ব্যর্থ মনোরথ নিয়ে সুজাতা সিং যখন দিল্লি ফিরে গেছেন, তখন ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে পাঠানো গোপন একটা নথির বিষয় এরই মধ্যে ফাঁস হয়ে গেছে, যা থেকে লোমহর্ষক তথ্য বেরিয়ে এসেছে। গত ২২ নভে¤¦র ২০১৩ তারিখে ‘র’-এর সদর দফতর থেকে EF6/DHK/43/69 স্মারকে একটি অতি গোপনীয় মেমোতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কারাগারে আটক অন্তত পাঁচজন জামায়াত নেতাকে একটি পরিকল্পিত নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে ডিসে¤¦র মাসেই হত্যার পরিকল্পনা হয়েছে। বাংলাদেশে দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচনে যদি বিএনপি-জামায়াত যোগ দিয়ে দেয় সে েেত্র মতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পে নির্বাচনে জয়লাভ করে আবার মতায় যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। আবার, বিএনপিবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে আওয়ামী লীগ পুনরায় মতায় এলেও এদের পে প্রথম বাজেট সেশন পর্যন্ত মতায় টিকে থাকা সম্ভব হবে না। এ কারণেই আওয়ামী লীগ চলতি বছর ডিসে¤¦র মাসের মধ্যেই কারাগারে আটক জামায়াতে ইসলামীর অন্তত পাঁচ শীর্ষ নেতাকে কারাভ্যন্তরে নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে হত্যা করার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে।
এ ল্যকে সামনে রেখেই কারা-প্রশাসনের মহাপরিদর্শক পদ থেকে সেনা অফিসারকে সরিয়ে মতাসীন দলের প্রতি অনুগত একজন আমলাকে বসানো হচ্ছে। কারণ মহাপরিদর্শক পদে কোনো সেনা অফিসারকে রাখলে এ ধরনের অঘটনের দায় সেনাবাহিনীর ওপর পড়বে। এ কারণেই কোনো সেনা অফিসার কারাভ্যন্তরে এ ধরনের হত্যাযজ্ঞ ঘটতে দেবেন না। তাকে আগে থেকেই সব ঘটনা দেশটির সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা অবহিত করে দেবে। এসব বিবেচনা মাথায় রেখেই কারা মহাপরিদর্শক পদে রদবদল হতে যাচ্ছে।
‘র’-এর ওই গোপন নথি থেকে আরো জানা যায়, কারাভ্যন্তরে পরিকল্পিত এই হত্যাযজ্ঞের বিষয়টি কারাগারে বসেই গোছাচ্ছেন আওয়ামী লীগপন্থী মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী, যাকে মিশন সফল করার পর কারাগার থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করা হবে। তবে এই শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ভারতে যেন আশ্রয় দেয়া না হয়, অথবা সে যেন ভারতে প্রবেশ করে আত্মগোপনেও না থাকতে পারে সে বিষয়টি জোর দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে গোপন ওই মেমোতে। ‘র’-এর ধারণা, ভারতে আশ্রয় না পেলে বাংলাদেশ থেকে পালানো ওই শীর্ষ সন্ত্রাসী নেপাল অথবা মিয়ানমারের আরাকান অধ্যুষিত এলাকায় আশ্রয় নেবে।
মতাসীন আওয়ামী লীগ এক দিকে যেমন মতায় আরেক দফা বসার নানা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে, ঠিক তেমনিভাবে মতা থেকে অগত্যা সরে যেতে বাধ্য হলে শেষ মুহূর্তে এ ধরনের লোমহর্ষক ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনা পাকাপোক্ত করে রেখেছে। কারণ তারা জানে, ২০১৪ সালের নির্বাচনে জয়ী না হতে পারলে আওয়ামী লীগের অস্তিত্বই সঙ্কটে পড়বে।
এ ছাড়া ভারতের আগামী নির্বাচনে কংগ্রেস পরাজিত হলে আওয়ামী লীগ তাদের অভিভাবকসুলভ আশীর্বাদ থেকেও বঞ্চিত হবে। এখানে উল্লেখ্য, ভারতীয় জনতা পার্টির সাথে আওয়ামী লীগের মিত্রতার বন্ধন নেই। এসব বাস্তবতায়, ২০১৪ সালের পরবর্তী পাঁচ বছর আওয়ামী লীগের জন্য দারুণ দুঃসময় হবে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা।
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন ঘিরে দেশে যখন চরম অস্থিরতা বিরাজমান তখন বাংলাদেশ সফরে এসেছেন জাতিসঙ্ঘের সহকারী মহাসচিব তারানকো। উদ্দেশ্য সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপে নির্বাচন অনুষ্ঠানে মতাসীন দল এবং প্রধান বিরোধী দলের নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের মধ্যে বিরাজমান রাজনৈতিক মতপার্থক্য দূর করে বাংলাদেশকে একটি সম্ভাব্য মহাসঙ্কটের হাত থেকে রা করা।
ঢাকায় আসার আগেই জাতিসঙ্ঘের সহকারী মহাসচিব রাষ্ট্রপতি এবং সেনাপ্রধানের সাথেও সাাতের আগ্রহ ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু সরকারের প থেকে এ দু’টি সাাতের অনুমতি দেয়া হয়নি। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে, অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো এবং তার সফরসঙ্গীদের সেনাপ্রধানের সাথে সাাতের কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে? এক্ষেত্রে আমাদের সবার খেয়াল রাখা দরকার, বর্তমানে জাতিসঙ্ঘের শান্তিরা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পঞ্চাশ হাজারের বেশি সদস্য নিয়োজিত আছেন। এ ছাড়া আছেন পুলিশসহ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আরো কয়েক হাজার সদস্য। তাই তারানকো বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের সাথে সাাতের আগ্রহ ব্যক্ত করতেই পারেন।
এখানে দোষের কী আছে? তাছাড়া চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট মিটে না গেলে বাংলাদেশের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব এবং জাতিসঙ্ঘ কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে বলে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম আভাস দিয়ে যাচ্ছে। যদি সত্যি সত্যিই পরিস্থিতি সেদিকে গড়ায় তাহলে তো জাতিসঙ্ঘের শান্তিরা মিশনে দায়িত্বরত বাংলাদেশী সেনা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের ফেরত পাঠিয়ে দেয়ার মতো মারাত্মক কিছুও ঘটতে পারে, যা বাংলাদেশের কোনো নাগরিকেরই কাম্য নয়। কিন্তু মতাসীন দল যখন চোখে সর্ষে ফুল দেখছে, তখন তাদের কাছ থেকে কোনো বিষয়েই সঠিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাশা করা অবান্তর। আর এ কারণেই বাংলাদেশের সামনে যে মারাত্মক সঙ্কট অপেমাণ, তা থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো সব দলের অংশগ্রহণে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য অবাধ ও নিরপে একটা নির্বাচন অনুষ্ঠান। এটা সম্ভব যদি ক্ষমতাসীনদের মাথায় শুভবুদ্ধির উদয় হয়।
সুত্রঃ Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।