আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নির্বাচন বন্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন বন্ধে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত হচ্ছে। এ জন্য দেশবাসীকে সজাগ থাকতে হবে। কেউ নির্বাচন বানচাল করতে এলে তাদের প্রতিহত করতেও ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চার দিন আগে ঢাকায় তার প্রথম নির্বাচনী জনসভায় বক্তৃতাকালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এসব কথা বলেন। গতকাল রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর আদর্শ স্কুল মাঠ (নির্বাচনী আসন ১৪, প্রার্থী কামাল আহমেদ মজুমদার), পল্লবী হারুন মোল্লাহ্ ঈদগাহ মাঠ (নির্বাচনী আসন ১৬, প্রার্থী ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ্) ও উত্তরা আজমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে (নির্বাচনী আসন ১৮, প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন) এসব জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।

জনসভাগুলোয় সভাপতিত্ব করেন স্ব স্ব আসনের প্রার্থীরা। ১৮ দলের ডাকা লাগাতার অবরোধ সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীর জনসভাগুলো লোকারণ্য হয়ে ওঠে।

শেখ হাসিনা বলেন, যারা ১/১১ সৃষ্টি করেছেন, কিংস পার্টি তৈরি করেছেন, তারা এখনো সক্রিয়। অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক সরকার এলে তাদের চাহিদা বাড়ে, তাই তারা নিজেদের বিশিষ্ট নাগরিক হিসেবে ঘোষণা দিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন। এদের ষড়যন্ত্র থেকে সবাই সতর্ক থাকুন।

ঘরে ঘরে গিয়ে সবাইকে নির্বাচনে আসার জন্য উদ্বুদ্ধ করুন। গণতন্ত্র সুসংহত করতে এবং ১/১১-এর মতো পরিস্থিতি এড়াতে দেশের জনগণকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারি এ নির্বাচন দেশের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমি আপনাদের কাছে এসেছি। নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সহায়তা করবেন।

আজমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী সভায় শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। আমি আপনাদের অনুরোধ করব, প্রত্যেকে ভোট কেন্দ্রে যাবেন। মনে করবেন না জিতেই তো গেছি, কেন্দ্রে গিয়ে কী হবে। এ জন্য ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার অনুরোধও জানান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। তিনি বলেন, যে কোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে সবাইকে ভোট দিতে হবে।

যে যেখানেই থাকেন, নিজে ভোট দিন অন্যকে ভোট কেন্দ্রে আনুন। আমাদের দেশের একটি দল আছে, যাদের গণতন্ত্র থাকলে ভালো লাগে না। অগণতান্ত্রিক কিছু এলে তাদের দাম বাড়ে। টক-শো করে এক দিনেই তারা সব উদ্ধার করবেন। তিনি বলেন, পুলিশ হত্যা, বিজিবি হত্যা, সেনা সদস্য হত্যাসহ মানুষ পুড়িয়ে মারার বিচারও বাংলার মাটিতে হবে।

এসব অপরাধে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া হত্যাকাণ্ডের হুকুমের আসামি হবেন। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নেত্রী হরতাল-অবরোধ ডেকে ঘরে বসে মুরগির স্যুপ খান, রোস্ট চিবান। বিএনপি নেতারাও আন্দোলনের মাঠে নামেন না। কিছু ভাড়া করা লোক গাড়ি পোড়ায়, মানুষ মারে। জনগণ সাড়া দেয় না বলে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারে।

নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে তিনি বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এবং চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিতে আগামীতে নৌকা মার্কায় ভোট দিন। অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনকে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। আগামীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে উত্তরায় সরকারি হাসপাতাল করারও ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা। বিরোধীদলীয় নেতার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতা বেগম খালেদা নির্বাচনে আসেননি কী কারণে? জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেছেন উচ্চ আদালত। জামায়াত নির্বাচন করতে পারবে না, তাই জামায়াতের দুঃখে কাতর হয়ে উনিও (খালেদা) নির্বাচন করবেন না! শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচারকাজ শুরু করেছি।

রায় বাস্তবায়নের কাজও শুরু করেছি। কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। এটা জনগণের চাওয়া ছিল। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষ যা চায় তা-ই করে। বিএনপি ও খালেদার কাজ মানুষ যা চায় তার উল্টো করা।

খালেদা ও বিএনপির আন্দোলন সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, উনার আন্দোলনে মানুষের সম্পৃক্ততা নেই। মানুষ হত্যা, পুড়িয়ে মানুষ মারা, বোমাবাজি ও বৃক্ষনিধন ছাড়া উনি কিছু বোঝেন না। খালেদা জিয়ার কাছে গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। উনি বোঝেন মানুষ খুন, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, বোমাবাজি।

পল্লবী হারুন মোল্লাহ্ ঈদগাহ মাঠে দ্বিতীয় নির্বাচনী জনসভায় বক্তৃতা করেন শেখ হাসিনা।

দলীয় প্রার্থী ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ্র এ আসনে ২৭ মিনিটের বক্তৃতায় শেখ হাসিনা বলেন, ৫ জানুয়ারি নির্বাচন। এ নির্বাচনে কেউ যদি বাধা দিতে আসে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। উপযুক্ত শিক্ষা দিতে হবে। সে যদি আমার দলের লোকও হয় তাকে ছাড় দেবেন না। তাই আপনারা ভোট দিতে যাবেন।

ওয়ান-ইলেভেনে জরুরি অবস্থার সরকারের অত্যাচার-নির্যাতনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের সরকার বাংলাদেশে আসুক তা চাই না। গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকুক তা আমরা চাই।

তিনটি জনসভায় আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থী ছাড়াও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, এম এ আজিজ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, এনামুল হক শামীম, এস এম কামাল হোসেন, আসলামুল হক আসলাম, আশরাফুন্নেসা মোশাররফ, নাজমা আখতার, মাহমুদ হাসান রিপন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটনসহ স্থানীয় নেতারা।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.