আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইতিহাস বাংলাদেশের রাজনীতি'র কি সাক্ষ্য দেয়!!!

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের পর প্রধানমন্ত্রী প্রশ্নে জুলফিকার আলী ভুট্টো বেকে বসলেন। নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তারপর সেই বিতর্ক চলে গেল আলোচনার টেবিলে। আলোচনা চললো একেবারে শেষ সময় পর্যন্ত। ভুট্টো সাহেব ঢাকায় আসলেন।

ইয়াহিয়া সাহেব একবার ভট্টো সাহেবের সঙ্গে বসেন, একবার বঙ্গবন্ধু'র সাথে বসেন। তারপর ২৪শে মার্চ ভুট্টো সাহবে করাচী ফেরত গেলেন। ইয়াহিয়া সাহেব টিক্কা খানকে কিছু ফাইফরমায়েস দিয়ে নিজেও রাওয়ালপিন্ডি উড়ে গেলেন। তারপর ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে চললো অপারেশান সার্সলাইট। নিরস্ত্র বাঙালি'র উপর সশস্ত্র পাক সেনাদের নির্মম দানবীয় শক্তি প্রয়োগ।

বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হল। পাক সেনাদের ভাষায়- 'বিগ ফিস হ্যাজ বিন কট'। তারপর শুরু হল মুক্তির লড়াই। সেই লড়াইটি ছিল গোটা বাঙালি'র কাছে সুস্পষ্ট। পাকিস্তানের তাবেদারী আর মানা হবে না।

পূর্ব-বাঙলার সম্পদ আর পশ্চিম পাকিস্তানে পাচার হতে দেওয়া হবে না। সমারিক বাহিনী কর্তৃক দেশ শাসন আর নয়। বাঙালি সেদিন নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবীতে যার যা কিছু ছিল তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাঙলাদেশ প্রতিষ্ঠার, যেখানে জনগণের প্রতিনিধিরাই দেশ শাসন করবে। ন্যায় নীতি ও শান্তি প্রতিষ্ঠা পাবে।

অসাম্প্রদায়িক একটি সমাজ গড়ে উঠবে। নিজেদের ভাতের অধিকার, শিক্ষার অধিকার, স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান, নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত হবে এবং বাঙালি মাথা উঁচু করে বিশ্বে নিজেদের সম্পূর্ণ আলাদা একটি জাতিস্বত্তায় প্রমাণ করবে- বাঙালি একটি শান্তিপ্রিয় জাতি। কিন্তু আমাদের চরম দুর্ভাগ্য আমাদের সেই লক্ষ্য পূরণ হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কি ছিল? বাঙালিকে আর অন্তত ভীনদেশী কারো বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে না। নিজেদের মানুষ দিয়েই নিজেরা একটি সুন্দর সমাজ গঠনে মনোযোগী হব।

যেখানে হাসি-কান্না-দুঃখ-আনন্দ ভাগাভাগি করব। শোষণ জিনিসটির সত্যিকার অর্থেই অবসান ঘটবে এটাই ছিল মূলকথা। কিন্তু আমরা কি দেখলাম? ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি থেকে শুরু করে পাকিস্তানি ভূত তাড়ানোর পর নতুন স্বাধীন বাংলাদেশে এবার একটি আওয়ামী জুজু নতুন কায়দায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো। যা কিছু ভোগ দখল, লুটপাট, চুরি-চামারি, ব্যাংক ডাকাতি, সম্পত্তি দখল, খাসজমি দখল, চর দখল, সব আওয়ামী লোকজন শুরু করলো। তাহলে কি দীর্ঘ নয় মাসের সীমাহীন দুর্ভোগের সেই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বিনিময়ে আমরা একটি আওয়ামী লুটপাট চেয়েছিলাম? আওয়ামী বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে স্বাধীনতা পরবর্তী এই লুটপাটের ঘটনা এড়িয়ে যাবার একটি প্রবণতা দেখি।

লাখ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া এই স্বাধীনতার পর তো এমন লুটপাটের কথা ছিল না। সেই লুটপাটের প্রতি সমর্থন দিয়ে সংবিধানে পরিবর্তন এনে একদলীয় বাকশাল গঠন করা হল। বাকশালের গঠনতন্ত্রে খুব ভালো ভালো কথা আছে। দেশ স্বাধীনের পরেই সংবিধানে সেটি স্থান পেলে হয়তো অন্যরকম হতে পারতো। কারণ তখন সোভিয়েত আমাদের পরম বন্ধু রাষ্ট্র ছিল।

কিন্তু টানা চার বছর একটি সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত তলাবিহীন ঝুড়ি'র সবকিছু লুটপাট হবার পরে কেন ওই আদর্শের কথাটি আসলো? তাহলে কি আওয়ামী চোরদের একটি পাকাপাকি অবস্থান গড়ে তোলার নামই ছিল স্বাধীনতা? মুক্তিযুদ্ধ কিন্তু সে কারণে হয়নি। তাই ওই চাপিয়ে দেওয়া ব্যবস্থাও টিকলো না। তাসের ঘরের মত রাতারাতি ভেঙে গেল! তারপর কি হল? দেশ আরো রসাতলে গেল। খোন্দকার মোশতাক আওয়ামী লীগের একটি অংশ নিয়েই চক্রান্ত করলেন। এই মোশতাক সাহেব স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নানান ধরনের দেন দরবার করে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে আটকে দিতে চেয়েছিলেন।

অস্থায়ী সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে তিনি বড় ভাই আমেরিকা ও চীনের পরামর্শ নিয়ে একটি সমঝোতার চেষ্টা করেছিলেন। এক সময় তাকে সেই ষড়যন্ত্র থেকে সরিয়ে দিয়ে তাজউদ্দিন সাহেব দক্ষতার সঙ্গেই যুদ্ধে নের্তৃত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতার পরে কি এমন ঘটেছিল যে সেই মোশতাক সাহেব আবার বঙ্গবন্ধু'র প্রিয়ভাজনে পরিনত হলেন? আর তাজউদ্দিন সাহেবকে ইস্তফা দিতে হয়েছিল? তাহলে কি স্বয়ং তাজউদ্দিন সাহেবকে বঙ্গবন্ধু নের্তৃত্বের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করতেন? আমরা সেই আড়ালের রহস্যময় বিষয়গুলোর কিছুই জানি না। কিন্তু তাজউদ্দিন সাহেব কখনোই বেঈমানী করেননি। বেঈমানী করলেন স্বয়ং মোশতাক সাহেব ও তার গংরা।

তারা ধ্বংসস্থূপ থেকে জেগে উঠতে যাওয়া একটি দেশের নেতাকে সপরিবারে অত্যন্ত নির্মমভাবে হত্যা করলেন। সেই থেকে বাংলাদেশ নের্তৃত্বশূণ্য একটি দেশ। যে জাতি নিজেরাই নিজেদের নেতাকে হত্যা করে সে জাতি আর কখনো নেতা পায় না। এটাই ইতিহাসের নির্মম শিক্ষা। তারপর থলের বেড়াল বেড়িয়ে পড়লো।

জেনারেল জিয়া এসে পাকিস্তানের পরাজিত শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশটাকে আবার একটি পাকিস্তান বানানোর পায়তারা শুরু করলেন। তিনি গোলাম আজমকে পাকিস্তান থেকে উড়িয় আনলেন। শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী বানালেন। আর বঙ্গবন্ধুর খুনীদের রক্ষা করার জন্য সংবিধান সংশোধন করে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ পাশ করলেন। আর চুরি-চামারি-দখল-লুটপাট এগুলো নতুনভাবে শুরু হল।

এবার পরাজিত শক্তির দখল করার পালা। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে কোনো আন্দোলনই অহিংস ছিল না। স্বাধীনতার পরপর আওয়ামী দস্যুদের হাতেও নিরীহ মানুষ অকাতরে খুন হয়েছে। আওয়ামী দুঃশাসন হঠিয়ে জেনারেল জিয়াও ক্ষমতা পাকাপাকি করতে অসংখ্য মানুষ খুন করেছেন। যাকেই শত্রু মনে করেছেন তাকেই হত্যা করেছেন।

এই পাল্টাপাল্টি খুনের রাজনীতি করার জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সেরকম কোনো আস্ফালনের কথা কোথাও ছিল না। জেনারেল জিয়া ক্ষমতায় এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর কঠোর হাতে দমন পীড়ন শুরু করলেন। জামায়াত-রাজাকার-আলবদর-আলশামসদের প্রতিষ্ঠা ও লালন পালন করার খায়েস নিয়ে একটি পাকিস্তানী কায়দার রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশে নতুন করে জেনারেল জিয়া একটি আধিপত্যবাদী শাসন শুরু করলেন। এভাবে জেনারেল জিয়া'র হাত ধরেই জেনারেল এরশাদের আগমন।

রক্তপাত কিন্তু বন্ধ হল না। বন্ধ হল না রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি দখল কিংম্বা লুটপাট-চুরি-চামারি। বরং গোটা দেশে একটি নব্য আইউব খানের শাসন শুরু হল। গণতন্ত্র লুণ্ঠিত হল। মানুষের ভাতের অধিকার কেড়ে নেওয়া হল।

মানুষের নিরাপদ বসবাসের অভয়বাণী কোথায় যেনো হারিয়ে গেল। পাশাপাশি শুরু হল স্বৈরাচার পতনের আন্দোলন। সেই আন্দোলনও অহিংস ছিল না। রক্তপাত আর নিরীহ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে তখন একটি নতুন আন্দোলন শুরু হল। যতো বেশি লাশ পড়ে আন্দোলন ততো বেশি বেগবান হয়।

মানুষের প্রাণ হল আন্দোলনের সবচেয়ে বড় ঘুটি। নূর হোসেন কেন প্রাণ দিয়েছিল আজও সে প্রশ্নের মিমাংসা হয়নি। ডাক্তার মিলন কেন প্রাণ দিলেন আজও সে প্রশ্নের সমাধান হয়নি। তারপর ছাত্রসমাজ গর্জে উঠলো। স্বৈরাচার এরশাদ সাহেবকে বিদায় নিতে হল।

বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মনে একটি নতুন আশা জেগেছিল, এবার হয়তো দেশ একটি সুনির্দিষ্ট পথেই অগ্রসর হবে। কিন্তু স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর কি হল? ক্ষমতায় আসলেন খালেদা জিয়া। যার এক পা সামরিক ব্যারাকে আর আরেক পা জামায়াতে ইসলামী'র ঘরে। তিনি আবার নতুন করে আরেক ধরনের জুজু'র ভয় দেখাতে শুরু করলেন। স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে যে রূপরেখা সেটি রাতারাতি ভুলে গিয়ে শুরু করলেন বিরোধী দল নিপিড়নের রাজনীতি।

আওয়ামী লীগ তখন কি করলো? তারা সংসনদ বর্জন করে রাজপথের আন্দোলনকে যুক্তিযুক্ত মনে করলো। নিরীহ মানুষের লাশের সংখ্যা দিয়ে রাজনীতি'র আন্দোলনকে চাঙ্গা করার প্রচেষ্টা চালালো। অহিংস আন্দোলনের বদলে আবারো শুরু হল সহিংস আন্দোলন। সেই আন্দোলনে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কথা নাই। নিজেরা ক্ষমতায় গেলে কিভাবে আখের গোছানো হবে তার আয়োজন সেখানে।

ক্ষমতা নিয়ে কাড়াকাড়ি। শেষ পর্যন্ত খালেদা জিয়ার বিদয় ঘণ্টা বাজলো। ক্ষমতায় আসলো আবারো আওয়ামী লীগ। এবার শেখ হাসিনার শাসন শুরু হল। দীর্ঘ একুশ বছর যারা রাষ্ট্রীয় চুরি-চামারি-দখল ভোগ থেকে দূরে ছিল, তারা কিভাবে সেই পুরান অভ্যাস ভুলে যায়? রাতারাতি আবার শুরু হল আওয়ামী ভোগ দখলের পালা।

এবার ছাত্রলীগ সেই লুটপাট দখলে নতুন মাত্রা যোগ করলো। যুবলীগ সেই দখলে নতুন আইডিয়া আনলো। রাস্তা বাঁকাকরণ-সোজাকরণ প্রকল্প। একবার রাস্তার মাঝখানের আইল্যান্ড বাঁকা করা হবে। সেই কন্ট্রাক পাবে যুবলীগ-ছাত্রলীগ।

কয়দিন পর সেই আইল্যান্ড আবার সোজাকরণ প্রকল্পে আবারো কন্ট্রাক পাবে যুবলীগ-ছাত্রলীগ। এই হল সহজ সরল উন্নয়ন!! পাশাপাশি কি হল? ফেনীতে জয়নাল হাজারী বাহিনী গড়ে উঠলো। নারায়নগঞ্জে শামীম ওসমান বাহিনী গড়ে উঠলো। মিরপুরে কামাল বাহিনী গড়ে উঠলো। কুস্টিয়ায় কুমিল্লায় ফরিদপুরে যশোরে রাজশাহী পাবনায় খুলনায় বরিশালে গোটা দেশের নানান প্রান্তে নানান বাহিনী গড়ে উঠলো।

এসব বাহিনীর দখল লুটপাট আর নির্যাতন দিয়ে ষেখ হাসিনার দুঃশাসন তরান্বিত হতে লাগলো। তারপর ২০০১ সালে নির্বাচনের পর কি হল? এবার খালেদা জিয়া পুনরায় ক্ষমতায় আসলেন। এবার জামায়াত শিবির সরাসরি ক্ষমতার অংশ। তাদের গাড়িতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। তারা কি আর বসে থাকতে পারে? এবার সংখ্যালঘু হিন্দুদের বাড়িঘরে একাত্তরের মতো হামলা শুরু হল।

জ্বালাও পোড়াও খুন ধর্ষণ শুরু হল। তখন আওয়ামী লীগের নেতারা নিরাপদ দূরত্বে গুহায় অবস্থান করলেন। শুরু হল প্রিন্স তারেক জিয়ার নের্তৃত্বে একটি হাওয়া ভবনের উদয় কেতন। খালেদা জিয়া শুধু নামমাত্র দেশের প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু হাওয়া ভবন থেকে প্রিন্স তারেক জিয়া দেশের সকল নীতি নির্ধারণ করেন।

বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের কথা সেখানে উচ্চারিত হয় না। সেখানে উচ্চারিত হতে থাকলো বিরোধীদলকে নিশ্চিন্থ করার পায়তারা। আবির্ভূত হতে থাকলো বাংলা ভাই। বোমা-গ্রেনেড জ্বালাও পোড়াও শুরু হল দেশের সবখানে। কোথায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা? দেশ তো পাকিস্তানের চেয়েও একধাপ এগিয়ে মডারেট মুসলিম দেশে পরিনত হল!! তারপর আবার কি হল? ওয়ান ইলেভেন।

ওয়ান ইলেভেন মানে কি? ওয়ান মানে এক আর ইলেভেন মানে এগারো। সেনাবাহিনীর সমর্থণে একটি সরকার থাকবে যাতে এগারো জন সদস্য কাজ করবে। তাদের প্রধান কাজ কি ছিল? দেশে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু তারা কি করলো? সে ইতিহাস সবাই জানে। তারপর তারা একটি নির্বাচন আয়োজন করে বিদায় নিল।

ক্ষমতা পেলেন আবার শেখ হাসিনা। এবার আর ৯৬'র মত নড়বড়ে সরকার নয়। এবার একেবারে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠের সরকার। ফু দিলেই সংবিধান ভেঙে ছাড়খাড় হয়ে যাবে! তাদের মাথায় এবার কি আসলো? কিছু পুরানো কাসুন্দি এবার তারা ঘাটা শুরু করলেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবেন।

খুব ভালো কথা। সেই বিচারটি স্বাধীনতার পরপর ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের মধ্যে কেন করেননি? কেন সেই বিচার সংবিধান সংশোধন করে ১৯৭৩ সালে শুরু করে মাঝপথে বিরতি দিলেন? কেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তখন বন্ধ করে লাহোরে ইসলামিক সম্মেলনে যোগ দিলেন? ভুট্টো সাহেবের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ার জন্যে? যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কেন বন্ধ হয়েছিল? ওই বিচারটি তো কনটিনিউ হবার কথা ছিল। ওই বিচারের কথাটি স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনের সময় তোলা হল না কেন? ওই বিচারের কথাটি খালেদা জিয়ার নব্বই পরবর্তী প্রথম সরকারের সময় আওয়ামী লীগ কেন সংসদে উত্থাপন করলো না? ৯৬' সালে আওয়ামী লীগ কেন ওই বিচারের কথা মুখ ফসকে একবারও বললো না? কারণ, তখন গোলাম আজমের আশির্বাদ নেবার জন্য শেখ হাসিনা আর খালেদা জিয়ার মধ্যে প্রতিযোগীতা চলছিল। সেই প্রতিযোগিতায় খালেদা জিয়া বিজয়ী হয়েছিল। সে কথাও মানলাম।

কিন্তু ৯৬' সালে কেন ক্ষমতায় গিয়ে সেই বিচারের কাসুন্দির ডালাটি খোলা হয়নি? কারণ তখন বঙ্গবন্ধু'র খুনের বিচারের একটি মোক্ষম ইস্যু হাতে ছিল। সেই ইস্যু নিয়ে যতোদিন রাজনীতি করা যায় ততোদিন একটা ধাপ্পাবাজি করে সাধারণ মানুষকে বোগলে রাখা যাবে। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু'র খুনের বিচারের কাজ কার্যকর হতে শুরু করলো। সেটাকে দরদ দিয়ে কাজে লাগালে এতো সময় লাগার কথা নয়। ১৯৯৬ থেকে ২০১০ এই ১৪ বছর শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার নিয়ে রাজনীতি করা গেছে।

বাকী সময়টা নতুন একটা ইস্যু খুব দরকার। সেটা হতে পারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। খুব ভালো কথা। তো সেই বিচার যখন শুরু হল সেখানে এতো নাটক কেন? স্পেশাল ট্রাইবুন্যাল গঠন নিয়েই অনেক সময় পার করা হল। তারপর স্কাইপ কেলেংকারী, ট্রাইবুন্যাল পুনঃগঠন, নাটকীয় রায়! কতো কিছু!! নাটকের আর শেষ নাই।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা যদি সত্যিই সদিচ্ছা হয়, তাহলে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি'র দাবী অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক মানের ট্রাইবুন্যাল গঠন করা কি খুব না জায়েজ ছিল? কেন আন্তর্জাতিক ট্রাইবুন্যাল গঠন করা হল না? যদি বিদেশ থেকে সাক্ষী এসে সাক্ষ্য দিয়ে যেতে পারে তাহলে বিদেশ থেকে আন্তর্জাতিক বিচারক নিয়োগ করা গেল না কেন? কারণ, সহজ কথায় রাজনীতি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের এই ইস্যু নিয়ে আরো কিছু দিন খোলা গরম রাখার একটি কৌশল। যদি সত্যি সত্যিই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার আওয়ামী লীগের কোনো ইচ্ছা থাকতো তাহলে ট্রাইবুন্যাল করতো আন্তর্জাতিক মানের। সেখানে আন্তর্জাতিক বিচারকগণ নিয়োগ পেতেন। বিচারের কাঠগড়া ঢাকায় না হয়ে অন্য কোনো নিরপেক্ষ দেশে হতে পারতো।

বিশেষ করে ভিয়েনায় যেখানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের যুদ্ধাপরাধিদের বিচার হয়, সেই হেগ আন্তর্জাতিক আদালতে কেন বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া তোলা হল না? উল্টো নিজেরাই একটা বিশেষ ট্রাইবুন্যাল করে বলা হল এটি আন্তর্জাতিক ট্রাইবুন্যাল! তাও মানলাম যদি যুদ্ধাপরাধিদের বিচার প্রক্রিয়ার একটা শেষ হয়। কিন্তু এটা তো একটা রাজনৈতিক খেলা। আওয়ামী লীগের যারা যুদ্ধাপরাধী তাদের বিচার এই আদালতে কখন হবে? নাকী জাতির সামনে একটা যুদ্ধাপরাধী বিচারের প্রহসন দাঁড় করিয়ে ক্ষমতা ভোগ করার একটি কৌশল মাত্র! নিজেরাই যখন ট্রাইবুন্যাল করলেন, সেখানে বিচারিক প্রক্রিয়া এতো শ্লো কেন? বঙ্গবন্ধু'র খুনীদের বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে লেগেছে ১৪ বছর! এখনো বঙ্গবন্ধ'র অনেক খুনী নিরাপদে বিশ্বের অনেক দেশে খুব দাপটের সঙ্গেই বসবাস করছে। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে এতো সময় লাগছে কেন? কারণ, সোজাসাপ্টা রাজনীতি। তাদের সবাইকে দেশে ফিরিয়ে এনে ঝুলিয়ে দিলেই তো বঙ্গবন্ধু ইস্যুটি নিয়ে রাজনীতি করার দিন শেষ! সেই পালে হাওয়া দিতেই নতুন করে শুরু করা হল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার।

এই বিচারের প্রক্রিয়া শেষ করতে মিনিমাম আরো ১৪ বছর তো লাগবে। তখনও দেখা যাবে অনেক আওয়ামী যুদ্ধাপরাধী এই বিচারের আওতায় আসেনি। চলমান বিচারের প্রক্রিয়া দেখেই তাই অনুধাবন করা যায়। মানে আরো ১৪ বছরের একটি প্রজেক্ট এই টার্মে ওপেন করা হল। বাদ বাকি আল্লাহ ভরসা! যদি আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় যায়, তারা এই বিচার প্রক্রিয়া কনটিনিউ যে করবে না এটা তাদের আচরণ দেখেই বোঝা যায়।

অর্থ্যাৎ এটা আওয়ামী লীগের প্রজেক্ট। এটাতে বিএনপি হাত লাগাবে না, যেমন ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় হাত লাগায়নি। বরং খুনীদের এখনো নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা করছে এটাই বাস্তবতা। তো কোথায় গেল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা? বর্তমান সময়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা একটি কাগুজে ফানুস! মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় খোদ আওয়ামী লীগেরও আস্থা নেই। এটা তাদের ভোগ ভাগানোর একটা হাতিয়ার মাত্র।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়াও আওয়ামী লীগের ভোট ভাগানোর একটি কৌশল মাত্র। সত্যিকার অর্থে বিচার তারা করতে চায় না। বিচারের নামে একটি ইস্যু খাড়া করিয়ে রাখতে চায়। যাতে আমজনতা কুতকুতু হয়ে ভোটের সময় ময়দানের বক্তৃতায় চাঙ্গা হয়ে নৌকায় ভোট দিতে উৎসাহিত হয়। আওয়ামী লীগের ভোটের রাজনীতিতে এখন কি কি ইস্যু জনগণের সামনে মূলা হিসেবে আছে? নাম্বার ওয়ান, আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বঙ্গবন্ধু'র খুনীদের এখনো যারা বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছে, তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার কার্যকর করা।

নাম্বার টু, চলমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া। কিন্তু তারা দিন ক্ষণ বলছে না যে, এই সময়ের মধ্যে এই ইস্যু'র তারা সত্যি সত্যি সমাপ্তি চায়। সেটা ৭ বছর বা ১০ বছর বা স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তীর আগে এই বিচার প্রক্রিয়া শেষ করবে, এমন দৃঢ়তাও নেই সেই শীতল কণ্ঠে। নাম্বার তিন, দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তোলা হবে। এটা একটা সবচেয়ে বড় প্রহসন।

মুক্তিযুদ্ধের সাতজন বীর শ্রেষ্ঠ'র পরিবারের বর্তমান হাল হকিকত কি আওয়ামী লীগ জানে? তাদের পরিবার তো কোটি টাকার মালিক বনে গেল না! লাখ লাখ পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের খবর কি? তারা কেন এখনো দিন আনে দিন খায়? বয়সের ভারে ন্যূয অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে কেন এখনো রিক্সা চালিয়ে সংসার চালাতে হয়? পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাদের কেন এখনো বিনা চিকিৎসায় কাতরাতে হয়? অনেক মুক্তিযোদ্ধা এখনো চোখে পড়ে যারা স্বাধীন দেশের পতাকা ফেরি করে বিক্রি করে দু'বেলার আহারের ব্যবস্থা করেন। তারা কেউ জানে না মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কি? মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সবচেয়ে বেশি বোঝে আওয়ামী লীগ। আর তারচেয়েও বেশী বোঝে কিছু আওয়ামী বুদ্ধিজীবী। এর বাইরে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যারা কথা বলবে তারা সবাই দেশের শত্রু, তারা সবাই পাকিস্তানের দালাল! এই যদি হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দশা, তাহলে এদেশের সাধারণ জনগণ এখনো মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে বিজয় অর্জন করেছিল, সেটি ছিল একটি অঘটন। সেটি ছিল একটি নির্বোধ ঝাঁপিয়ে পরা।

এখনো দেশের সাধারণ মানুষ মুক্তিযুদ্ধকে বিক্রি করে কোনো সুফল ভোগ করেনি। যতোটুকু করেছে আওয়ামী লীগ ও তাদের পোষ্য বুদ্ধিজীবীরা। এখনো বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে আর স্বাধীনতার ঘোষণার পাঠক হিসেবে জেনারেল জিয়া'র কীর্তি ভাঙিয়ে যতোটুকু সুফল ঘরে তুলেছে, দেশের সাধারণ মানুষ সেই মুক্তিযুদ্ধের কোনো সুফল বা ফসল ভোগ করেনি। মুক্তিযুদ্ধের নাম ভাঙিয়ে আপনারা অনেক কিছু ভোগ করেছেন, অনেক কিছু দখল করেছেন, অনেক সরকারি সুযোগ সুবিধা গ্রহন করছেন, যার সিটেফোটাও দেশের সাধারণ মানুষ চোখেও দেখেনি, ভোগও করেনি। এটাই বাস্তবতা।

সেখানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে, এই ঘোষণা একটি ফাঁপা চোঙ্গার মত। সেখানে ঘি খাওয়ার লোকের অভাব নেই। দেশের সাধারণ মানুষের সেই উসকানিতে কিছুই যায় আসে না। দেশের মানুষ শান্তি চায়, আপনারা শাসকরা তা দিতে গত ৪২ বছর ধরে ব্যর্থ হয়েছেন। ৪২ বছর ধরে আপনারা দেশের শাসন ব্যবস্থায় সরকার পরিবর্তন কিভাবে শান্তিপূর্ণভাবে হবে, সেটি কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

আপনাদের কাছে শান্তিপূর্ণ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সংজ্ঞা হল, ভোটাররা বাড়ি থেকে বাধা নিষেধ ছাড়া ভোটকেন্দ্রে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ব্যালট পেপারে একটা সিল মেরে দেবেন। সেই সিল মারা ব্যালট ভরতি বাক্স কোনো ধরনের ছিনতাইয়ের কবলে না পড়ে, সঠিকভাবে গণনার পর নির্বাচন কমিশন একটা ফলাফল ঘোষণা করবেন। গেজেট প্রকাশের পর সেই ফলাফলে বিজয়ী দল দেশ শাসনে ভার পাবে। আর পরবর্তী পাঁচ বছর দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করার জন্য সেই দল যা খুশি তাই করার গ্রান্টেড লাইসেন্স পেয়ে যাবে। আপনাদের সম্পদ চুরির লাইসেন্স নেন আপনারা তথাকথিত একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।

যেখানে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন বলে কিছু নাই। স্বাধীন বিচার বিভাগ বলে কিছু নাই। ন্যায় বিচার বলে কিছু নাই। পাঁচ বছরের একটি লাইসেন্স নবায়নের খেলায় আছেন আপনারা। স্বাধীনতার পর গত ৪২ বছরে দেশে একটিও রাজনৈতিক সহিংসতার বলিতে অপমৃত্যু'র বিচার হয়নি।

সেটা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পর থেকে আজ ৫ ডিসেম্বর ২০১৩ পর্যন্ত সকল রাজনৈতিক সহিংসতায় মৃত্যুর বেলায় সত্য। মানুষের জীবনের কোনো দাম নাই আপনাদের রাজনীতির কাছে। আপনাদের আন্দোলন কতোটা বেগবান হল, সেই বেগবানে কয়টা লাশ হলে সরকার বাহাদুরের টনক নড়ে, তার উপর আন্দোলন আর সহিংসতার মাত্রা নির্ভর করে। আপনারা কেন কথা কথায় জনসাধারণের সেবার করার কথা বলেন? আপনাদের প্রয়োজনে তো জনসাধাণের লাশ আপনাদের কাছে আন্দোলনের একটি হাতিয়ার। নইলে তো ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে আজ পর্যন্ত সবগুলো রাজনৈতিক আন্দোলনের সহিংসতার বলিতে সবগুলো মৃত্যুর বিচার হত।

অন্তত আদালতে কিছু বিচার চলমান থাকতো!!! আমরা জানি, ১৯৭৩ সালে ছাত্রলীগের হাতে গোপালগঞ্জের কমিউনিস্ট নেতাকে দিনদুপুরে হত্যার কোনো বিচার হয়নি। উল্ঠো সেই হত্যাকারীকে হেলিকাপ্টারে ঢাকায় এনে ইতালীতে পুনর্বাসন করা হয়েছে! আমরা জানি, ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফকে হত্যার বিচার হয়নি। বিচার হয়নি অসংখ্য সেনাবাহিনীর সদস্যদের নির্বিচারে হত্যা করারও। জিয়ার শাসন আমলে অনেক সেনা সদস্যদের ক্যু-পাল্টা ক্যু'র নামে হত্যা করা হয়েছে। সেগুলো'র একটারও বিচার হয়নি।

আমরা জানি, বাসুনিয়া, নূর হোসেন, ডাক্তার মিলন হত্যার বিচার হয়নি। বিচার হয়নি আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যার। বিচার হয়নি শাহ এসএমএস কিবরিয়া হত্যার। বিচার হয়নি রমনা বটমূলে বোমা হামলায় নিহত কারোর হত্যাকারী। বিচার হয়নি সিনেমা হলে বোমার আঘাতে যারা মরলো তাদের কোনো খুনীর।

বিচার হয়নি খ্রিস্টান পল্লীতে বোমা হামলায় নিহত কোনো খুনীর। বিচার হয়নি ভোলায় গোপালগঞ্জে সংখ্যালঘু নির্যাতনের। বিচার হয়নি অসংখ্য রাজনৈতিক হামলায় নিহত হাজার হাজার হত্যার। আমরা এখন এও জানি, আগামীতে বর্তমান সময়ে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় যারা মারা যাচ্ছে তাদের হত্যাতারীদেরও বিচার এদেশে কখনো হবে না। এদেশে কখনো বিচার হবে না বাবু রবীন হত্যার।

এদেশে কখনো চলমান অবরোধ হরতালে যারা বাসে পুড়ে মরছে, পেট্রোল বোমায় পুড়ে মরছে, ট্রেন উল্টে পড়ে মরছে, এসব মৃত্যুর এদেশে কোনোদিন বিচার হবে না। কারণ এদেশে বিচার নেই। আমাদের হাজারো নীতি আছে কিন্তু ন্যায় নাই। আমাদের হাজারো কথার ফুলঝুড়ি আছে কিন্তু শান্তি নাই। সাধারণ মানুষের জীবন এই জনপদে সবচেয়ে অনিরাপদ।

কোথাও নিরাপত্তা নেই সাধারণ মানুষের। কিন্তু আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আমাদের একটি জাতীয় পতাকা আছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আছে। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন একটা জাতি! আমাদের তেল গ্যাস কয়লা আছে।

আমাদের শাসকদের লুটপাট বহাল তবিয়তেই আছে। আমাদের রাজনৈতিক সহিসংতায় প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিলে কেবল লাশ হবার নিয়ম। আর এক দলের বদলে আরেক দলকে পাঁচ বছরের জন্য লুটপাটের লাইসেন্স দেওয়ার নিয়ম। সভ্যতার কোন জনপদে আমরা বসবাস করছি? আমাদের শাসক কারা সেই তফাৎ আমরা কিভাবে বুঝবো? ব্রিটিশরা কিভাবে শাসন করতো? পাকিস্তানীরা কিভাবে শাসন করতো? বঙ্গবন্ধু কিভাবে শাসন করেছেন? জেনারেল জিয়া কিভাবে শাসন করেছেন? জেনারেল এরশাদ কিভাবে শাসন করেছেন? খালেদা জিয়া কিভাবে শাসন করেছেন? আর এখন শেখ হাসিনা কিভাবে শাসন করছেন? কোন শাসনে কিসের পার্থক্য? তা আমরা সাধারণ মানুষের জ্ঞানবুদ্ধিতে আবিস্কার করতে পারি না। আমরা কেবল দেখছি, আমাদের নিরাপত্তা নেই।

জন্মই যেনো আমাদের আজন্ম পাপ এই দেশে। কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ কোন কুলক্ষণে উচ্চারণ করেছিলেন, সাত কোটি বাঙালি হে বঙ্গ জননী, রেখেছো বাঙালি করে মানুষ করোনি। কথাটি হারে হারে সত্য। একশো ভাগ সত্য। এক হাজার বার সত্য।

আমরা আসলে অসভ্য একটি দেশের মানুষ। এই জনপদে কোনো দিন সভ্যতার সূর্য উঠবে কিনা তাই নিয়েই সন্দেহ আছে!!!


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.