আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এনড্রয়েড এর এই দিনে আমি একজন ইংরেজি কথক

কম ইংরেজি যানা সেই লোকের কৌতুক আমরা সবাই জানি। যে পুলিশের প্রশ্নের জবাবে yes, no, thank you বলে জেলে গিয়েছিল। কৌতুকেই এমন হয় নাকি বাস্তবেও...
আজ ইংরেজি জানাটা আবশ্যক। বিশেষ করে প্রযুক্তির এই উন্নতির দিনে তা না হলে আপনি যতই দেশ প্রেম আর মাতৃভাষা প্রেমের কথা বলেন না কেন এতে আপনার কোন লাভ হবে না। কেননা যখন দেখবেন কাল ডিম থেকে ফুটা বাচ্চাও ইংরেজিতে কথা বলছ।


তো শুরু করা যাক ..................
ইংরেজি বিষয়টা বাঙ্গালীর এক বড় শত্রু। সেই ছোট বেলা থেকেই বাবা মা ফুফু খালা মাম চাচা সবাই একই কথা শিখিয়েছে। “বাবা ইংরেজি যদি না জান তাহলে তোমার জীবন বেকার। ” কি বলে! তাহলে এই বেকার জীবনে আকার দিব কিভাবে!
শুরু হল ইংরেজি শিক্ষার আসর। A তে Apple, B তে Ball... এরপর বাসায় রাখা হল অংক আর ইংরেজি গুরু।

স্কুলে বরাবরই ভাল করে আসছিলাম। ছাত্র হিসাবে স্কুল জীবনে খুব নাম ডাক হয়ে গেল। এরপর স্কুলের শিক্ষক বললেন না এভাবে ইংরেজিতে ভাল করা যাবে না। আরও দক্ষ হতে হবে।
তা স্যার সেটা কিভাবে?
উত্তরটা মনে হয় আপনার জানা যদি উপরের ঘটনা গুলি আমার সাথে মিল খায়।


তো স্যারের কাছে পড়া শুরু করলাম। স্যারের কথা মত ইংরেজি গ্রামারের বই কিনে নিয়ে আসলাম। শুরু হল গ্রামাটিকাল যাত্রা। Sentence, Tense, Article, Phrase, Voice..... । দেখতে দেখতে বড় হয়ে গেলাম।

এস এস সি পরিক্ষাও দিয়ে ফেললাম। ইংরেজিতে প্লাস পেলাম। খুব ভাল লাগল। এত দিনের পরিশ্রম আমার সার্থক।
এবার মাঠ ঘাট পেরিয়ে কলেজে উঠতেই নিজেকে অনেক বড় বড় মনে হল।

ফিজিক্স, কেমেস্ট্রি, বায়োলজী, ম্যাথ এর সাথে সাথে ইংরেজিতেও প্রাইভেট পড়া শুরু করলাম। হা মনে মনে বড় হলেও দেখলাম আমার ইংরেজি শিক্ষক মহাদয় আবার আমাদের ইংরেজি গ্রামার ঝালাই করতে বলছেন। যাই হোক স্যারের কথা তো অমান্য করা যায় না।
হা এভাবেই মেয়ে দেখতে দেখতে আর কলেজের অলি গলি ঘুরতে ঘুরতেই ফাইনাল এক্সাম চলে আসল। পরীক্ষা দিলাম রেজাল্ট পেলাম।

গ্রেট!! ইংরেজীতে আবারও প্লাস পেলাম।
কি এবার বিশ্বাস হল তো আমি ইংরেজীতে কত ভাল।
আমার সৌভাগ্য আমি কোথাও পরীক্ষা দিলাম না। তাই ভর্তি পরীক্ষার ঝামেলা থেকে বেচে গেলাম। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হলাম।

ভালই লাগল চারিপাশের গরম গরম আবহাওয়া।
বাধ সাধল ক্লাসের ম্যাম আর স্যার গুলি। আমার মনে হল ইংরেজিতে নতুন ইংরেজি শব্দের উৎপত্তি ঘটেছে। তাই ডিকশনারি খোজা শুরু করলাম। খুজতে খুজতে আমার পরীক্ষা চলে এল।

আরও খারাপ অবস্থা হল... যখন বাধা বাধা ইংরেজিতে প্রেজেন্টেশন দিতে গেলাম। পিছনে সবাই মুখ বন্ধ করে হাসছে আর আমি বেকুবের মত বলে যাচ্ছি। কি আর করা আস্তে আস্তে না হয় লেখা যায়...চিন্তা করে করে... কিন্তু বলতে যেয়ে বড়ই বিপদে পড়ে গেলাম। কিছু কিছু স্যার বাংলায়( উত্তর দিলে বা প্রশ্ন করলেও কিছু বলতেন না। কিছু ঘাউড়া প্রকৃতির স্যার ছিল ইংরেজিতে উত্তর না দিলে যাচ্ছেতাই করে কথা শুনাতেন।


ভাবতাম আমার ইংরেজির প্লাস এর কি হবে। স্যার যদি জানতে পারে আমার ইংরেজিতে দু দুটো প্লাস তাইলে মান ইজ্জত সব শেষ। আমার স্কুল আর কলেজ মিলে ১২ বছরের বাধ ভাঙ্গা পরিশ্রম।
আজ আমার ইংরেজি বলতে অতটা বাধে না। বুঝতেও পারি বেশ।

এর কারণ অবশ্য আমার সেই গ্রামাটিকাল যাত্রা ছিলনা তা আপনারা বুঝে গেছেন মনেহয়।
যে কাজটা হয়েছে আমি যখন থেকে lynda.com এর ওয়েব ডিজাইন ও গ্রাফিক্স ডিজাইন এর ভিডিও দেখা শুরু করেছি তিখন থেকে আমার ইংরেজিতে উন্নতি শুরু হয়েছে। এরপরে আস্তে আস্তে ইংলিশ মুভি গুল আমার কাছে ভাল লাগা শুরু করল। যদিও আমি হিন্দি বিশেষ করে শাহরুখের ভক্ত। যাই হোক ইংলিশ মুভিগুল আমি সাবটাইটেল দিয়ে দেখা শুরু করলাম।

যেখানেই আটকে যেতাম পিসিতে ডিকশনারী ইন্সটল দেয়া ছিল দেখে নিতাম। এবং একই মুভি আমি বারবার দেখতাম। এভাবেই ঠিক যেভাবে হিন্দি মুভিগুলি বেশি দেখলে মুখ দিয়ে হিন্দি বাহির হওয়া শুরু হয় তেমনি আমার অবচেতন মন থেকে আমি ইংরেজিতে একটু একটু করে ভাব প্রকাশ করতে শুরু করলাম। একটা জিনিস বুঝলাম কোন ভাষা শিখার জন্য শোনাটা খুব জরুরী। হিন্দি যেমন আমরা শিখিনি শুনতে শুনতে বুঝি এবং বলতেও পারি।

এবং বর্তমানে তামিল ছবির জনপ্রিয়তে তুঙ্গে। তামিল ছবি দেখতে দেখতে আমি কিছু তামিল শব্দ শিখেও ফেলেছি। যেমন নেনু পো মানে আমি যাই। বা এ পুরি রাজ্য নাদে মানে এ পুরা রাজ্য আমার। তো আমি তামিল শেখার কখনও চেষ্টাও করিনি।

কিন্তু শুনতে শুনতে অনেক কিছুই বুঝে গেছি।
আমার গল্পটা হাস্যকর কিনা আমি জানিনা কিন্তু এটাই আমার বাস্তবতা। তাই ভাষা শিখতে হলে দেখুন ও শুনুন। আর যা শুনবেন তাই বলতে থাকুন। বলার জন্য কাউকে না পেলে নিজে নিজেই গল্প করুন।

ঠিক পাগলের মত।
সাথে মোবাইলে ডিকশনারী ইন্সটল করে নেন। আজ তো সবার হাতে এনড্রয়েড সেট। one mobile ঢুকে বাংলা ডিকশনারী নামিয়ে নেন। পিসিতে সিলিকন ডিকশনারি ... সাথে word web রাখুন।

এন্ড্রয়েডের জন্য bangla english dictionary প্রায় ৯ মেগাবাইট হবে নামিয়ে নিন। এটা খুবই চমৎকার।
আমি কোন কিছুর লিঙ্ক দিলাম না কারন টিটিতে ভুরিভুরি টিউন পাবেন। যার যেটা পছন্দ হয় নামিয়ে নিন।


সোর্স: http://www.techtunes.com.bd/     দেখা হয়েছে ২৬ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.