প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর সামনে রেখে বরগুনার আমতলী-তালতলী-সোনাকাটা সড়কটি ট্রাক্টর দিয়ে চষে তড়িঘড়ি করে চলাচলের উপযোগী করা হচ্ছে। এতে অল্প সময়েই সড়কটি আবার চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন। ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী বরগুনায় আসছেন।
এলজিইডি বরগুনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় ২০১১ সালের ২৭ ডিসেম্বর আমতলী থেকে তালতলী হয়ে পর্যটনকেন্দ্র সোনাকাটা পর্যন্ত ৪৯ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৩০ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে সম্প্রসারণ ও সংস্কার কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রায় ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এই তিনটি গুচ্ছে ১০ কিলোমিটাির করে ৩০ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নের কাজ পান যথাক্রমে আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হক মৃধা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মতিয়ার রহমান।
কাজ পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারেরা সম্প্রসারণের জন্য কয়েক কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে বেড কেটে প্রায় আড়াই কোটি টাকার বিল তুলে নেন। এতে সড়কটি আরও বেহাল হয়ে পড়ে। ফলে গত বর্ষা মৌসুমে ঢাকা-তালতলী ও অভ্যন্তরীণ রুটে বাস ও অন্যান্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কচুপাত্রা সেতুর দক্ষিণ পাশ থেকে খাজুরা কালভার্ট পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার ও লাউপাড়া বাজার থেকে ফকিরহাট পর্যন্ত সাত কিলোমিটার রাস্তা একেবারেই চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। তবে প্রধানমন্ত্রীর আসার খবরে ৯ নভেম্বর থেকে সড়ক চলাচল উপযোগী করার কাজ শুরু করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রাক্কলন অনুযায়ী, সড়কটির দুই পাশে ছয় ফুট সম্প্রসারণ করে সড়ক পুনর্নির্মাণের কথা। দুই পাশে ২২ ইঞ্চি বেড কেটে তিনটি স্তরে পর্যায়ক্রমে বালু, বালু ও খোয়ার মিশ্রণ এবং আবারও খোয়া ফেলে ১৬ ইঞ্চি ভরাট করে দৃঢ়করণ (কমপ্যাক্ট) করে ভিত্তি (বেজ) নির্মাণের কথা। এরপর পুরো রাস্তায় ছয় ইঞ্চি খোয়া (ম্যাকাডাম) ও বালু দিয়ে চূড়ান্ত দৃঢ়করণ করার কথা। কিন্তু চলাচলের উপযোগী করার নামে বর্তমানে যেনতেনভাবে কাজ করা হচ্ছে।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, কচুপাত্রা বাজার থেকে বতীপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার রাস্তা ট্রাক্টর দিয়ে চষে পুরোনো খোয়া, পাথরের সঙ্গে কিছু নতুন খোয়া ও বালুর মিশ্রণ ফেলে রোলার দিয়ে সমান করা হচ্ছে।
শারীকখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, ট্রাক্টর দিয়ে পুরোনো রাস্তা খুঁড়ে রোলার দিয়ে পিষে সমান করা হচ্ছে। তার ওপরে পিচ ঢাললে এই রাস্তা ছয় মাসও টিকবে না। এই অংশের ঠিকাদার মতিয়ার রহমান বলেন, ‘পাঁচ কিলোমিটার রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। বাকি পাঁচ কিলোমিটারের কাজ ১৯ তারিখের আগেই শেষ করা হবে। ’
নিওপাড়া থেকে বতীপাড়া পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রাস্তার কাজের ক্ষেত্রেও একই দৃশ্য লক্ষ করা গেছে।
এই অংশের ঠিকাদার আক্তারুজ্জামান খান বলেন, ‘আপাতত খোয়া ও বালু দিয়ে রোলার মেরে রাস্তা চলাচলের উপযোগী করা হচ্ছে। ’
এলজিইডি বরগুনা কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দিনরাত চেষ্টা করে সড়কটি চলাচলের উপযোগী পর্যায়ে আনতে পেরেছি। ’ কাজের মানের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মানের ব্যাপারে আমরা আপস করিনি, সামনেও করব না। প্রধানমন্ত্রীর সফর শেষ হওয়ার পর মান অনুযায়ী পরবর্তী কাজ করা হবে। ’
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।