আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাদের মোল্লার ফাঁসি, আইনের শাষন এবং রাজনীতি

বিক্ষিপ্ত ভাবনা

গণজোয়ার যে রাষ্ট্র শক্তিকে উল্টো পথে চলতে বাধ্য করে তার প্রমান এই মামলার রায়। যুদ্ধাপরাধের বিচার বাংলাদেশের রাজনীতি, বিচারিক সংস্কৃতি, সামাজিক নিরাপত্তা, জননিরাপত্তা সহ সকল বিষয়ে যে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করছে এবং ভবিষতেও করবে তার ফল এতই শুধুর প্রসারী যে তা কল্পনার অতীত। এই বিচারের কারণে কয়েকটি বিষয়ে সুবিধা তৈরি হয়েছে আবার কয়েকটি বিষয়ে সমস্যা তৈরি করেছে। যার ফল কত ভয়ানক হতে পারে আমি তা চিন্তা করেই বিমর্ষ হই। আমরা যুদ্ধাপরাধের বিচার চেয়েছি।

যেনতেন বিচার চাইনি। আমরা এ বিচার নিয়ে রাজনীতি চাইনি। কিন্তু আমাদের চাওয়ার মূল্য কতটুকু পঁচা রাজনীতিবিদদের কাছে। কাদের মোল্লার রায় বের হবার পর এ নিয়ে সবচেয়ে গঠনমূলক সমালোচনা লিখেছেন ডেভিড বার্গম্যান, যিনি ডঃ কামাল হোসেনে মেয়ের জামাই এবং ঢাকার একটি ইংরেজী দৈনিকে কাজ করেন। তার ব্লগটি ইংরেজীতে লিখিত।

তার ব্লগ পড়ে আমার কাছে মনে হয়েছে আমরা কি কোন ভূল করলাম। শাহবাগের আন্দোলনে কাদের মোল্ল ছিল একটি উপলক্ষ্য মাত্র। মূল বিষয় ছিল যুদ্ধাপরাধীদের সঠিক বিচার নিশ্চিত করা যাতে রাজনীতি করতে গিয়ে কোন আপোষ বা অবহেলা করা না হয়। কিন্তু ডেবিড ব্যার্গম্যানের ব্লগ পড়ার পর আমার কিছুটা মোহ বিচ্যুতি ঘটল। তার ব্লগটি বেশ তথ্য বহুল।

তিনি প্রথম থেকেই এই বিচারের উপর তার মতামত লিখছেন। তার লিখার ধরণ অনেকটা প্রথম আলোর মিজান সাহেবের বা আরেকটু ভাল মানের। তিনি কয়েকটি মৌলিক প্রশ্ন তুলে ধরে সবদিক বিশ্লেষন করে বলছেন, কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে যথাযথ বিচার করা হয়নি এবং বিচারের মানকে নষ্ট করা হয়েছে। যে প্রশ্নগুলো উঠেছে তার সংক্ষিপ্ত ১ টি হচ্ছে যে বিষয়ে তাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে তাতে কোন অবস্হাতাতেই ফাঁসি দেয়া সম্ভব নয়। এর অন্যতম কারণ স্বাক্ষীর স্বাক্ষে গোঁজামিল।

আমার প্রশ্ন মিরপুরের বধ্যভূমিতে যেখানে ৪০০ এর অধিক লোককেই ১ম তিন দিনেই হত্য করা হয়েছে সেখানে কেন স্বাক্ষ্য নিয়ে গোঁজামিল দেখা গেল। তার প্রশ্ন আরও অনেক। আমার উদ্দেশ্য এখানে ডেভিড বার্গম্যানের প্রচার বা কাদের মোল্লার স্বরে কথা বলা নয়। আমার প্রশ্ন একটাই যে বিষয়টা নিয়ে আমরা এত আন্দোলন করলাম সে বিষয়টিকে কেন অপরাজনীতির শিকার হতে হল? ডেবিড বার্গম্যানের ব্লগে মোল্লার রায়ের ত্রুটিগুলো জানতে এখানে দেখুনঃ Click This Link হয়ত আজ বা কাল কাদের মোল্লার ফাঁসি হবে। কিন্ত তার পর যদি প্রমানিত হয় এটি একটি ভূল রায় তখন জামাতদীর যে উত্থান ঘটবে তা সামাল দেয়ার ক্ষমতা আওয়ামীলীগের হবেনা।

আমি সংক্ষেপে বলতে চাই সরকার তড়িঘড়ি করে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার জন্যে যদি কোন অন্যায় বিচার করে তখন যুদ্ধাপরাধের পুরো বিষয়টিই বুমেরাং হবে। আমি আশা করব বিচার বা এই আন্দোলন সংশ্লিষ্ট যারা আছেন বিষয়টি আরেকবার ভাববেন। আমাদের আন্দোলন ছিল যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবীতে। যতটুকু জানতে ফেরেছি কাদেরমোল্লা জামাতী রাজনীতি চুনোপুটি মাত্র। আমারে কেন জানি মনে হয় রাঘব বোয়ালদের ছেড়ে দেয়ার জন্যই কাদের মোল্লার বিচারের নামে তামাশ করে একটি উপলক্ষ্য খোজা হচ্ছে।

বিষয়টি যথাযথ ভাবে রিভউ করে ব্যবস্হা নেয়া হোক। তার পরিবার থেকে বলা হচ্ছে কাদের মোল্মা আর কসাই কাদের এক নয়। বিষয়টি নিয়ে সরকারের কাছে বিবৃতি আশ করছি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.