আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রমনা পার্ক

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ঠিক মধ্যভাগে নগরের ফুসফুস বা অঙ্েিজন সরবরাহকারী হিসেবে নীরবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে রমনা পার্ক। নানা প্রজাতির গাছ, কৃত্রিম হ্রদ এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কারণে পার্কটি নগরবাসীর এক প্রিয় ঠিকানা। মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে ১৬১০ সালে বাংলার সুবেদার ইসলাম খাঁর হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় রমনা পার্কের। তখন রমনা পার্কের বর্তমান এলাকাটি ছিল ঢাকা নগরের উত্তরাংশ। এখানে নতুন আবাসিক এলাকা গড়ে তোলার জন্য ইমারত, মসজিদ, মন্দির প্রভৃতি গড়ে তোলা হয়।

কিন্তু মোগল সাম্রাজ্যের পতনের পর রমনা এলাকাটি তার জৌলুস হারিয়ে পরিত্যক্ত জঙ্গলে পরিণত হয়। তবে ১৮২৫ সাল থেকে ব্রিটিশ কালেক্টর ডাউইজের সময় ঢাকা নগর উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় যার অন্যতম ছিল রমনা এলাকার উন্নয়ন। এ সময় এলাকার একটি অংশ ঘেরাও করে ঘোড়দৌড় বা রেসকোর্সের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আর অন্য অংশটিকে রমনা গ্রিন নাম দিয়ে যাত্রা শুরু করে আজকের রমনা পার্ক। ১৯০৮ সাল থেকে পার্কের দ্রুত উন্নতি ঘটতে থাকে যা চলে ১৯২৮ সাল পর্যন্ত।

এ সময় ঢাকার নবাব পরিবার এখানে একটি রাজকীয় বাগান তৈরি করেন যার নাম দেওয়া হয় 'শাহবাগ'। এ সময় একটি চিড়িয়াখানাও গড়ে তোলেন ঢাকার নবাবরা। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে রমনা পার্ক উদ্বোধন করা হয় ১৯৪৯ সালে। তখন পার্কের আয়তন ছিল প্রায় ৮৯ একর। ৭১ প্রজাতির বৃক্ষের সমারোহে রমনা ছিল এক সবুজ অরণ্য।

আর এরই মাঝে আয়োজন করা হতো মেলা, প্রদর্শনী এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ১৯৬০ সালে ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথ-২ ঢাকায় আগমন করেন। এ সময় রমন পার্কে তাকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ১৯৫২ সাল থেকে সরকারিভাবে বাগানটি রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং স্থাপনার জন্য কিছু কিছু এলাকা ছেড়ে দেওয়ার কারণে বর্তমানে প্রায় ৬৯ একর এলাকা নিয়ে পার্কটি অবস্থিত।

এর মধ্যে কৃত্রিম হ্রদ রয়েছে প্রায় ৯ একরজুড়ে। বর্তমানে ৭১ প্রজাতির ফুল জাতীয় গাছ, ৩৬ প্রজাতির ফলদ গাছ, ৩৩ প্রজাতির ঔষধি গাছ, ৪১ প্রজাতির বনজ গাছ এবং ১১ প্রজাতির বিবিধ গাছ নিয়ে রমনা পার্ক ঢাকাবাসীর একটি প্রিয় গন্তব্য। আমাদের স্বাধিকার আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসেরও অংশ এই রমনা পার্ক। প্রতিবছর বাংলা নববর্ষের দিনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং মেলাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর সব পথ যেন এই রমনা পার্কে এসে মেশে।

 

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.