আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশসহ চার দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় নতুন প্রকল্প ঘোষণা

বাংলাদেশসহ চারটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ড্যান চার্চ এইড ১৯ লাখ ৫০ হাজার ইউরো ব্যয়ে নতুন একটি প্রকল্পের ঘোষণা দিয়েছে। এ প্রকল্পের আওতাভুক্ত বাকি দেশগুলো হলো ভারত, নেপাল ও মিয়ানমার।

গত শুক্রবার নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর একটি অভিজাত হোটেলে প্রকল্পটির উদ্বোধন হয়। প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রান্তিক কৃষকদের সংগঠিত করা। এ ছাড়া গতকাল শনিবার প্রকল্পভুক্ত চারটি দেশের প্রতিনিধিরা দিনব্যাপী এক কর্মশালায় প্রকল্পটি ঠিক কোনপথে কীভাবে পরিচালিত হবে সে নিয়ে আলোচনা করেন।



উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নেপালের কৃষি ও বনমন্ত্রী টেক বাহাদুর থাপা ঘারতি বলেন, বিশ্বের ২০ শতাংশ মানুষের বাস এই অঞ্চলে। গোটা বিশ্বের মানুষের আহার জোগানোর সক্ষমতা আছে অঞ্চলটির। কিন্তু লক্ষ্য অর্জনে খাদ্য উত্পাদনে সম্পৃক্ত সবাইকে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে হবে, বিশেষ করে প্রান্তিক কৃষকদের শক্তিশালী করা প্রয়োজন।

প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন ভারতে ড্যান চার্চ এইডের ব্যবস্থাপক জ্যাসন থমাস। তিনি বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রান্তিক কৃষকেরা খাদ্য ও পুষ্টিবিষয়ক সমস্ত নীতিমালা বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখার সক্ষমতা অর্জন করবে।

এ ছাড়া কৃষকদের নিজস্ব পদ্ধতিতে পরিবেশবান্ধব চাষে উদ্বুদ্ধ করতে যথাযথ ফোরামে যোগাযোগের সুযোগ বাড়ানো, খাদ্য ও পুষ্টিবিষয়ক নীতিমালায় কোনো দুর্বলতা থাকলে তা খুঁজে বের করা ও দলগতভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করার সুযোগ বাড়ানো হবে প্রকল্পের মাধ্যমে। এতে করে উত্পাদন, কেনাবেচা ও বণ্টনে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

প্রকল্পভুক্ত দেশগুলোয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। বাংলাদেশে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ড্যান চার্চ এইডের তত্ত্বাবধানে আরডিআরএস ও দুস্থ খাদ্যকেন্দ্র। আরডিআরএস ঠাকুরগাঁওয়ে ও দুস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেত্রকোনায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।



নেপালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স লুই নাভারো বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা বলতে শুধু খাদ্য উত্পাদন ও এর বিলি-বণ্টনকেই বোঝায় না। পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে উত্পাদনের প্রতিটি পর্যায়ে নিযুক্ত ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ জরুরি। উন্নয়নের জন্য যেসব পরিকল্পনা ও নীতি গ্রহণ করা হবে, তাতে কৃষকদের সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে।

দক্ষিণ এশিয়ায় ড্যান চার্চ এইডের আঞ্চলিক প্রতিনিধি ডেভিড ডব্লিউ স্মিথ বলেন, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর নিজ নিজ দেশের অধিবাসীদের খাদ্য জোগানোর জন্য যথেষ্ট প্রাকৃতিক সম্পদ আছে। কিন্তু দরিদ্র ও প্রান্তিক কৃষকেরা এখনো অভুক্ত থাকেন।

তাঁদের খাদ্য নিরাপত্তা নেই। বহুকাল ধরে এ অবস্থা চলে আসছে। তিনি বলেন, গোটা বিশ্বে যত মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, তাদের এক-তৃতীয়াংশ বা এক-চতুর্থাংশের বাস এ অঞ্চলে।

ডেভিড ইউএনডিপি ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির এক সমীক্ষার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের ২৫ থেকে ২৮ শতাংশ ঘরে বছরের মাত্র চার-পাঁচ মাসের খাবার থাকে। তাঁরা প্রতিদিন এক হাজার ৮০০ ক্যালরির কম খাবার গ্রহণ করেন।

মারাত্মক অপুষ্টিতে ভোগে নারী ও শিশুরা। তিনি বলেন, ভারতের আটটি প্রদেশ মারাত্মক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আফ্রিকার খাদ্য নিরাপত্তাহীন ২৬টি দেশকে এক করলেও তার মাত্রা ভারতের এই আটটি প্রদেশের চেয়ে কম।

নেপালে দুই লাখ ৮৭ হাজার ১০০ ভূমিহীন কৃষক আছে, ক্ষুদ্র কৃষকের সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি। এসব জায়গায় মা ও শিশু মৃত্যুর হার ব্যাপক।

খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ব্যাপকতা থেকে প্রকল্পটি এ অঞ্চলে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে তিনি জানান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে ড্যান চার্চ এইডের এ দেশীয় ব্যবস্থাপক হাসিনা ইনাম, আরডিআরএসের নির্বাহী পরিচালক সেলিমা রহমান ও দুস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক দিবালক সিংহ ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.