আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লজ্জা (তসলিমা নাসরিন)



তসলিমা নাসরিনকে নিয়ে পড়ছি। আমাদের দেশের খ্যাতনামা কিছু নাস্তিকরা তসলিমা নাসরিনের বিরাট ভক্ত। যদিও তারা নিজেদের নাস্তিক বলেই দাবি করেন। আমার ধারণা হয় তারা ইসলাম বিদ্বেষী নয়তো বেধর্মী। বেধর্মী কিংবা নাস্তিক হওয়াটা দোষের বলে মনে হয় না।

কারন স্বাধীন মতামত প্রত্যেকেরই রয়েছে, তবে অন্য ধর্মের প্রতি বিদ্বেষভাব পোষন করাকে জঘন্যতম অপরাধ বলেই মনে হয়। আমাদের দেশে যারা নাস্তিক তাদের দেখেছি ইসলাম ধর্মকে অস্বীকার করছে কিংবা তাদের প্রবণতাই থাকছে এটি একটি ভুল ধর্ম তা প্রমান করা । একজন ধর্মভীরু কিংবা ধর্মান্ধের পক্ষে এ ধরনের আক্রমন নিঃসন্দেহে ভয়াবহ। নাস্তিকদেরও একটি নীতি রয়েছে বলে আমার ধারনা। যেহেতু তারা কোনো ধর্মেই বিশ্বাসী নয় সুতরাং ধর্ম সংক্রান্ত কোনো আলোচনাই তাদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয় ।

ধর্ম নিয়ে কেবল তারাই আলোচনা করবে যারা মনে করে ধর্ম বলে কিছু আছে। কিংবা তারা যারা ধর্ম আছে কি নেই তা নিয়ে সন্দেহে দোদুল্যমান। তার মানে আমাদের দেশের নাস্তিকরা(!!!) কি তাহলে দ্বিধাগ্রস্ত যে তারা নাস্তিক কিনা? কারন যার সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসই নেই সে কিভাবে ধর্ম বিষয়ক আলোচনায় যাচ্ছে? ভেবে পাই না। তসলিমা নাসরিনের লজ্জা বইটা পড়লাম। এখানে দেখলাম মৌলবাদিদের প্রতি তার সুগভীর বিদ্বেষ।

অস্বাভাবিক নয়। একজন নাস্তিকের জন্য মৌলবাদিরা সাক্ষাৎ যম স্বরূপ। বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার পর ভারতে সৃষ্ট দাঙ্গা বাংলাদেশেও কিভাবে ছড়িয়ে পড়ে তাই মুলত এখানকার বর্ণনীয় বিষয়। তখন একজন সংখ্যালঘুর মানসিক অবস্থার বিপর্যয়, সংখ্যাগরিষ্ঠের উপর আস্থাহীনতা, এমনকি সংখ্যাগরিষ্ঠের দেশ যে সংখ্যালঘুরও দেশ এই হিসেবের গরমিল দেখা যায়। এই সময় একজন সংখ্যালঘুর পাশে দাড়ানোটা অন্যায় বলে মনে হয় না।

বরং সংখ্যাগরিষ্ঠের দেশ যে সংখ্যালঘুরও দেশ এটি মৌলবাদি ধর্মান্ধদের মনে করিয়ে দেবার প্রয়োজন রয়েছে নিঃসন্দেহে। তবে সেই সঙ্গে এটাও গুরুত্বপূর্ণ যে এই পাশে দাঁড়ানোটা যেন উস্কানিমুলক না হয়। সত্যিকথা বলতে 'লজ্জা'য় সুরন্জনের পরিনতি যে কাউকেই বিব্রত করবে। তাই হয়তো এটি সংখ্যালঘুর জন্য উস্কানিমুলক। এবং সংখ্যাগরিষ্ঠের জন্য লজ্জার।

আবার শেষ পর্যন্ত সুরন্জনের মুসলিম গোষ্ঠীর উপর যে প্রবল ঘৃণা আর প্রতিশোধস্পৃহা সেটি কি তসলিমা নাসরিনের মনের গভীরে লুকানো কোনো বিপুল বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ নয়?? কারন সুরন্জনের শেষ পর্যায়ের ব্যবহার অন্যায় তো বটেই পাঠককে রীতিমত হতবাক করে দেবে। সুরন্জনকে দিয়ে করানো অন্যায় কি সংখ্যালঘুদের অন্যায় প্রতিশোধ গ্রহনের জন্য উৎসাহিত করেনা? এটি আমার তসলিমা নাসরিনের পড়া প্রথম বই। প্রবল ঘৃণা নিয়ে তাকে পড়তে শুরু করেছিলাম। ওনাকে শেষ পর্যন্ত পড়তে চাই। কিছুই না জেনে ঘৃণা করার চেয়ে অন্তত কিছু জেনে ঘৃণা করি।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.