আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হঠাৎ দাম বাড়ল ওষুধের

প্রায় সব ধরনের ওষুধের দাম আরও এক দফা বেড়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় শিশুদের সর্দি-কাশির সিরাপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক, ডায়াবেটিস ও হূদরোগের চিকিৎসায় প্রয়োজন, এমন ওষুধ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ওষুধের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

গত বছর প্রায় এক হাজার ২০০টি ওষুধের দাম ২০ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ বছরের জানুয়ারিতে আরও এক দফা দাম বাড়ে ওষুধের।

এর পরও নিয়মিত বিরতিতে বিভিন্ন ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘সমন্বয়ের’ নামে দাম বাড়িয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় বিশেষ কিছু ওষুধের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানোর ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, এই দফায় সব প্রতিষ্ঠান দাম না বাড়ালেও বেক্সিমকো, স্কয়ার, ইনসেপটা, এসিআই ও একমি ওষুধের দাম বাড়িয়েছে।
মিটফোর্ডের পাইকারি ওষুধ বিক্রেতারা বলছেন, এক ধাক্কায় প্রায় ২০০টি ওষুধের দাম বেড়েছে। এদিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে আছে বেক্সিমকো।

টোফেন সিরাপের দাম ৪৫ টাকা থেকে হয়েছে ৫০ টাকা। বেড়েছে জ্বরের জন্য প্রয়োজনীয় নাপা এক্সট্রারও দাম। একেকটি বড়িতে বেড়েছে ৬০ পয়সা করে। সর্দি-কাশি, জ্বরের পাশাপাশি বেক্সিমকো স্যালাইনের দামও বাড়িয়েছে। এক হাজার মিলিলিটার কলোরাইড স্যালাইনের দাম এক মাস আগেও ছিল ৬৮ টাকা, এখন সেটির দাম ৯১ টাকা ৭২ পয়সা, ডেক্সোরাইটের দাম ৬২ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০ টাকা ৮৯ পয়সায়।

এর বাইরে ডায়াবেটিস চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ডায়ারিল-১,২,৩—এ তিনটিরই দাম বেড়েছে। এক মাস আগে একেকটি বড়ির দাম ছিল তিন, পাঁচ ও সাত টাকা। এখন সেগুলোর দাম হয়েছে সাড়ে চার, আট ও ১০ টাকা। এ সপ্তাহে স্কয়ারের জ্বরের ওষুধ এইসসহ মোট আটটি ওষুধের দাম বেড়েছে, ইনসেপ্টার বেড়েছে পাঁচটি এবং এসিআইয়ের চারটি ওষুধের দাম বেড়েছে। স্কয়ারের লিবেক (৫০০ মিলিগ্রাম) ক্যাপসুলের প্রতিটির দাম ১২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১৫ টাকা হয়েছে, সিরাপের দাম হয়েছে ৮০ টাকা থেকে ৯০ টাকা, প্রতিটি এইস বড়ির দাম এক টাকা ৯০ পয়সা থেকে বেড়ে আড়াই টাকা হয়েছে।

ইনসেপ্টার কর্টান (১০ মিলিগ্রাম) একেকটি বড়ির দাম দুই টাকা থেকে চার টাকা, ২০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেটের দাম তিন টাকা ৭২ পয়সা থেকে বেড়ে ছয় টাকা ২৬ পয়সা হয়েছে। এসিআইয়ের ব্রডিল সিরাপের দাম ২০০ টাকা থেকে ২৩০ টাকা, অ্যামোটেক্স এর দাম ১০৬ টাকা থেকে ১২৬ টাকা হয়েছে। বেড়েছে এ প্রতিষ্ঠানের আরও বেশ কিছু ওষুধের দাম।
এ বিষয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর কিছু জানে কি না বা প্রতিষ্ঠানটির কোনো দায়িত্ব আছে কি না, জানতে চাইলে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন প্রথম আলো ডটকমকে সংশ্লিষ্ট বিভাগে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। ওই বিভাগের কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘আমাদের আসলে কিছুই করার নেই।

যে ওষুধগুলোর দাম বেড়েছে সেগুলো বাড়ানোর বিষয়ে ওষুধের মূল্য নির্ধারণ কমিটির কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। ’
প্রসঙ্গত, ১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জারি হওয়া এক আদেশে সরকার নিজেই নিজের ক্ষমতা খর্ব করে। এখন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর শুধু ১১৭টি ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখে। দীর্ঘদিন ধরে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলে আসছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক ৩০০টি ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন সংসদে।

সে বিষয়েও এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি নেই বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের উপসচিব মনির হোসেন প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ওষুধের দাম বাড়ানোর আগে জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা উচিত। ওষুধ কিনতে এসে ক্রেতারা যখন হঠাৎ দাম বাড়ার খবর পান তখন তাঁরা নিজেদের প্রতারিত বোধ করেন।
এদিকে নিয়মিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও থাইরয়েডের ওষুধ কিনতে হয় এমন একজন ক্রেতা প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সব সময় নাগালের বাইরে। ওষুধের দাম বাড়ায় তাঁদের অবস্থা হাঁসফাঁস।


এদিকে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশর অব ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মুকতাদির প্রথম আলো ডটকমকে জানান, কোনো ওষুধের দাম বাড়েনি। কিছুটা সমন্বয় করা হয়েছে।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।