আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সুবিচার সম্পর্কে চতুর্থ খলিফা হজরত আলীর (রা.) নির্দেশনা

যে সমাজে সুশাসন থাকে না, সেখানে সুবিচারের প্রত্যাশা মরীচিকার পেছনে ঘোরার শামিল। ইসলাম সুশাসন এবং সুবিচার প্রতিষ্ঠার তাগিদ দিয়েছে। সুবিচার ও সুশাসন একটি অপরটির পরিপূরক। খেলাফতের শাসনামলে এটির বাস্তব প্রতিফলন ঘটেছে। ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলী (রা.) মিসরের গভর্নর মালিক আশতারকে বিচারক নিয়োগ সম্পর্কে যে পরামর্শ দেন তাতে সুশাসন ও সুবিচার প্রতিষ্ঠায় ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটেছে।

গভর্নরকে লেখা হজরত আলী (রা.)-এর চিঠিতে প্রকাশ পায়, ন্যায়বিচার করা কেবল বিচার বিভাগের একার কর্তব্য নয়, বরং সরকারের অন্যান্য অঙ্গ অর্থাৎ প্রশাসনসহ সব বিভাগকে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত থাকার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। চিঠিতে হজরত আলী (রা.) লেখেন_'লোকদের মধ্যকার বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য এমন লোককে মনোনীত কর, যে ব্যক্তি তোমার দৃষ্টিতে তোমার অধীন লোকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্মানিত। (তার কাছে আগত) বিরোধীয় বিষয়গুলো যেন তাকে ক্ষিপ্ত না করে, বিরোধ যেন তাকে রাগান্বিত না করে, সে যেন কোনো ভুল বিষয়ের ওপর জেদ না করে, সত্যকে বুঝতে পারার পর তা গ্রহণের ক্ষেত্রে সে যেন পক্ষপাতিত্বের আশ্রয় না নেয়। সে যেন লোভের দিকে ঝুঁকে না পড়ে এবং কোনো বিষয়ের গভীরে না গিয়ে সে সম্পর্কে কেবল ভাসাভাসা ধারণা লাভ করেই যেন সন্তুষ্ট না থাকে। সন্দেহজনক বিষয়গুলো নিয়ে তাকে সবচেয়ে বেশি চিন্তাভাবনা করতে হবে।

যুক্তিতর্কের ব্যাপারে তাকে সর্বাধিক মনোযোগী হতে হবে। মামলার পক্ষদ্বয়ের ঝগড়ায় তাকে যথাসম্ভব কম বিরক্ত হতে হবে, তদন্তের ব্যাপারে সর্বাধিক ধৈর্যশীল হতে হবে এবং রায় ঘোষণার ক্ষেত্রে সর্বাধিক নির্ভয় হতে হবে। প্রশংসা যেন তাকে অহংকারী করে না তোলে এবং তাকে আনন্দিত করার কারণে সে যেন (কোনো পক্ষের দিকে) ঝুঁকে না পড়ে। ' ... ইসলাম প্রতিষ্ঠার আগে ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা দুর্বৃত্ত লোকদের হাতে বন্দী ছিল যখন ভাবাবেগের ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতো এবং পার্থিব সম্পদ কামনা করা হতো। ইসলাম সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থায় সুশাসন নিশ্চিত করার পাশাপাশি সুবিচার নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছে।

সুশাসন ও ন্যায়বিচার সভ্যতার মাপকাঠি হিসেবে বিবেচিত হয়। নিজেদের সভ্য সমাজের মানুষ হিসেবে পরিচয়দানে আমাদের সবারই উচিত এ ক্ষেত্রে অঙ্গীকারাবদ্ধ হওয়া।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.