আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তারপরও ব্লগিং করবেন?



এরশাদ সাহেব জীবনে অনেক পীরের মুরিদ হয়েছেন। অনেক হুজুরের দোয়া নিয়েছেন মাথা কাঁত করে। কপ্টার শফির দোয়া নেয়া তাই এরশাদ সাহেবের জন্য কোন নিউজ না। আলেম-ওলামাদের ১৩ দফার প্রতি তার সমর্থনও তার চরিত্রর সঙ্গে খাপে খাপ মিলে যায়। কাজেই এটা হওয়াই খুব স্বাভাবিক ছিল।

এরকম চরিত্রের লোকরাই ১৩ দফার সবচেয়ে বড় সমর্থক হয়। কপ্টার শফি এরশাদের জন্য লম্বা দোয়া করেছেন। ভবিষ্যতে তিনি মদিনা সনদের স্বপ্ন দেখানোঅলাদের জন্যও লম্বা দোয়া করবেন। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। ইসলামও রাজনীতির বাইরে কিছু না।

ইসলামেও তাই শেষ কথা বলে কিছু নেই। কপ্টার শফির দোয়া নিয়ে এরশাদ এবার ধারনা করি পার্লামেন্টে গিয়ে অপজিশনে বসবে। হাসিনা মদিনা সনদ করবে তাহলে কার সঙ্গে? মদিনার ইহুদী-খ্রিস্টানদের সঙ্গে মুসলমানদের নবী মুহাম্মদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। হাসিনাও শফি বাবুনাগনরীদের সঙ্গে চুক্তি করবে ১৩ দফা অনুসরণ করার জন্য। এরকম মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে।

এরশাদের শফির দোয়া নিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা আর হেফাজতের হঠাৎ ইস্তেকাফের অংক মিলে না যে। বাকী থাকে বিএনপি জামাত। বিএনপি আপাতত সেফহোমে। ছেলের রায়ে খুশি হয়ে নির্বাচনে যেতেও পারে খালেদা। সেক্ষেত্রে গেইম প্লান কিছুটা চেঞ্জ হতে পারে।

বিএনপি প্রধান বিরোধীদল, এরশাদ আবার মহাজোটে। বোতলের লেবেল শুধু পাল্টে যাবে ভেতরের মাল একই থাকবে। আর জামাত সম্ভবত বুড়ো রাজাকার আল বদরগুলোর মায়া কাটাতে এখন প্রস্তুত। আপাতত নিষিদ্ধ-টিসিদ্ধর হাত থেকে বাঁচতে পারলে তারা আর কিছু চায় না। আমেরিকা এসে সেই অভয় দিয়ে গেছে কিনা শীঘ্রই জানা যাবে।

তবে সবচেয়ে ভাল অবস্থানে থাকবে হেফাজত। দেশ চালাতে হলে ১৩ দফাকে সবার মাথায় রাখতেই হবে। ১৩ দফার সবগুলো বাস্তবায়ন করতে না পরলেও দফাগুলো কিছু কিছু বাস্তবায়ন করে মোল্লাদের খুশি রাখতে হবে। বাংলাদেশে মোল্লারা এক ফ্যাক্ট। অদূর ভবিষ্যতে মোল্লারা রাষ্ট্র ও প্রসাশনে, সেনাবাহিনীতে সর্বচ্চ প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হবে।

তখন “সর্বচ্চ শরীয়া পরিষদ” টাইপের কিছু খাড়া করতে পারলে তারপর বাংলাদেশের গায়ের উপর বড় করে সেঁটে দেন “গণপ্রজাতন্ত্র” “ধর্মনিরপেক্ষতা” “সমাজতন্ত্র”- মোল্লাদের তাতে কিচ্ছু যায় আসে না। আওয়ামী লীগ এখন সবচাইতে ধর্মপ্রাণ দল। ইসলামের খেদমতে তারা যে অতীতে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে সেই ফিরিস্তি এখন দিতে শুরু করেছে। সবচেয়ে বেশি মসজিদ মাদ্রাসা তারা করেছে। আলেম ওলামাদের সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে।

(আফসুস তবু হুজুররা তাদের চিনলো না!) বিএনপির-জামাত-হেফাজতময় বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে “আওয়ামী মুসলিম লীগেই” ফের ফিরতে হবে। পাবলিক ইসলাম চায় তারা কি করবে? পাবলিক যা খাবে তাদের তাই খাওয়াতে হবে। তাহলে কি দাঁড়ালো? “আমরা সবাই ভাই ভাই, নাস্তিক ব্লগারের ফাঁসি চাই!” (শ্লোগানের জন্য ব্লগার রানার কাছে কৃতজ্ঞতা)। শাহবাগ এখন ৭৩ ফিকরায় বিভক্ত। সবাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় তবে নিজেদের মত করে।

আছে পরস্পর ছাগু ট্যাগ মারার আত্মঘাতি খেলা। এন্টি শাহবাগী এই সুযোগে এখন ঝাঁকে ভিড়ে গিয়ে কপ্টার শফির ১৩ দফার একটি (নাস্তিক ব্লগারের ফাঁসি চাই) জোড়েসোড়ে উচ্চারিত করছে। সব কিছু মিলিয়ে কোথাকার জল কোথায় গড়াচ্ছে? “ছাগু” এক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ স্রেফ! আর কিছু না। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। কাজেই ছাগুদের ব্যাপারেও শেষ কথা বলে কিছু নেই।

যারা ছাগুদের “আঁতুরঘর” চিহ্নিত করেছিল সেই “নাস্তিক ব্লগার” এখন রাজনীতির হাওয়া বদলে সবার কমন শত্রু। তারা ছাগু জন্মের “আঁতুরঘর” নিয়ে কাজ করেছে, তারা বার বার বলেছে ছাগু উৎপাদন কারখানায় নজর না দিলে ছাগু উৎপাদন অব্যাহত থাকবেই। এটাই কাল হয়েছে। কারণ ছাগুদের সঙ্গে বিরোধ রাজনৈতিক কিন্তু “ ছাগু আঁতুরঘরে” ঢিল পড়লে তাদেরও অনুভূতিতে আঘাত লাগে। আর এখন এই হাওয়া বদলের দিনে তো সব ভাই ভাই, কাজেই “নাস্তিক ব্লগারের” ফাঁসি চাইতে দ্বিধা নেই।

তাই নির্বাচন পরবর্তী “নাস্তিক ব্লগাররা” ব্লগিং করবেন কি করবেন না আগে থেকে ভেবে রাখুন...। নিজের কথা বলতে পারি, আমি আশাহত হইনি। এসব মাথায় রেখেই লিখেছি। মধুচন্দ্রিমা করতে তো আর ব্লগে আসিনি। কোন দলের হয়ে দালালীও করতে আসিনি।

অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ মানস তৈরিতে যদি একটুখানি অবদান রাখতে পারি তো শত “ট্যাগ” গায়ে জড়াতেও রাজি আছি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।