আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জীবনের নিরাপত্তা দে, নইলে তোদের বুক চিরে আশ্রয় নিব; নিজের নিরাপত্তা খুঁজব।

মত প্রকাশের স্বাধীনতা কোন সুযোগ নয়, অধিকার। ডিজি,টাল সরকারের গত চার বছরের শাসনামলে(অনেকের মতে দুঃশাসন) নিজ দলীয় সন্ত্রাসী বাহিনী কর্তৃক প্রকাশ্য দিবালোকে নাটোরের বড়াইগ্রামের উপজেলা চেয়ারম্যান সানাহ উল্লাহ নূর বাবুকে পিটিয়ে মারা থেকে শুরু করে ঢাকায় চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে বিশ্বজিতকে হত্যা পর্যন্ত প্রকাশ্য হত্যাকাণ্ড সমূহের চিত্র মনে হলে আতঙ্কিত হয়ে ওঠি প্রতি মুহূর্তেই। অপ্রকাশ্য হত্যাকাণ্ড সমূহের মধ্যে বেডরুমে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিকে হত্যা, সৌদি দূতাবাসের এক কর্মীকে হত্যা, গাজীপুরে পুলিশ কর্তৃক ব্যাবসায়ী মমুনকে সন্ত্রাসীদের হাতে তুলে দিয়ে হত্যা করানোসহ অসংখ্য হত্যার সাথে উত্তরাধিকার(’৭২-৭৫ ) সূত্রে পাওয়া উপসর্গ ‘গুম’নামের এক আতঙ্ক যোগ করা হয়েছে । গত চার বছরে প্রায় দেড় শতাধিক মানুষ 'গুম' হওয়ার খবর পত্রিকায় দেখেছি। এদের মধ্যে কারও কারও গলিত-অর্ধগলিত লাশ পাওয়া গেছে নদী-খাল-ডোবা-নালা-ধানক্ষেত-রাস্তার পাশসহ বিভিন্ন জায়গায়-এমনকি এমপি হোস্টেলে পর্যন্ত অজ্ঞাত তরুণীর অর্ধগলিত লাশ পাওয়া গেছে ।

আবার অনেকের লাশ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। এদের মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র, ঢাকার ওয়ার্ড কমিশনার চৌধুরী আলম, প্রধান বিরোধী দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র নেতা জনাব ইলিয়াস আলী। সর্বশেষ এর সাথে আরও নতুন একটি আতঙ্ক যোগ করেছে শনিবার কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের আদাবাড়িয়া গ্রামের মাঠ থেকে পুলিশের হাতকড়া লাগানো অবস্থায় উদ্ধার করা ঢাকার বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম মজুমদারের লাশ। ডিজিটাল সরকারের উত্তরাধিকার(’৭২-৭৫ ) সূত্রে পাওয়া এই উপসর্গ গুম আতঙ্কে আতঙ্কিত হয়ে ড. কামাল হোসেন পর্যন্ত শঙ্কিত হয়ে বলতে বাধ্য হয়ে বলেছেন- আমিও 'গুম' হয়ে যেতে পারি। ডিজি,টাল সরকারের তিন দশকের মিত্র সাবেক স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদ পর্যন্ত বলেছেন- এই সরকারের আমলে জনগণের নিরাপত্তা এমন যে, ঘরে থাকলে 'খুন' আর বাইরে থাকলে 'গুম'।

বাংলাদেশের বিশিষ্ট নাগরিক ড. কামাল হোসেন'ই যখন গুম হয়ে যাওয়ার আশংকায় দিন কাটাচ্ছেন, সেখানে আমার মতো সাধারণ মানুষের জীবনে নিরাপত্তা কতটুকু? প্রতিদিন সকালে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় মনে হয় – বিকালে বা সন্ধ্যায় বাসায় ফিরতে পারব তো, পরিবারের লোকজনের কাছে ফিরতে পারব তো? লাশ হয়ে ফিরতে পারলেও একটা পরিবারের লোকজন নির্দিষ্ট জায়গায় লাশটিকে সমাধিস্থ করতে পারবেন-স্ত্রী বলতে পারবে ‘এটা আমার স্বামীর কবর’; সন্তান বলতে পারবে ‘এটা আমার বাবার কবর’ ভাই-বোন বলতে পারবে –‘এটা আমার ভাইয়ের কবর’ বাবা-মা বলতে পারবেন – ‘এটা আমার সন্তানের কবর’...... কিন্তু ‘গুম’ হলে? নিজের লাশটা সমাধিস্থ করার অধিকার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছি আমরা; ‘অমুকের কবর’ বলে শেষ চিহ্নটি রাখার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পরিবারের লোকজন? সত্যিই কি রাষ্ট্র এর সাথে জড়িত? যে রাষ্ট্র আমাদের প্রাপ্ত অধিকারের দায়িত্ব নেওয়ার কথা সেই রাষ্ট্রই কি আমাদের বঞ্চিত করছে? এসব ভেবে আজ নিরাপত্তাহীনতায় তো ভুগছিই; অনেকটা দিশেহারাও হয়ে যাচ্ছি। এভাবে গুম-খুন আতঙ্কে আতঙ্কিত হয়ে আর কতদিন কাটাব? মাঝে মধ্যেই মনে হয়-এই আতঙ্ক আর ভয়ে ‘পাগল’ হয়ে যাচ্ছি না তো? রাষ্ট্র আমাকে পাগল বানাচ্ছে নাতো? ভয়ে আর আতঙ্কে পাগল হয়ে যাওয়া থেকে রেহাই চাই। রাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আমাদের ট্যাক্সের টাকায় পালিত-রাষ্ট্রের বিশেষ নিরাপত্তা সুবিধাপ্রাপ্ত-রাষ্ট্র পরিচালনায় নিয়োজিতদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই – জীবনের নিরাপত্তা দে, নইলে তোদের বুক চিরে আশ্রয় নিব; নিজের নিরাপত্তা খুঁজব। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.