রাণিবিদ্যাবিষয়ক গবেষণার জন্য। আমার স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামটি কলেজ অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমিকসের তত্ত্বাবধানে মার্কেটিং ও কনজ্যুমার স্টাডিজের ওপর মূলত একটি গবেষণাভিত্তিক কোর্স। মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমাদের এ প্রোগ্রামে বাংলাদেশের রীতি অনুসারে কোনো পরীক্ষা দিতে হয় না।

বাংলাদেশি বন্ধুদের কাছে বিষয়টা নিশ্চয় অবাক করার মতোই মনে হবে। প্রচুর গবেষণামূলক প্রবন্ধ পড়তে হয় আর ক্লাসে সেটা নিয়ে কথা বলতে হয়।

সহপাঠীদের মধ্যে কানাডিয়ান ছাড়াও চীন, মিসর, তাইওয়ান, আইসল্যান্ড আর অস্ট্রিয়া থেকে অনেকে এসেছেন। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আর ভৌগোলিক পরিমণ্ডল থেকে আসার কারণে আমাদের ক্লাসগুলো হয়ে ওঠে খুবই উপভোগ্য। সবাই নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গি ও অভিজ্ঞতা থেকে বিভিন্ন ঘটনার ব্যাখ্যা নিয়ে আসে, যা শুধু চিন্তাকেই প্রসারিত করে না, নতুন আঙ্গিকে ভাবতেও শেখায়।

ক্যাম্পাসে আসার আগে ও পরে আমাকে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করে চলেছে তারা। সুদূর বাংলাদেশে তাই পরিবার-পরিজন রেখে এসে, সপ্তাহে ১০-১২টা দাঁতভাঙা প্রবন্ধ পড়ে আর পেপার লিখেও তাই বলতেই পারি, জীবনটা সুন্দর!

নাহিদ ইব্রাহিম

মার্কেটিং অ্যান্ড কনজ্যুমার স্টাডিজ

ইউনিভার্সিটি অব গুয়েলফ, টরন্টো, কানাডা

 

দেশে ফিরে দেশের জন্য কাজ করতে চাই

গত মাসে শুরু হওয়া এবারের ফল সেশন দিয়েই উঠে গেলাম ডক্টরেট প্রোগ্রামের তৃতীয় বর্ষে। ইউরোপ-অস্ট্রেলিয়া কিংবা যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার ডক্টরেট প্রোগ্রামে কিছু মৌলিক পার্থক্য আছে। ইউরোপ-অস্ট্রেলিয়ার ডক্টরেট প্রোগ্রামের জন্য আগে থেকে অধ্যাপকের সন্ধান করতে হলেও উত্তর আমেরিকার বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে তার প্রয়োজন হয় না। এখানে সাধারণত জিআরইর স্কোর, রেফারেন্স লেটার, কাজের অভিজ্ঞতা, গবেষণাপত্র ইত্যাদি নানা মানদণ্ডের আলোকে একজন শিক্ষার্থীকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়।

এখানে এসে দুই বছর কোর্সওয়ার্ক করেছি।

এ দেশে একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় প্রায়ই। ‘বাইরে পড়াশোনা করতে এসেছ, দেশে আবার ফেরত যাব তো?’ এ ক্ষেত্রে আমার উত্তরটাও হয় এ রকম, ‘বাড়ি থেকে কাজে বের হয়ে কাজ শেষে বাড়ি ফিরে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। ’ আশাবাদী হই, যখন দেখি আমার সমবয়সী অনেকেই আজকাল উচ্চতর পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে অর্জিত জ্ঞান দেশের কাজে লাগাতে চায়। অপেক্ষায় আছি সে দিনটির জন্য, যখন দেশের মাটিতে এসে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসমস্যা সমাধানে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারব।

তৌফিক জোয়ার্দার

জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র

 

মনে পড়ে দেশের মাটির গন্ধ

বাংলাদেশের মানুষ, মাটির গন্ধ—সবকিছু খুব বেশি মনে পড়ে এখানে। আমা।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।