আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আলোক উৎসবেও অন্ধকার কাটছে না

সরকারের নীতি নির্ধারকদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহারে ২০১৩ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন সাত হাজারে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
সরকারের পৌনে পাঁচ বছরের মধ্যে তা ১০ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছেছে বলে দাবি করছেন তারা।
এসময়ে বিদ্যুতের উৎপাদন তার আগের ৫০ বছরের সমান বলেও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।  
প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, “নির্বাচনী ইশতেহারে ২০১৩ সালের মধ্যে সাত হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়ার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলে বলেছিল, এটা কীভাবে সম্ভব? অনেকেই বলেছেন এটা সম্ভব নয়।
“কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১০ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখিয়ে দিয়েছেন, এটা সম্ভব।

যারা সম্ভব নয় বলেছেন, তাদের মুখে চুনকালি পড়েছে। ”
উপদেষ্টা বলেন, গত সাড়ে চার বছরে দেশের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে ১০৬ শতাংশ। এর ফলে দেশের রপ্তানি ও কৃষিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে।
“বিআইডিএস এক গবেষণায় দেখিয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে দেশে এক লক্ষ কোটি টাকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়েছে।
“লিগ্যাটাম প্রসপারিটি ইনডেক্সে (Legatum Prosperity Index) আমরা ভারতকে টপকিয়ে উপরে উঠে এসেছি।

পাকিস্তান আমাদের ২৯ ধাপ নীচে। কিসিঞ্জার যে বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলেছিল, আজ সেই বাংলাদেশ উন্নয়নের তারকা। ”
১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার মাইলফলকে পৌঁছানোয় মঙ্গলবার ‘আলোক উৎসবের’ ঘোষণা করা হয়েছে।
সন্ধ্যায় রাজধানীর হাতিরঝিলে আতশবাজি ফোটানো হবে।
বিদ্যুৎ উৎসব ও বিদ্যুৎ খাতের অগ্রগতি জানাতেই তথ্য অধিদফতরে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।


বিদ্যুতে অগ্রগতি
বিদ্যুৎ বিভাগের হিসাবে, ২০১৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত দেশে স্থাপিত ৮৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনক্ষমতা দাঁড়িয়েছে ৯৭১৩ মেগাওয়াট।
এর সঙ্গে ভারত থেকে আমদানি করা ৫০০ মেগাওয়াট যুক্ত করলে দাঁড়ায় ১০,২১৩ মেগাওয়াট।
বর্তমান সরকারের সময় ৫৭টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন শুরু করেছে, যেগুলির ক্ষমতা ৪৭৭১ মেগাওয়াট। ৬৪৭১ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার আরো ৩৩টি কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে।
এছাড়া ৪০৪৯ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২০টি কেন্দ্র স্থাপনের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।


আগামী মাসের মধ্যেই আরো ৭৬৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে বলে বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, “বিএনপি-জামায়াতের সময় শুধুমাত্র ৮০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি কেন্দ্র হয়েছিল। ওই কেন্দ্র নিয়েও অনেক অভিযোগ রয়েছে। ”
এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, “আগে উৎপাদন ও লোডশেডের হার ছিল ২৫ শতাংশ। সেটা বর্তমানে কমিয়ে পাঁচ থেকে সাত শতাংশে নিয়ে আসা হয়েছে।


বিদ্যুৎহীন ৩৮ শতাংশ মানুষ   
বর্তমান সরকারের সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ১০৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও দেশে বিদ্যুতের সুবিধাপ্রাপ্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে মাত্র ১৫ শতাংশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তৌফিক-ই-ইলাহী বলেন, “স্টেপ বাই স্টেপ আমাদের যেতে হবে। আমরা প্রথমে উৎপাদনে জোর দিয়েছি। এখন আমরা লাইন সম্প্রসারণ ও সংযোগের ধাপে যাব। পরের বছর থেকে এটি আরো বেশি দৃশ্যমান হবে।


ভর্তুকি ও দাম বেশি
বিদ্যুৎ বিভাগের হিসাবে, দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার মধ্যে সরকারি খাতে ৫৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ (৫৯৬২ মেগাওয়াট), বেসরকারি খাতে ৩৬ দশমিক ৭২ শতাংশ (৩৭৫১ মেগাওয়াট) এবং আমদানি খাতে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ (৫০০ মেগাওয়াট)।
বর্তমান সরকারের সময় বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ স্থাপনের প্রক্রিয়া সহজ করে দেওয়া হয়।
বেসরকারি খাতে স্থাপিত বেশিরভাগ কেন্দ্রই স্বল্পমেয়াদি ভাড়াভিত্তিক হওয়ায় এসব বিদ্যুতের দামও পড়ছে কয়েকগুণ বেশি। সরকার ভর্তুকি দিয়ে এসব বিদ্যুৎ মানুষকে দিচ্ছে।
বর্তমান সরকারের সময় বিদ্যুৎ খাতে মোট কত টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে তা জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলেন, “দেখতে হবে বাজেট ঘাটতি পাঁচ শতাংশের মধ্যে আছে কী না।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।