আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফিরিয়ে আনা হোক পলাতক ছয় বঙ্গবন্ধুর খুনিদের।

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব। এক এক করে বর্তমান সরকারের চার বছর পেরিয়ে গেলেও বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পলাতক ছয় আসামির একজনকেও ফিরিয়ে আনা যায়নি। ২০১০ সালে বঙ্গবন্ধুর পাঁচ খুনির ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর বিদেশে পালিয়ে থাকা বাকি ছয়জনকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে জোর দিয়েছিল সরকার। এ ব্যাপারে একটি টাস্কফোর্সও কাজ করছে। উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল বিপথগামী একদল সেনাসদস্য।

২০১০ সালে বঙ্গবন্ধুর পাঁচ খুনির ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর একই পরিণতির আশঙ্কায় বাকি ছয় খুনি বারবার অবস্থান বদল করছেন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ধারণা করছেন। পলাতক খুনিরা হলো লে. কর্নেল (বরখাস্ত) নূর চৌধুরী মেজর (বরখাস্ত) শরিফুল হক ডালিম লে. কর্নেল (বরখাস্ত) খন্দকার আবদুর রশিদ লে. কর্নেল (অব.) এ এম রাশেদ চৌধুরী ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন। পলাতক খুনিদের মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে এবং নূর চৌধুরী কানাডায় অবস্থান করছেন বলে সরকারের কাছে তথ্য রয়েছে। সরকারের কূটনৈতিক প্রয়াস সত্ত্বেও তাঁদের ফেরত পাওয়ার সুস্পষ্ট আশ্বাস মিলছে না। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরীকে ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ জোর প্রয়াস চালিয়েছে।

এর অংশ হিসেবে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর কানাডায় বাংলাদেশ হাইকমিশন তার নামে ইস্যু করা পাসপোর্ট বাতিল করে। নূর চৌধুরী বর্তমানে আরসিএমপির একটি দলের নজরদারিতে রয়েছেন। শরণার্থী হিসেবে বসবাসের জন্য তাঁর আবেদন এরই মধ্যে বাতিল করা হয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, নূর চৌধুরীকে ফেরত পাওয়ার অনুরোধ প্রভাব ফেলেছে বাংলাদেশ-কানাডা সম্পর্কের ওপর। বাংলাদেশের প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় সম্পর্কে চলছে শীতলতা।

অন্যদিকে খুনি লে. কর্নেল (অব.) এ এম রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পেতে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিলেও ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে ইতিবাচক কোনো উত্তর আসেনি। এ এম রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠাতে এর আগে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয়। চিঠিতে বলা হয়, এ এম রাশেদ চৌধুরী তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের এবং সেনাবাহিনীর কয়েকজন কর্মকর্তাকে হত্যা করেন। একই বছরের ৩ নভেম্বর ওই গ্রুপটি বাংলাদেশের সাবেক উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ এবং সাবেক দুই মন্ত্রী এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে কারাগারে আটক অবস্থায় হত্যা করে।

রাশেদের বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার ধানমণ্ডি থানায় দণ্ডবিধির ১২০(বি), ৩০২, ৩২৪, ৩০৭, ১০৯ এবং ৩৪ নম্বর ধারায় মামলা হয়। ১৯৯৬ সালের ২ আগস্ট মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ৪ নভেম্বর লালবাগ থানায় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারাতেও একটি মামলা করা হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ১৯৯৬ সালের ৯ আগস্ট এ এম রাশেদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সোনাইমুড়ি গ্রামের মৃত শিহাব উদ্দিন আহমদের ছেলে এ এম রাশেদ চৌধুরী উল্লিখিত অপরাধের কারণে বাংলাদেশের ওয়ান্টেড আসামি।

খুনি আবদুল মাজেদ ও মোসলেহ উদ্দিন ভারতে থাকতে পারেন- এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত কয়েক বছরে বিভিন্ন ফোরামে ঢাকা নয়াদিল্লির কাছে তাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টি তুলেছে। তবে দৃশ্যত পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে এ ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি নেই। কয়েক বছর আগেও খুনি রশিদ ও ডালিমের লিবিয়া ও পাকিস্তানে আনাগোনা ছিল। খুনি রশিদ লিবিয়ায় মুয়াম্মার গাদ্দাফির আশ্রয়ে ছিলেন। লিবিয়ার বেনগাজিতে গাদ্দাফি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ব্যবসাও ছিল তাঁর।

তবে ২০১১ সালে লিবিয়ায় রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রশিদ এখন কোথায় আছেন তা স্পষ্ট নয়। খুনি ডালিমের অবস্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য জানা যায়নি। তিনি ২০০৯ সালের শেষ দিকে কানাডায় গিয়েছিলেন বলে দেশটির সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। জানা গেছে, কানাডা থেকে কয়েক দিন পরই তিনি হংকং হয়ে আবার পাকিস্তান ফিরে যান। তিনি ব্রিটিশ পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন।

সরকারের কাছে থাকা তথ্যানুযায়ী, খুনি আজিজ পাশা জিম্বাবুয়েতে মারা গেছেন ২০০২ সালে। বাকিরা বারবার নিজেদের অবস্থান পাল্টাচ্ছেন বলে সংশ্লিস্ট সূত্রগুলোর ধারণা। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনতে আইনমন্ত্রী ব্যরিস্টার শফিক আহমেদের নেতৃত্বে একটি টাস্কফোর্স কাজ করছে। এতে আরো আছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র, আইন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা। টাস্কফোর্স ছাড়াও বিদেশে বাংলাদেশ মিশন খুনিদের ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ফিরিয়ে আনা হোক বঙ্গবন্ধুর খুনিদের এই কামনা করি।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.