আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি অপ্রয়োজনীয় নির্বাচন

ক্লিন'স অল্টারনেটিভ ওয়ার্ল্ড

আজ উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট জোসে মুজিকা'র সাক্ষাতকার ভিত্তিক রিপোর্টটি পড়ছিলাম গার্ডিয়ান পত্রিকায়। বিশ্বের দরিদ্রতম প্রেসিডেন্ট বলা হয় তাকে। তার সম্বন্ধে অনেক কিছু মেনে নিলেও তিনি ওই বিশেষণটি মেনে নেননি। বলেছেন- দরিদ্র সে-ই যার অনেক কিছু দরকার। আমার যেহেতু ওসব কিছু লাগে না, সুতরাং আমি দরিদ্র নই।

চারবার জেলে ছিলেন। গুলি খেয়েছেন কয়েকবার। একটা গেরিলা দলের সাথে ছিলেন যার কাজ ছিলো ব্যাংক লুট করে টাকা পয়সা গরিবদেরকে বিলিয়ে দেয়া। সঙ্গত কারণেই তা্ই তাদেরকে লোকে ডাকতো রবীনহুড গেরিলা দল। সেই ব্যক্তি ২০০৯ সালের নির্বাচনে জিতে প্রেসিডেন্ট।

কয়েকদিন আগে পৃথিবীর প্রথম দেশ হিসেবে মারিজুয়ানা সেবনকে আইনসিদ্ধ করেছেন তিনি। বলেছেন- ড্রাগ ডিলারদের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করতেই এই আয়োজন। তবে ড্রাগ গ্রহণের নির্দষ্ট মাত্রা আছে। বিষয়টা এলকোহলের মতোই। বেশি নিয়ে মাতাল হওয়া যাবে না।

তার যে প্রেসিডেন্ট ভবন ছিলো সেটাকে হোমলেস-দের দান করে দিয়েছেন। তিনি থাকেন একটা ফার্ম হাউজে। তার বাড়ির সামনের সিকিউরিটি বলতে দুজন গার্ড আর একটা তিন পায়া কুকুর। আজ সকালেই পড়লাম। একটু পরেই আমার দেশের নির্বাচনের কথাও জানতে শুরু করলাম।

একজন মানুষের এক জীবনে ঠিক কতটা আরাম আয়েশ অথবা ক্ষমতাভোগ করতে হয়? যেকোন বিষয়ই এক সময় বিরক্ত লাগার কথা। খাবার থেকে শুরু করে রমন- সব বিষয়েই। তবে ক্ষমতা বোধ হয় অন্য কিছু। সেখানটায় বিরক্তি আসে না কখনোই। অন্তত কারো কারো।

আমি ভাবছিলাম আমাদের প্রধানমন্ত্রী কখনো ক্লান্ত বোধ করেন কি-না। কখনো তার মনে হয় কি-না এবার অন্যকিছু করি। অন্যভাবে মানুষের সেবা করি। যে প্রহসনটা করলেন তিনি পুরো দেশের সাথে সেটার জন্য কখনো তার অনুতাপ হয় কি-না। ঘুমাতে যাবার কয়েক মিনিট আগে কী তার একটা দীর্ঘশ্বাস আসে? আমার স্মৃতিতে একটা নির্বাচনের কথা অক্ষয় হয়ে থাকবে।

৯১ এর নির্বাচন। নির্বাচন কেবল একটা সরকারকেই ক্ষমতা আনে না এটা একটা দেশের মানুষকে ভীষণভাবে আলোড়িত করে। এটা কেবল একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা না, এটা একটা উৎসব। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে বড় অফিস সব জায়গায় এটা একটা আলোচনার বিষয়। তারপর ভোট দিয়ে রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা যাকে ভোট দিলাম সে জিতলো কি-না।

এটা একটা দেশের সব মানুষের অধিকার। নির্বাচন তাই যেকোন সমাজ বিজ্ঞান বইয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। আর এটাই স্বৈরতন্ত্রের সাথে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় পার্থক্য। সুতরাং যখন জনগণের এই সুযোগ থাকে না তখন সেটা না করলেও চলে। এখন পর্যন্ত শেখ হাসিনা যা চেয়েছেন তা-ই করেছেন তা-ই পেয়েছেন।

সুতরাং সংবিধান সংশোধন করে বললেই হতো- তিনি যতদিন বেচে আছেন ততদিন প্রধানমন্ত্রী। আমার ধারণা এখন যা হয়েছে তার তুলনায় ওটা হয়তো আরো বেশি গ্রহণযোগ্য হতো। আর পত্র-পত্রিকাগুলো একটা ফাসি নিয়ে এতই ব্যস্ত যে, এই যে এত বড় একটা অবিচারের নির্বচনী প্রহসন যে হয়ে গেলো সেটা নিয়ে টু শব্দটা নাই। । একটা দেশের জন্য এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না।

অভিনন্দন আওয়ামীলীগের প্রধানমন্ত্রীকে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.