আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নির্বাচন কমিশন কিংবা মামাবাড়ী - হীরক রাজার দেশে নির্বাচন



নির্বাচন বিষয়ে পুনরায় সংশয় তৈরি হলো- বিভিন্ন দাবিতে আপোষহীন নেত্রী পুনরায় আপোষহীন হয়ে উঠবার হুমকি দিয়েছেন, ৭ দফা দাবি সংশোধিত হয়ে ৪ দফায় রুপান্তরিত হয়েছে এবং ২ দিনের সময়সীমা ধার্য করে দেওয়া হয়েছে, এরপরে সর্বাত্মক আন্দোলন শুরু হবে। বিএনপির কর্মীরা হয়তো তেমন সক্রিয় আন্দোলন করতে পারবে না এই মুহূর্তে তবে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ও অঙ্গ সংগঠনগুলোকে মাথায় তুলে রাখা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিপাকে পড়েছে, কারণ গত ২ বছরে সক্রিয় রাজনৈতিক আন্দোলন যতগুলো হয়েছে, বেশীর ভাগই ধর্মীয় অনুভুতিকে কেন্দ্র করে এবং সেখানে জামায়াতের কর্মীরা সক্রিয় ছিলো। যদিও জামায়াত নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য রাজী তবে এখন তারা বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচনে যেতে আগ্রহী নয়। মুজাহিদির সাথে একান্ত বৈঠকের পরে জামায়াতের অবস্থান বদলেছে। বিএনপি হুমকি দিয়েছে যদি তাদের ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তবে নবগঠিত সরকার হয়তো ৩০ দিন নির্বিঘ্নে থাকতে পারবে, এরপরে পুনরায় পুরোনো সংস্কৃতির চর্চা হবে।

বিগত ২ বছরে যেটা অনুপস্থিত ছিলো, সেই সংঘাতের রাজনীতিই শুরু হবে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে যেতে আগ্রহী এবং তারা নির্বাচনের তারিখ পেছানোর বিরোধী। তারা ১৮ই ডিসেম্বর নির্বাচন চায়, সুশীল সমাজও চায় ১৮ই ডিসেম্বর নির্বাচন হোক। তারা যথাসময়েই নির্বাচন চায় এবং নির্বাচিত সরকার চায়। আজকের বৈঠক কোনো রকম সিদ্ধান্ত ছাড়াই সমাপ্ত হয়েছে, যদিও সরকার কয়েক দিনের জন্য নির্বাচন পেছানোতে আগ্রহী তবে সেটা পিছিয়ে আগামী বছর নিয়ে যাওয়ার কোনো আগ্রহ তাদের নেই।

একটু পরেই শেখ হাসিনার সাথে আলোচনার জন্য উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা যাবে সুধাসদনে। সেখানের সংলাপের ফলাফলও অনেকটা আঁচ করা যায়- শেখ হাসিনা এই দাবিকে অগ্রাহ্য করে বলবেন আমরা চাই ১৮ই ডিসেম্বর নির্বাচন হোক। নির্বাচন পেছানো হলে সর্বাত্মক আন্দোলনে যাবো আমরা। সুতরাং নির্বাচন বিষয়টাই আপাতত হুমিকর মুখোমুখি। বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের যৌথ দাবি- উপজেলা নির্বাচন পেছাতে হবে, জরুরী অবস্থা উঠিয়ে নিতে হবে।

নির্বাচন বিধিমালায় সংশোধন আনতে হবে। যদিও উপজেলা নির্বাচনের বিষয়টা নিয়ে আপত্তির কারণ আমি বুঝি না, জরুরী অবস্থা যে ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে সেটাও গ্রহনযোগ্য নয়, তবে হঠাৎ করেই জরুরী অবস্থা তুলে দিলে সেটা মোটেও লাভজনক কোনো বিকল্প হবে না। আপাতত সব কিছুই অনিশ্চিত বাংলাদেশে। বিএনপির দাবি অনুসারে হজ্জ করতে যাওয়া মানুষেরা দেশে ফিরে নির্বাচনে অংশগ্রহন করলে তারা নির্বাচনে যাবে। বাংলাদেশ থেকে কতজন হাজী গিয়েছে সৈদি আরব? ২ লক্ষ- ৩ লক্ষ- ৪ লক্ষ? তারা দেশে ফেরত আসবে ১২ই জানুয়ারী, এর আগে নির্বাচন হলে বিএনপি প্রতিহত করবে।

বিষয়টা হাস্যকর হয়ে গেলো। যদি বিএনপি সকল ভোটারের উপস্থিতি চায়- সেটা বোধ হয় কোনোদিনই সম্ভব হবে না। এমন কি যদি ৪ মাস পরেও নির্বাচন হয় তবে তখনও অন্তত ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ মানুষ ভোট প্রদান করা থেকে বিরত থাকবে। এমন কি বাংলাদেশের প্রায় ৯ কোটি ভোটারের ভেতরে ৫ থেকে ৬ লক্ষ ভোটার আগ্রহী হলেও অসুস্থতার কারণেই ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হতে পারবে না , এমন ভাবেই প্রায় ১০ লক্ষ প্রবাসী ভোটার ভোট দিতে পারবে না। বিএনপি হজ্জ যাত্রীদের নিয়ে এমন কুৎসিত রাজনীতি শুরু করবার পরে প্রবাসী ভোটারদের দেশে এনে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক এই দাবিতে নির্বাচন পেছানোর আব্দার করতে পারে- আদতে কোনঠাসা সরকারের কাছে কতটুকু আব্দার করা যুক্তি সংগত উজবুক দেলোয়ার এবং নির্বোধ আপোষহীন বিএনপিনেত্রি বোধ হয় ভুলে গিয়েছেন।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.