সাহাদাত উদরাজী www.udrajirannaghor.wordpress.com
সব ধরনের মানুষের সাথে চলা ফেরা করতে আমি পছন্দ করি। ধনী দরিদ্র বলে কথা নেই। যে কোন মানুষ বিপদে পড়লে তাকে সাহায্য করার জন্য আমার মন সব সময়েই লেগে থাকে। এই জীবনে আমার বন্ধু বা পরিচিত এমন কেহ আমাকে বলতে পারবে না যে, বিপদ দেখে আমি তাকে ফেলে এসেছি। আমি আমার সামর্থ্যের মধ্যে আছে এমন কোন সাহায্য চাইলেই আমি তা করে ফেলি।
বিবাহ পূর্ব মায়ের কথা শুনেছি, কত গভীর রাতে বাসায় ফিরে স্ত্রীর কথা শুনেছি তবুও আমার এই খাসিয়ত গেল না! নিজের পকেটের টাকা শেষ করে শুন্য হয়ে বাসার প্রয়োজনীয় জিনিষ না নিয়ে চুপ থেকেছি তার সব কিছু ঘুছিয়ে লিখলে বিরাট কিছু হয়ে যাবে। আজ সে দিকে যাব না! গতকাল রাতে থেকে যে সিদান্ত নিয়েছি, তাই আপনাদের বলব, পুলিশের কাছে কেন মেয়ে বিবাহ দিব না!
ঘটনা সংক্ষেপে বলি, গতকাল ভোরে আমাদের কাছে কুষ্টিয়া থেকে আসা দুই যুবককের (তারা বিদেশগ্রামী, ভিসা এসেছে, আমরা শুধু টিকেট কেটে প্লেনে তুলে দেব) একজনকে পুলিশ ধরে থানায় নিয়ে গেল। স্বাভাবিক ভাবে এদের ঢাকা শহরে কেহ নেই এবং আমিই তাদের অভিবাবক, আমার কাছেই ফোন এল। সাত সকালে অফিস খুলে না বলে আমিই ওদের অফিসের কাছে/হোটেলের কাছে থাকতে বলেছিলাম। গ্রামীন এই দুই যুবকের একজন তার মোবাইলে ফ্লাক্সি লোড করতে গিয়ে রাস্তা পার হতে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে।
তার কাছে থাকা, পাসপোর্ট এবং টাকা দেখেও পুলিশকে বুঝাতে পারলো না যে, সে ককটেল বাহিনী নয়! তাকে থানায় নিয়েই গেল। ব্যস, তার পর থেকে আমার ভুগান্তি শুরু। থানার ওসি, ডিসি, আয়া, বুয়া সব কিছুই সারা দিন ধরে দেখে ফেললাম! দ্বারে দ্বারে ঘুরে সব কিছু শেষ করেও কাউকে আমিও কিছু বুঝাতে পারলাম না! শেষে মহামান্য ওসি সাহেব জানালার দিকে তাকিয়ে জুতা খুলতে খুলতে জানালেন, সন্ধ্যায় তিনি এর ফয়সালা করবেন।
অফিসে ফিরে এসে ফেবুতে মনের দুঃখে একটা স্ট্যাটাস দেই! তাতে আমাদের এক বড়ভাই লাইক দেন! বড়ভাইয়ের লাইক পেয়ে ফোন করি। তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তি হয়েও এই বিষয়ে আমাকে সাহায্য করতে অপারগতা জানান।
তবে কে আমার এই কাজটা করে দিতে পারবে তার নাম আমাকে বলে দেন। বলেন, সে এই বিষয়ে ওস্তাদ মানুষ, সেই এই কাজে হেল্প করতে পারবে। তার সব লাইন ঘাট পরিচিত। বলা বাহুল্য, আমিও ওনাকে চিনি!
আমি সন্ধ্যায় থানাতে গিয়েও দেখলাম, একই দশা। (তাদের মুখ ফিরিয়ে রাখার ছবি এখনো আমার চোখে ভাসছে!) কিছুতে কিছু করতে পারলাম না।
বুঝে গেলাম, এভাবে আর কিছু সময় পার হয়ে গেলে ছেলেটাকে নিশ্চিত কোন না কোন মামলায় জড়িয়ে কোর্টে/জেলে পাঠিয়ে দেবেই। আর দেরী না করে সেই বড় ভাইকে ফোন করলাম, তিনি মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে ফিরছিলেন। এ যেন ব্যাটে বল! তিনি আমাকে চিন্তে পেরে খুব কম সময়ে থানায় চলে এলেন এবং সব কিছু তার পরিচিত থাকায় খুব সহজে একটা দরদামে (!) দফারফা হয়ে গেল! মিনিট পাঁচেকের মধ্য আমি সেই যুবককে আমার হাতে পেলাম। (সেই বড় ভাই তার রিক্সা ভাড়াও নিলেন না! তিনি নিজেও এই গ্রামীন যুবককে দেখে খুব দুঃখ প্রকাশ করলেন। এমন মানুষের জন্য দোয়া করতেই হয়।
)
ঘটনাটা সারা রাত আমার মনে কষ্ট দিয়েছে। পুলিশ বিষয়ক কিছু করুন কিছু ঘটনা আমার নিজের জীবনেও আছে তবে গতকালের এই ঘটনা আমাকে আরো ব্যথিত করেছে আরো বেশি। পুলিশকে বলা হয় জনগণের বন্ধু! অদতে কি তাই! না, না, না! আমি খুব তাজব হয়ে লক্ষ করলাম, পুলিশতো সাধারন মানুষের কথাই শুনে না, তাদের হেল্প করবে কি!
সারা দিন থানায় থেকে এবং আবারো এদের চালচরিত্র কাছ থেকে দেখে সিদান্ত নিলাম, কখনো পুলিশের কাছে মেয়ে বিবাহ দিবো না!
(নোটঃ সব ঘটনা খুলে লিখতে পারলাম না বলে দুঃখিত)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।