আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার চোখে দিল্লী!

. আমার নাইবা হলো পারে যাওয়া...

ঠিক সময় মতই ট্রেন ছাড়লে সহযাত্রীদের দিকে নজর দেবার ফুরসত মিল্লো। এসি টু টায়ারে আমাদের দুজন সহযাত্রী দুই যুবক। একজন বাংলাদেশী কেয়ারে চাকুরী করেন। কোলকাতায় বেড়াতে গিয়ে অফিসের মিটিং এ যোগ দিতে দিল্লী যাচ্ছেন। অপর জন অবাঙ্গালী।

সৌদীতে কিং ফায়সাল হাসপাতালে চাকরী করেন। ছোট বোনের বিয়ে দিতে কলকাতায় এসে এখন সৌদীতে ফিরে যাবার জন্য দিল্লী যাচ্ছেন। আমাদের দুটো সিটের একটি ছিলো উপরে। অবাঙ্গালী যুবকটি নিজেই কুম্ভকর্ণকে নিচের সিট ছেড়ে দিলো। আমাদের ক্যুপের পাশে এক দিল্লী প্রবাসী বাংগালী মা তার কিশোরী কন্যা নিয়ে বসেছেন।

উনার স্বামী কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। সে বেচারার সিট বেশ দূরে হওয়াতে ঘুমানোর সময় বাদে বাকি সময় আমাদের সাথে বসে বেশ জম্পেশ আড্ডা দিতে দিতে গেলেন। যাত্রা পথে মনের মত সংগী পেয়ে সময়টা ভালোই কাটলো। দিল্লী পৌছোলাম পরদিন দুপুর বারোটায়। কুম্ভকর্ণের ইচ্ছে ছিলো জুম্মার নামাজ জামা মসজিদে আদায় করার।

সেটা আর হলোনা। জামা মসজিদের সামনে গিয়ে আমাদের ট্যাক্সি ছেড়ে রিক্সা নিতে হলো। জুম্মার নামাজের জন্য ঐ রাস্তা শুধু রিক্সা চলাচলের জন্য উন্মুক্ত। পুলিশের পাহারাও চোখে পড়ার মত। যাই হোক! নির্দিষ্ট হোটেলে পৌছে হোটেলের খাড়া সিড়ি দেখে আমার তো আত্মারাম খাঁচাছাড়া।

দেশ ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোমর আর হাটুর ব্যাথা আমার সাথী হয়েছে। এই সিঁড়ি ভাঙ্গা আর হিমালয় পর্বতের চুড়ায় ওঠা আমার কাছে সমান। জিবের ডগায় প্রান নিয়ে কোনো মতে চার তলা বেয়ে উপরে উঠে ধপাস করে বিছানায় পড়ে জিরিয়ে নিয়ে আমার ঘ্যানঘ্যানানি শুরু হলো। লিফট ছাড়া হোটেলে আমি থাকবোনা। জামা মসজিদের সামনে থাকবো, আর জামা মসজিদের সামনের কোনো হোটেলেই লিফট নেই।

তাছাড়া হোটেলের রুম, বাথরুম বেশ ভালো। অগত্যা ঐ পর্বত ভাঙ্গা মেনে নিতেই হলো। সেদিন আর বাইরে গেলামনা। বারান্দায় বসে বসে জামা মসজিদের সৌন্দর্য্য আর মানুষের আনাগোনা দেখতে দেখতে অতিতের জাকজমক, চকের হট্টগোল কল্পনা করতে লাগলাম। বিকেলের চকে সোনালি আলোয় ভেসে যাচ্ছে।

ক্রেতা, বিক্রেতার চিৎকার হট্টগোলের মাঝে ঘোড়ার খুরের আওয়াজ। যমুনার চর থেকে টাটকা তাজা গোলাপ, জুঁই, চামেলি, বেলির গোড়ের মালা ও ফুলের তোড়া সাজিয়ে বসে আছে ফুলওয়ালিরা। সে ফুলের ঘ্রানও যেন আমার নাকে এলো। অন্ধকার ঘনিয়ে এলেও বারান্দায় বসে রইলাম। রাতে জ্বর আর গলা ব্যাথা কাশি শুরু হলো।

হোটেলের ডাক্তারের দেয়া ওষুধ খাওয়া শুরু হলো।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.