আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্যাটানিক ভার্সেস-শয়তানের ভাষ্য

আমি জানি আমি জানি না

শয়তানের ভাষ্য ।

সাটানিক ভার্সেস’ বললেই সাধারণভাবে সালমান রুশদীর বিতর্কিত বইটির কথা মনে আসবে। কিন্তু ইসলামের ইতিহাসে এইটি প্রফেট মুহাম্মাদের মুখ দিয়ে উচ্চারিত ‘শয়তানের বাক্য’ । বিখ্যাত মুসলিম ঐতিহাসিক তাবারি ঘটনাটির বর্ণনা দিয়েছেন এই ভাবে-

‘রসুলে করীম মক্কায় ইসলাম প্রচারের একসময় দেখলেন, তার নিজের লোকেরাই তার কাজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন । তিনি আল্লাহর কাছ থেকে যা এনেছেন তার প্রতি তাদের মনোভাব বিরূপ।

এসব দেখে শুনে খুব দুঃখ পেতেন তিনি । ভাবতেন এমন কোন ওহি যদি আল্লাহর কাছ থেকে পেতাম, যাতে তার নিজের লোকদের সাথে সম্পর্ক ভাল হয়ে যায়, তাহলে খুব ভাল হত । কাজেই এর উপর তিনি ধ্যান করতে বসলেন। তখন আল্লাহ এরশাদ করেন-‘অস্তগামী নক্ষত্রের শপথ, তোমাদের সঙ্গী বিপথগামীও নয় মনগড়া কথাও বলেনা । এখন থেকে তোমরা কি ভেবে দেখেছ লাত ও উজ্জা এবং তৃতীয় বস্তু মানাত সম্মন্ধে ?’ - আল্লাহর বাণী এই পর্যন্ত বলার পরই শয়তান চলে এল , যে মুহম্মদের এই ধ্যান ও স্বজনদের সঙ্গে আপোসের ব্যপারটা পছন্দ করছিল না ।

সে তখন কি করলো ,সেই বাক্যের পর তার নিজের বানানো কিছু কথা জুড়ে দিল -‘এরা হল মহান গারনিক [ বড় আকারের পাখি বিশেষ ] যার মধ্যস্থতা অনুমোদিত। ’ কুরায়েশরা এই কথা শুনে খুবই আহ্লাদিত হল। তাদের দেবদেবী প্রশংসিত হয়েছে জেনে তারা তার কথা শুনতে মনোযোগী হয়ে উঠলো । তারা মুসলমানদের সাথে সিজদাও দিল । তারা বলতে লাগলো-মুহাম্মদ আমাদের দেবতা সম্পর্কে যা সুন্দর কথা বলেছেন -‘দেবতারা হলেন গারনিক, যার মধ্যস্থতা অনুমোদিত’।


শয়তানের দেয়া শব্দগুলো পৌত্তলিকদের মুখে মুখে ফিরতে লাগলো ।

‘Have you thought on al-Lat and al-Uzza and al-Mannat, the third other? Those are swans exalted ; Their intercession is expected ;Their likes are no neglected.

আবিসিনিয়ায় রসুলের সাহাবাদের কানে গেল সে কথা । তারা শুনলো কুরায়েশরা সব মুসলমান হয়ে গেছে তখন জিবরাঈল এলেন,বললেন- ‘একি করলে তুমি মুহাম্মদ ? তুমি তাদের কাছে এমন কথা বলেছ, যা আমি আল্লাহর কাছ থেকে আনিনি , যা আল্লাহ কোন সময় বলেন নি ।
শুনে রসুলে করীম ভীষণ ব্যথিত হলেন ,আল্লাহর ভয়ে ভীত হলেন । তখন আল্লাহ একটি প্রত্যাদেশ পাঠালেন-‘আমি তোমার পুর্বে যে সব রসুল কিংবা নবী যখনই কিছু আবৃত্তি করেছে তখনই শয়তান আবৃত্তিতে কিছু প্রক্ষিপ্ত করেছে ।

কিন্তু শয়তান যা প্রক্ষিপ্ত করে, আল্লাহ তা বিদূরিত করেন । তারপর আল্লাহ তাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন । ২২:৫২

শয়তানের এই প্রক্ষেপ খারিজ করে যখন আল্লাহর নতুন ওহী এল,তখন কুরায়েশরা বললো- ‘মুহাম্মদ আগে যা বলেছিল আল্লাহর সাথে দেবদেবীর অবস্থান সম্পর্কে সে তা বদল করে অন্য কিছু নিয়ে এসেছে । ’ তারা আবার ক্ষুব্ধ হয়ে মারমুখো হয়ে উঠলো ।
‘শয়তানের বাক্যে’র এই ইতিহাস অবশ্য ধর্মীয়ভাবে স্বীকার করা হয় না ।

এবং কোরানে বর্তমানে এর কোন অস্থিত্বও নাই । তবু এটি ঐতিহাসিক সত্য বলে তাবারির ইতিহাস ও ইবনে ইসহাকের রসুলুল্লাহর জীবনীতে টিকে আছে । সুত্র: সিরাতে রসুলুল্লাহ –ইবনে ইসহাক ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।