আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রাচীন মিথ ( Mythology )

প্রাচীন পার্সিয়ানরা Zoroastrianism ধর্মে বিশ্বাসী ছিল। তারা বিশ্বাস করত মানুষ মারা গেলে তাদের আত্মা একটি ব্রিজ পার হয়ে একজন তরুণীর দেখা পাবে যে মৃতদের পাপ পুন্যের বিচার করবে। যদি মৃত ব্যক্তি পৃথিবীতে ভাল কাজ করে আসে তাহলে তরুণীকে দেখবে সুন্দর আর খারাপ কাজ করলে কদাকার রুপে। খারাপ কাজ করা লোকদের পাঠান হবে The House of Lies নামক নরকে। যেটা পরিপূর্ণ মানুষ সহ অন্যান্য পশুপাখির বিষ্ঠায়,ঘুটঘুটে অন্ধকারে গাদাগাদি করে থাকতে হবে অনন্তকাল আর খেতে হবে ঐসকল পচা বিষ্ঠা।

গ্রীকরা বিশ্বাস করত দেবতারা মানুষের জীবনকে সবদিক থেকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তারাই কাউকে করেছে সম্ভ্রান্তবংশীয় ও ধনী, আবার কাউকে নি:স্ব, গরীব বা অন্যের ক্রীতদাস করে। দেব নির্ধারিত এই নির্দিষ্ট নিয়মের বিরুদ্ধে যে রুখে দাঁড়ায়, তাকে দেবতাদের কোপানলে পড়ে অশেষ সাজা ভোগ করতে হয়। গ্রীক পৌরাণিক কাহিনীগুলো রচিত হয়েছে মূলত প্রাচীন গ্রীসে প্রচলিত কিছু গল্প থেকে। এই গল্প বা পুরাণকথা গুলো ছিল সেদেশের দেবদেবী ও বীর যোদ্ধাদের কাহিনীসম্বলিত।

এই গ্রীক পুরাণ থেকে গ্রিকদের নিজেস্ব সংস্কৃতি, রীতিনীতি, প্রথা ইত্যাদি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। তাছাড়া গ্রীক পৌরাণিক কাহিনী গুলো গ্রিকদের ধর্মীয় সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ । গ্রীক মিথোলজির দুই চরিত্র ইকো (echo) এবং নারসিসাস। প্রাচীন মিথ, জ্যোতিষশাস্ত্র কিংবা প্রাচীন বুদ্ধিমান সভ্যতার ওপর যাদের আস্থা চরম তাদের প্রথম পছন্দ মায়া সভ্যতা। এই সভ্যতার আরও অনেক নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে এর কয়েক হাজার বছর ধরে চলা বর্ষপঞ্জি।

প্রাচীন মিশরে এমন একটি ধারণা প্রচলিত ছিল যে-সূর্যদেব রা মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। উদিত সূর্য ছিল সেই সৃষ্টির প্রতীক। প্রাত্যহিক সূর্যের আবর্তন যেন নবজন্মের কথাই মনে করিয়ে দেয়। যে কারণে রা-কে মনে করা হত জীবনের উৎস এবং পরম শক্তির আধার। রা-এর একজন ঘনিষ্ট সহযোগী ছিলেন ন্যায়বিচারের দেবী মাত ।

মাত ছিলেন শৃঙ্খলা ও সত্যের প্রতীক। গ্রীক দেবী আগ্লিয়া (Aglaea)মানে হচ্ছে মহিমা;কিংবা সোফিয়া(Sophia) দেবীর আক্ষরিক মানে হল জ্ঞান। আবার ঈজিপশিয়ান ধর্মে দেখা যায় ‘মাত’-এর মতো দেবী যার মানে হল ন্যায় বা সত্য। প্রাচীন পারস্যের মহান সম্রাট প্রথম দারিয়ুস। ইতিহাসপ্রসিদ্ধ এই সম্রাট তার বিজয় অভিযান ও প্রশাসন সংস্কারক হিসেবে প্রাচীন পারস্যে খ্যাতিমান ছিলেন।

শক্ত হাতে বিদ্রোহ দমন করেন সাম্রাজ্যের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনেন। সম্রাট দারিয়ুস ৫১২-৪৮৬ খ্রিস্টপূর্ব মধ্যে শাসন করেন। প্রাচীন গ্রীক অনুসারে এরিবাস অর্থ গভীর অন্ধকার বা ছায়া। এরিবাস ছিলেন রাতের অন্ধকারের দেবতা এবং রাতের দেবী নিক্স এর স্বামী, যিনি তার অন্ধকারময় কুয়াশা দিয়ে ঢেকে দিতেন বিশ্বের প্রতিটি প্রান্ত। তার স্ত্রী নিক্স এই কুয়াশা সমগ্র আকাশ জুড়ে ছড়িয়ে দিতেন, এতেই পৃথিবীতে নেমে আসতো রাত।

আর তাদের মেয়ে হেমেরা সেই অন্ধকার ভেদ করে ছড়িয়ে দিতেন দিনের আলো আর পৃথিবী হয়ে উঠতো আলোকিত। হারকিউলিসের বীরত্বগাঁথা নিয়ে রচিত পূরাণের সারসংক্ষেপ- বিরাটাকার এক সিংহ মানুষ, পশু সকলের উপরই আক্রমণ করত। এই সিংহের চামড়া এত পুরু ও শক্ত ছিল যে ব্রেঞ্জের তৈরী তীরও তার গায়ে না লেগে ছিঁটকে যেত। হারকিউলিস তখন ওক গাছ কেটে বিশাল এক লগুড় তৈরী করল। এই লগুড় এত ভারী ছিল যে, বিশজন লোকেও তা ওঠাতে পারত না।

আর এই লগুড় নিয়ে হারকিউলিস দু:সাহসিকভাবে সিংহের গুহায় প্রবেশ করল। সিংহ তার উপর ঝাপিয়ে পড়লে সে লগুড় দিয়ে তাকে আঘাত করে, তারপর দু‘হাতে গলা টিপে ধরে সেটিকে হত্যা করে। পরবর্তীতে হারকিউলিস ঐ সিংহের চামড়া দিয়ে নিজের জন্যে বর্ম ও শিরস্ত্রাণ তৈরী করে নিয়েছিল। এশিয়া মাইনরের সমুদ্রোপকূলীয় উঁচু এক টিলার উপরে ট্রয় নগরী অবস্থিত ছিল। খ্রী:পূ: ১২০০ সালের কোন একসময়ে গ্রীকরা এই ট্রয়ে অভিযান করে।

এই অভিযানে গ্রীকের বিভিন্ন উপজাতি স্ব-স্ব রাজ্যাধিপতির অধীনে অংশগ্রহণ করে। এইসব দলপতিদের অধীনস্ত সেনাদলে সাধারণ যোদ্ধারা ছিল পদাতিক; যাদের পরিধানে ছিল ক্যম্বিসের তৈরী বর্ম আর হাতিয়ার ছিল শুধু পাথর ও বর্শা। দলপতিদের ছিল অশ্ববাহিত যুদ্ধরথ। তাদের পরিধেয় ছিল তাম্র নির্মিত বর্ম আর অস্ত্র হিসেবে তাদের ছিল বর্শা ও ব্রোঞ্জের তৈরী তরবারী। গ্রীক সভ্যতা ও সংস্কৃতি অবিচ্ছেদ্যভাবে নগররাষ্ট্রের সঙ্গে জড়িত।

এই সভ্যতা বিকাশ লাভ করে প্রথমে ইজিয়ান দ্বীপপুঞ্জে, এশিয়া মাইনরের ইজিয়ান উপকূলবর্তী শহরগুলোতে, এথেন্সে, তারপর সিসিলি, দক্ষিণ ইতালির গ্রিক উপনিবেশগুলোতে গ্রিকদের ধর্ম বিশ্বাস ছিল প্রবল। তাদের দেব-দেবীর সংখ্যাও ছিল অনেক। তাদের বিশ্বাস ছিল, এসব দেব-দেবী তাদের ভাগ্যের নিয়ন্তা। গ্রীক সভ্যতার শ্রেষ্ঠ কাল হচ্ছে খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চাশ শতক থেকে শুরু করে কয়েক দশক পর্যন্ত স্থায়ী এথেন্সে পেরিক্লিসের শাসনামল। এই সময় বিজ্ঞান, সাহিত্য, শিল্পকলা দর্শন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চরম সাফল্য অর্জিত হয়।

এথেন্স হয়ে ওঠে এই সভ্যতার পীঠস্থান। বিশ্ব সভ্যতার ক্ষেত্রে রঙমঞ্চ বা থিয়েটার প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক অবদান গ্রীকদেরই, ইতিহাস শাস্ত্রের সূচনা হয় প্রাচীন গ্রীস থেকেই। ষষ্ঠ শতাব্দীতে গ্রীক দর্শনের আনুষ্ঠানিক সূত্রপাত করেন আলেস। গণিত শাস্ত্রের সূচনা করে পিথাগোরাস অমর হয়ে আছেন। হিপোক্রেটিস চিকিৎসা শাস্ত্রকে কুসংস্কার মুক্ত করে বৈজ্ঞানিক ভিত্তির উপর দাঁড় করান পুরাণ, পুরাকাহিনী, অতিকথা, উপকথা, উপাখ্যান, কিংবদন্তি।

মিথ হল সমাজের বাস্তবিক ব্যবস্থারই উপজাত কাল্পনিক জগৎ। সুতরাং বাস্তবিক অবস্থা পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই কেবলমাত্র আমরা মুক্ত হতে পারি মিথের রাজ্য থেকে। নিখাদ সুন্দরের কল্পনা আমাদের কাম্য;বিকৃত কল্পনা নয়। আমরা ‘মিথ’ শব্দটিকেই ব্যবহারের পক্ষপাতী। মিথকে দার্শনিকেরা বলেন রূপক বা প্রতীকাশ্রিত কাহিনী।

সাম্প্রতিক সাহিত্য ও সাহিত্য সমালোচনায় মিথ কোনও ধারণা-আশ্রিত বিষয়বস্তু বা দৃষ্টান্তরূপী চরিত্র। যেমন - রবীন্দ্রনাথের ‘জীবনদেবতা’, শরৎচন্দ্রের ‘দেবদাস’, জীবনানন্দের ‘রূপসী বাংলা’ প্রভৃতি। “ The poem is a little myth of man’s capacity of making life meaningful. And in the end, the poem is not a thing we see, it is a light by which we may see an what we see is life.” গ্রীক পৌরাণিক কাহিনী গুলোর প্রাচীনতম সূত্র হচ্ছে দুটি মহাকাব্য, যেগুলো রচনা করে ছিলেন হোমার নামক এক গ্রীক কবি। এই মহা কাব্য দুটির নাম হলো ইলিয়াড ও ওডিসি । ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।