আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তেতুল হুজুরদের তেতুল দর্শন


১) এদেশের দেওবন্দীগ্রুপ কথিত হেফজতে ইসলাম এর ১৩ দফার ৪র্থ দফা হচ্ছে: বেহায়া-বেপর্দা বন্ধ করতে হবে, এবং প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা বন্ধ করতে হবে। কিন্তু হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতারা এই অনুষ্ঠানে কি করছেন: এখানে তারা নিজেরাই কি নিজেদের নীতি ভাঙছেন না। ২) আসুন এবার দেখি দেওবন্দী হেফাজত নেতা বিখ্যাত (!) তেতুল তত্ত্বের প্রবক্তা শফি হুজুরের অবস্থা কি। এই তেতুল হুজুর নারীদেরকে তেতুল বলে আখ্যায়িত করে বলেছে, পুরুষ কোন নারীকে দেখলে তার লালা ঝরতে বাধ্য এমন বক্তব্য দিয়েছে। খবর: তাহলে তেতুলের পাশে বসে ঐ দেড় ঘণ্টায় শফি হুজুরের কত কেজি লালা ঝড়েছিল?? হিসেবটা একটু কষতে হবে।

৩) এবার আসুন বাংলাদেশে আরেক দেওবন্দী তথা কওমী-খারেজী নেতা শায়খুল হাদীসের অবস্থা কি। শাইখুল হাদীছ আজিজুল হক ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বরে ‘আল কোরআনের দৃষ্টিতে মহিলাদের পর্দা’ শীর্ষক একটি বই লিখেছিল। সেই বইতে লেখা হয়: “.... রং বেরংয়ের পোশাক, লিপিস্টিক লাগানো, পুরুষের সাথে অবৈধ মেলামেশা, থিয়েটার নাটক করা, সভা সমিতি করা, রাজনৈতিক আসরে নামা, প্রকাশ্যে সভা সমিতিতে বক্তৃতা দেয়া আর বেশ্যাবৃত্তি করা। শুধু পেশাদারী বেশ্যা নয় অপেশাদার বেশ্যাবৃত্তি করা। .....” (আল কোরআনের দৃষ্টিতে মহিলাদের পর্দা ১৩৪ পৃষ্ঠা, লেখকঃ শাইখুল হাদীছ আজিজুল হক) “..... ধন ও ঋণ (পজেটিভ ও নেগেটিভ) ব্যতীত কোন বস্তুর কল্পনা করা যায়না, ধন ঋণ যেমন বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, পদার্থের পরমাণু (এটম) পজিটিভ ইলেকট্রন ও নেগেটিভ প্রোটনের সমষ্টি।

এ থেকে ইলেকট্রন বিচ্যুত করলে আর পরমাণুর অস্তিত্বই থাকে না। মানবও তাই। স্বাভাবিকভাবে নর ও নারী (ধন ও ঋণ) পরস্পর দর্শনে যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি হয়না একথা মানুষ অস্বীকার করলেও যুক্তিবাদী বিজ্ঞান তা মানতে প্রস্তুত নয়। দৈহিক মিলনের ফাঁক থাকুক আর না থাকুন, আর থাকলে তো কথাই নেই, আকর্ষণ এতো প্রবল ও তীব্র হয় যে, সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, মুনি মোহন্ত, দরবেশ, কেউ আত্মসংবরণ করতে পারে না। ....” (আল কোরআনের দৃষ্টিতে মহিলাদের পর্দা ১৩৪ পৃষ্ঠা, লেখকঃ শাইখুল হাদীছ আজিজুল হক) কিন্তু এবার দেখুন সেই শায়খুল হাদীস নিজে কি করছে???? নিজের বইয়ে নারী নের্তৃতের বিরুদ্ধে বললেও, নারীদের সভাকে পতিতাদের সভা বললেও, নারী-পুরুষের দেখা সাক্ষাৎকে হারাম বললেও, এ অনুষ্ঠানে গিয়ে সে নিজেকে কি প্রমাণ করলো?? নিজের ফতওয়াতেই নিজে ধরা!! ৪) এবার আসি কওমী-দেওবন্দীদের আরেক তালেবানী (“আমার হব তালেবান, বাংলা হবে আফগান” শ্লোগানের প্রবক্তা) নেতা আমিনীর হুজুরের ক্ষেত্রে ১৯৯৮ সালে সাপ্তাহিক ২০০০ এর সাথে মুফতি ফজলুল হক আমিনীর সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ আগে দিলাম: ২০০০: সরকার পতনের আন্দোলন কী আপনারা এককভাকে করবেন, না বিএনপি জামাতকেও সঙ্গে নেবেন? ফজলুল হক: আমরা সরকার পতনের ডাক দিলে বিএনপি জামাত সবাই আমাদের সাথে যোগ দেবে।

আমরা একত্রিত হয়েই আন্দোলন করব। ২০০০: নারী নেতৃত্বের বিষয়টি আপনারা কিভাবে দেখেন? ফজলুল হক: ......এটা নিয়ে এখন কথা বলতে চাই না। এ বিষয়ে এখন কথা না বলাই ভাল। ২০০০: ইসলামে নারী নেতৃত্বের বিষয়....... ফজলুল হক: ইসলামে নারী নেতৃত্ব নাজায়েজ। হারাম।

নারী নেতৃত্ব থাকলে দেশের উন্নতি হবে না। আমরা নারী নেতৃত্ব সমর্থন করি না। ২০০০: বিএনপির নেতৃত্বে রয়েছেন একজন মহিলা। তাহলে বিএনপির সঙ্গে একত্রিত হয়ে আন্দোলন করছেন কেন? ফজলুল হক: এগুলো নিয়ে কোন কথা বলতে চাই না। ইসলামে আছে নিজের স্বার্থে কখনো কখনো তাদের সঙ্গে থেকে আন্দোলন করা যায়।

সরকারের বিরুদ্ধে এখন আন্দোলনই আমাদের মূল লক্ষ্য। তবে আমরা এটা সমর্থন করি না। কি বুজলেন?? নারী নের্তৃত্ব হারাম, কিন্তু নিজের স্বার্থে তা হালাল (!!) করা যায়। তাই তো এই নারীর নেতৃর্ত্বে নির্বাচন করে এমপিও হয়েছিল এই তেতুলখোর। “পরে না চোখের পলক.................” এবার দেখি প্রথম আলোতে তারিখ: ২৬-০৮-২০১০ প্রকাশিত খবরে কি বলা হলো: ইফতারের আগে আমিনীর দোয়া ‘খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় যাওয়ার তৌফিক দান করো’ [‘হে আল্লাহ, খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় যাওয়ার তৌফিক দান করো।

’ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ফজুলল হক আমিনী ইফতারের আগে এই দোয়া করলেন। গতকাল বুধবার রাজধানীর পূর্বাণী হোটেলে রাজনীতিবিদদের সম্মানে এ ইফতারের আয়োজন করে ইসলামী ঐক্যজোট। ইফতারে কোনো বক্তব্য দেননি মুফতি আমিনী। তবে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যাওয়ার পর মোনাজাত করেন তিনি। মোনাজাতে মুফতি আমিনী বলেন, ‘হে আল্লাহ, খালেদা জিয়াকে দেশকে খেদমত করার ক্ষমতা দান করো।

সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ধর্ম ও ইসলামের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র চলছে, তা থেকে দেশকে হেফাজত করো। ’ মোনাজাতে বলা হয়, ‘হে আল্লাহ, তুমি চারদলীয় জোটকে শক্তিশালী করো। খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় যাওয়ার তৌফিক দান করো। খালেদা জিয়া ওমরাহ করতে যাচ্ছেন, তাঁর ওমরাহ কবুল করো’] কি বুঝলেন: নেত্রীর মুহব্বতে হারাম-হালাল একাকার হয়ে গেছে................ আচ্ছা এগুলোতো গেলো এদেশীয় দেওবন্দীদের অবস্থা, কিন্তু এদেশীয় দেওবন্দীরা যাদের পীর মানে, অন্ধ অনুসরণ করে, একই সিলাবাসে চলে সেই ভারতীয় দেওবন্দীদের অনুষ্ঠানে কি অবস্থা হয় আসুন দেখা যাক: ইন্দিরা গান্ধীর সাথে দেওবন্দীরা সোনিয়া গান্ধীর সাথে দেওবন্দী গুরু আসাদ মদনী সোনিয়া গান্ধীর পেছনে ভৃত্যের ন্যায় বর্তমানে দেওবন্দী গুরু আরশাদ মাদনী সোনিয়া গান্ধীর সাথে দেওবন্দ গুরু হুসাইন মদনীর নাতি মেহমুদ মদনী দেখুন ভারতে দেওবন্দের অনুষ্ঠানগুলোতে হিন্দু তেতুলদের কত ছড়াছড়ি: পবিত্র কুরআন পাকে মহান আল্লাহ তায়ালা সূরা নূর, সূরা নিসা, সূরা আহযাবের দ্বারা ‘পর্দা’কে ফজর করেছেন। এই সূরা সমূহে শুধু মহিলাদের পর্দাকে ফরজ করা হয়নি, পুরুষদের পর্দাকেও ফরজ করা হয়েছে।

একজন বেগানা পুরুষ কর্তৃক একজন বেগানা মহিলাকে দেখা যেমন হারাম, তেমনি একজন বেগানা মহিলা কর্তৃক একজন বেগানা পুরুষকে দেখা হারাম করা হয়েছে। হাদীস শরীফে আছে, ‘অনিচ্ছাকৃত প্রথম দৃষ্টি ক্ষমা করা হবে, কিন্তু তার কবিরা গুনাহ লেখা হবে’। অথচ দেওবন্দী তথা কওমী-খারেজীরা অপরকে পর্দার কথা বললেও নিজেরা পর্দা করে না। অথচ মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন: র্অথঃ হে মুমনিগণ! তোমরা নিজে যা করোনা তা অপরকে বলো কনে? তোমরা যা করো না তা তোমাদরে জন্য বলা আল্লাহর নিকট অতিশয় অসন্তোষজনক” (সূরা আস্ সাফ, আয়াত ২-৩)। মূলত এই তেতুল হুজুররা রাজনীতিতে এসে সামান্য ক্ষমতা আর অর্থের মোহে হারাম হালাল আর হালালকে হারাম করে ফেলেছে।

প্রকৃতপক্ষে এরাই হচ্ছে ধর্মব্যবসায়ী। যাদের সম্পর্কে পবিত্র হাদীস শরীফে বলা হয়েছে: “আমার উম্মতের মধ্যে ধর্মব্যবসায়ীদের জন্য জাহান্নাম; যারা ইলমকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করে তাদের জামানার আমীর-উমরা বা রাজা-বাদশাহদের কাছে অর্থ ও পদ লাভের জন্য তা বিক্রি করে থাকে। ” (নাউজুবিল্লাহ) সূত্র: Click This Link
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।