আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছুটিতে যাচ্ছেন জাবি উপাচার্য, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক অাফসার

ছুটিতে যাচ্ছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন। এসময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন অধ্যাপক আফসার আহমদ। একটি বিশ্বস্ত সুত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এদিকে গতকাল বুধবার সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেনকে ক্যাম্পাস থেকে সরিয়ে নিতে এসে ব্যর্থ হয়েছেন ঢাকা জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার। বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে 'একগুঁয়ে' উপাচার্যকে সরিয়ে নিতে ক্যাম্পাসে আসেন ঢাকা জেলা প্রশাসক শেখ ইউসুফ হারুন, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান এবং সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান মোল্লা।

এর আগে বুধবার রাত সোয়া ৮টার দিকে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদারের বাসভবনে ২টি ককটেল ছুঁড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। এতে ভবনের জানালার কাঠসহ কাঁচ ভেঙ্গে যায়। তবে এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটে নি। এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে অজিত কুমার মজুমদারের বাসা থেকে একটি রামদা উদ্ধার করেছে পুলিশ। রামদাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বড় খামে ঢোকানে ছিল।

এদিকে এ ঘটনার পিছনে উপাচার্যের ইন্ধন রয়েছে বলে দাবি করেছেন অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার। এর আগে সোমবার মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে একটি এসএমএস আসে অধ্যাপক অজিত কুমারের মোবাইল ফোনে।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক মোহা. মুজিবুর রহমান বলেন, 'হুমকি আসার পর এখানে নিরাপত্তা জোরদার করা উচিত ছিল। যেহেতু এটা করা হয় নি বলে হামলা হয়েছে তাই এটা প্রশাসনিক ব্যর্থতা। '

অন্যদিকে বুধবার ককটেল বিস্ফোরনের পরপরই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এ হামলার জন্য প্রশাসনকে দায়ী করে এবং এর জন্য উপাচার্যকে দায়ী করে তার পদত্যাগ দাবিতে উপাচার্য ভবনে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।

এমন সময় 'শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ঐক্য ফোরাম' এর পক্ষ থেকে উপাচার্যকে পদত্যাগের জন্য ৩০ মিনিট সময় বেঁধে দেওয়া হয়। আল্টিমেটাম শেষ হলে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ভবনের ফটকের তালা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে যায়। তখন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের শান্ত করে ফিরিয়ে নিয়ে আসে।

এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা উপাচার্য ভবনের সামনে জামায়াত-শিবিরবিরোধী মিছিল দিতে থাকলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। গভীর রাতেও তারা উপাচার্যের পক্ষে শ্লোগান দেয়।

শিক্ষক সমিতির সভাপতির বাসায় ককটেল হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপাচার্যের সাথে দেখা করতে তার বাসভবনে যান। তারা ভবনের কলিং বেল চাপলেও ভিতর কোন সাড়া শব্দ আসেনি এ সময়। পরে শিক্ষকরা উপাচার্য ভবনের সীমানা দেয়ালের বাইরে থেকে উপাচার্য ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন।  

জেলা প্রশাসক আন্দোলনকারীদের জানান, 'সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশ পেয়ে আমরা উপাচার্যকে নিয়ে যেতে এসেছ। উপর মহল উপাচার্যের উপর সন্তুষ্ট নয়।

এর পর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ২ বার চেষ্টা করেও উপাচার্যকে নিয়ে যেতে পারেন নি। ভিসি ক্যাম্পাস ছাড়তে রাজি নন। ভিসি তাদের জানিয়েছেন যে রাতে না গিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে যাবেন। পরে রাত সোয়া ২টার দিকে তারা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উপাচার্য তার বাসভবনের ভেতরে অবস্থান করছেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষকার তার বাসার সামনে অবস্থান করছেন। কিছু দিনের ছুটিতে উপাচার্য যেকোন সময় বাসা থেকে বের হবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। তার বাসার সামনে প্রচুর দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে একটি বিশ্বস্ত সুত্র জানিয়েছে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এম এ মতিন অসুস্থ থাকায় ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব পাচ্ছেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আফসার আহমদ।



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।