আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রাচীন মিশরের পিরামিড তৈরির ভিন্নধর্মী কেচ্ছা কাহিনী-১

...

গত বছর সৌভাগ্যক্রমে মাদায়েন সালেহ নাজরান ভ্রমণ করেছিলাম। মাদায়েন সালেহ আল্লাহ কর্তৃক ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি শহর যেখানে হযরত সালেহ (আঃ) ও সামূদ জাতি বসবাস করত। সেই ধ্বংসপ্রাপ্ত শহরের চিহ্ন এখনো বর্তমান। অন্যদিকে ধারনা করা হয় সৌদি আরব, ওমান, আরব আমিরাত ও ইয়েমেনের বিস্তীর্ণ (অনেকেই এখন ভাবছেন জায়গাটা মিশর) এলাকা জুড়ে হযরত হূদ (আঃ) ও আদ জাতির আবাসস্থল ছিল। বর্তমান নাজরানের কিছু অংশ তার মধ্যে পড়েছে।

আদ জাতিও আল্লাহ কর্তৃক ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আদ জাতি ছিল সামূদ জাতির পূর্বপুরুষ।

বর্তমানে সৌদি আরবে থাকার কারনে এই এলাকা, ইসলাম, ইসলাম পূর্ব ও তার সাথে রিলেটেড ইতিহাস নিয়ে আমার সীমাহীন আগ্রহ তৈরি হয়েছে। ফলে আদ জাতি ও সামূদ জাতিকে নিয়ে লিখতে গিয়ে আমাকে অনেক পড়াশোনা করতে হয়েছিল। এমনিভাবেই একদিন পিরামিড নিয়ে কিছু চমকপ্রদ তথ্য পেয়ে যাই।

অনেকেই এটা নিয়ে অল্প বিস্তর লেখালিখি করেছেন। কিন্তু আমার জানামতে এই হাইপোথিসিস খুব একটা প্রচারিত হয়নি।

আমি জানি যদি প্রশ্ন করা হয় – কে এবং কিভাবে পিরামিড তৈরি করেছিল? অনেকেই বলবে ভিনগ্রহবাসীরা এটা তৈরি করেছিল অথবা হাজার হাজার মিশরীয় দাস বছরের পর বছর টন টন পাথর কেটে এনে পিরামিডগুলো বানিয়েছিল।

ভিনগ্রহবাসীরা পিরামিড তৈরি করেছিল এর তেমন শক্ত প্রমান নেই। কিন্তু বর্তমানকালের বিজ্ঞানীরা ধারনা করেন হাজার হাজার মানুষ মিলে বছরের পর বছর এত কষ্ট সহ্য করে পিরামিডগুলো বানিয়েছিল।

ইন্টারনেটে সার্চ দিলে অনেক ডকুমুভি পাওয়া যাবে।

কিন্তু বিজনেসের একজন ছাত্র হিসাবে আমি কেন জানি এই তত্ত্বের সাথে একমত হতে পারিনি। প্রতিটি দেশের সম্পদ সীমিত। কোন কারনে যদি দেশের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়, সে দেশের কি হবে? ধরি, আমরা আমাদের দেশে ১০ টি বুর্জ খলিফা বানাতে চাই। আমরা সবাই বর্তমান কালের প্রযুক্তি নিয়ে ঝাপিয়ে পরলাম।

এর প্রভাব কি হবে? সহজেই অনুমেয়- আমাদের সীমিত সম্পদ শেষ হয়ে যাবে, নতুন উৎপাদন মুখ থুবরে পড়বে, সাথে সাথে দেশের পুরো অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে।

প্রাচীনকালে হাজার হাজার মিশরীয় দাস বছরের পর বছর এমন একটা অনুৎপাদনশীল কাজে নিয়োজিত ছিল ভাবতে কষ্ট হয়। যদি তা হয়েই থাকে তাহলে তাদেরকে অর্থনীতির কিছু মৌলিক প্রশ্নের উত্তর দিতেই হবে। আমি আর সে বিতর্কে যাচ্ছি না।

আদ ও সামূদ জাতিকে নিয়ে যখন লিখতে গেলাম, কোরআন থেকে অনেক রেফারেন্স আমি নিয়েছি।

হঠাৎ একটি জিনিষ আমার মাথায় ঘুরপাক খায়। কোরআনে এত কিছু লেখা আছে, পিরামিডের কি কোন বর্ণনা আছে? ইন্টারনেটে একটু খুঁজতেই পিরামিড তৈরির এক ব্যাতিক্রমী তত্ত্ব চোখের সামনে হাজির হলো। কিছু কিছু ধর্মীয় স্কলারের মতে আদ জাতিরই একটি গোত্র পিরামিড বানিয়েছিল।

ইতিহাস থেকে আমরা আরও জানতে পারি আ’দ জাতিতে ১০০০ এর মত গোত্র ছিল। প্রতিটি গোত্রে হাজারের উপর লোকসংখ্যা ছিল।

এই গোত্রগুলো আরবের বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। সাদ্দাদের সময় এই গোত্রগুলির কেউ কেউ ইরাক, সিরিয়া ও মিশরে বসতি স্থাপন করে।

স্মৃতি স্তম্ভঃ
আ’দ জাতি ছিল হযরত নুহ (আঃ) এর বংশধর, পাশাপাশি সামূদ জাতির পূর্বপুরুষ। তারা ছিল দীর্ঘদেহী ও অনেক শক্তিশালী। পবিত্র কোরআনের সুরা শুআ’রা (২৬:১২৮-১২৯) মাধ্যমে আমরা জানতে পারি আ’দ জাতি দম্ভ বশত উঁচু স্থানগুলোতে স্মৃতি স্তম্ভ ও প্রাসাদ নির্মাণ করেছিল।



“তোমরা কি প্রতিটি উচ্চ স্থানে স্মৃতি স্তম্ভ নির্মান করেছ নিরর্থক? আর তোমরা প্রাসাদ নির্মান করেছ এই মনে করে যে, তোমরা চিরস্থায়ী হবে। ” সুরা শুআ’রা (২৬:১২৮-১২৯)
তুমি কি দেখো নি তোমার প্রতিপালক কি করেছিলেন আ'দ জাতির সাথে। ইরাম গোত্রের প্রতি যারা সুউচ্চ স্তম্ভের অধিকারী ছিল? যার সমতুল্য অন্য কোন নগরে সৃষ্টি করা হয়নি, এবং সামূদের সাথে? যারা উপত্যকার পাথর কেটে গৃহ নির্মাণ করেছিল? (সুরা ফাজরঃ ৬-৯)

গিজা’র পিরামিডের ভেতরে কোনপ্রকার মমি বা শবাধার পাওয়া যায়নি। রাজা/রানিদের মমিগুলো পাওয়া গেছে কিংস ভ্যালিতে।

এই স্মৃতি স্তম্ভই কি তবে পিরামিড ছিল? অথবা পিরামিডগুলো স্মৃতি স্তম্ভ ছিল?



মিশরীয় দাসেরা পিরামিড তৈরি করেনিঃ
ফেরাউনের সময়ে হাজার হাজার ইহুদী মিশরে দাস হিসাবে ছিল।

তারা ছিল অত্যাচারিত। এতদিন অনেকেই ভাবতেন এই দাসদের দিয়েই পিরামিড তৈরি করা হয়েছিল।

কিন্তু বিভিন্নভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে দাসরা পিরামিড তৈরি করেনি বরং মজুরিভুক্ত শ্রমিকরা পিরামিড তৈরি করেছিল। মজুরিভুক্ত শ্রমিকরা স্ব স্ব কাজে দক্ষ ছিল। তৎকালিন দাসরা কৃষি ও গৃহস্থালি কাজ করত।



Click This Link

তাহলে কারা পিরামিড বানিয়েছিল?

কিভাবে পিরামিড বানানো হয়েছিল তার ম্যুরাল চিত্র পাওয়া যায় TOMB OF REKHMIRE এ।



এই ছবিতে দেখতে পাচ্ছি পিরামিডের ব্লক তৈরির কাজ চলছে। একজন মাত্র মানুষ দুটি ব্লক কাঁধে তুলে নিয়েছে। মনে রাখতে হবে পিরামিডের প্রতিটি ব্লকের ওজন ২-৭০ টনের মাঝে। তাহলে কিভাবে সম্ভব? তাহলে কি সত্যিই আ’দ জাতি বা জায়ান্টদের অস্তিত্ব ছিল যা বর্তমান বিজ্ঞান স্বীকার করেনা?


কত সহজেই একটি পিলার তুলে নিচ্ছে।

নীচে একজন খর্বাকৃতির লোক দেখা যাচ্ছে। সে কি আমাদের মতো সাধারণ আকৃতির একজন মানুষ যাকে আমরা দাস নামে জানি?


মাত্র ৭ জন লোক হাজার টন ওজনের ওবলিস্ক উঠিয়ে ফেলল?







কি মনে হচ্ছে? আসলেই কি সাধারণ মানুষের পক্ষে ১৪৫ মিটার উচ্চতায় কয়েক টন ওজনের পাথর উঠানো সম্ভব ছিল? নাকি জায়ান্টদের কাজ?

The ancient writer, Strabo, said of the Great Pyramid, "It seemed like a building let down from heaven, untouched by human hands."

পাথরঃ
গিজার গ্রেট পিরামিড তৈরিতে প্রায় আড়াই মিলিয়ন পাথরের ব্লক ব্যবহার করা হয়েছে যার একেকটির ওজন ২-৭০ টন। ১৩ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত পিরামিডটির ভলিউম ৯০,০০০,০০০ কিউবিক ফিট।

কেন এত বড় পাথর ব্যবহার করা হল? নাকি আ’দ জাতির লোকদের কাছে পাথরগুলো স্বাভাবিক আকৃতির ছিল?

চায়নার গ্রেট ওয়ালের পাথরের সাইজ সেখানকার লোকদের সাধ্যের মাঝেই ছিল। আমরা কি বর্তমানের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি পিরামিড বানাতে পারব?



পাথর


কাজ করার বেসিন

James Ferguson, in his great work, the History of Architecture, describes the Great Pyramid as "the most perfect and gigantic specimen of masonry that the world has yet seen. No one can possibly examine the interior of the Great Pyramid without being struck with astonishment at the wonderful mechanical skill displayed in its construction."

Professor Greaves, astronomer, in his book, Pyramidographia says "The structure of it has been the labour of an exquisite hand."

(চলবে)



সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।