আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নির্বাচন ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান জনগোষ্ঠীর উপরে হামলা বাঙালী জাতির লজ্জা এই মানবতার দুষমনদের ফায়ারিং স্কোয়াড এ দিন।

বাংলা আমার দেশ

যতবারই বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, ততবারই বাংলাদেশের বাংলাদেশের নিরীহ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠির উপরে নেমে আসে ভয়াবহ নির্যাতনের কালো থাবা। সাতক্ষীরা, দিনাজপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরিশাল, যশোর সহ বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ, মানুষ হত্যাসহ শিশু ও মহিলা নির্যাতনের মতো পৈশাচিক ঘটনা ঘটে থাকে।

এই বাংলাদেশ একসময় ধর্ম বর্ণ সকল জাতিসত্ত্বার এক মহামিলনের স্বর্গভূমি ছিল। ঈদ, পূজা, বড়দিন সহ বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাঙালি বিভিন্ন বাড়ীতে গিয়ে আনন্দ উদযাপন করতো। যা সমগ্র দুনিয়াতে আর দেখা যেতো না।

বাঙালী সংস্কৃতির সেই মহান ঐতিহ্য আজ মুখ থুবড়ে পড়েছে।

সামান্য তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করেও সংখ্যালঘুদের বাড়ীতে মন্দিরে প্যাগোডাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হচ্ছে এমনতো হবার কথা নয়। এই সংখ্যালঘু হামলা, অত্যাচার নির্যাতন বন্ধে সরকার, সামাজিক শক্তি ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব কতটুকু করছে আর কি করছে? তারা কি আজ মুখে আঙ্গুল দিয়ে চুষছে? বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, শিশু, নর-নারীর আহাজারী, কান্না-বেদনার দৃশ্য দেখে তৃপ্ত হচ্ছে? সারা দুনিয়াতে বাংলাদেশ এক সময় সর্ব ধর্ম সর্ব জাতী বর্ণের স্বর্গভূমি বলে পরিচিত ছিলো কিন্তু আজ ভিনদেশী ষড়যন্ত্র ও পাঁচার করা বুদ্ধির খেলাতে সেই ঐতিহ্য হারানোর পথে।

১৯৭১ এ আমরা দেখেছি, পাকিস্তানী সৈন্যরা রাজাকার, আলবদর, আলসামস, জঙ্গি গোষ্ঠী, দিনে রাতে কি গভীর রাতে নিরীহ সংখ্যালঘু সহ সাধারণ জনগণের ঘরবাড়ীতে কিভাবে ্আগুন দিতো, মানুষ মারতো, লুঠপাঠ করতো, ইজ্জত লুন্ঠন করতো। আজ একই কায়দায় একই স্টাইলে একই অমানবিক পৈশাচিক ইয়াজিদ আদর্শের কিছু মানুষ মানবতা ধ্বংস করে চলেছে।



ভোট কি জোর করে নেয়া যায় বা দিতে বাধা দেয়া যায়? যদি মানুষের অন্ত জয় করা না যায়। এই নরপশুরা অন্তর জয় করতে ব্যর্থ হয়ে উন্মাদ হয়ে নিরীহ নরনারী শিশুদের উপর ঝাপিয়ে পড়েছে। এই পাকিস্তানী স্টাইল বর্বরতা আর এক মুহুর্তও মেনে নেয়া যায় না। সরকারের কাছে প্রশ্ন কেন এই নর পশুদের ও হায়েনাদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না? কেন তাদের ক্রসফায়ারে দিচ্ছেন না? কেন ফাঁসী দেয়ার আইন প্রণয়ন করছেন না??

একটি বিষয় আলোচনা না করলেই নয়, নির্বাচনের পরদিন দোহারের নবাবগঞ্জে সাবেক মন্ত্রী মান্নান খান ও তার আপন ভাইয়ের নেতৃত্বে যেভাবে মানুষ হত্যা হলো, বাড়ীঘর লুট হলো, তাও কি কম অনাচার অত্যাচার নির্যাতন। সংখ্যালঘুদের উপরে হামলা আর দুর্নীতি কলঙ্ক মাথায় নিয়ে পরাজিত হয়ে প্রতিশোধের হামলা ও একই দোষে দোষী।

তাই এই মান্নানকেও গ্রেফতার করতে হবে অবিলম্বে। এই মান্নান এক সময়ে ছাত্র ইউনিয়নের নেতা ছিলেন। এই বামপন্থীদের অধপতন ও পদস্থফলন দেখে লোকে বলে বামপন্থী ও উগ্রধর্মীয় পন্থীদের অধপতন হলে কাঠাল পঁচার মতো হয় এবং যা খাবার অনুপযুক্ত।

যেসব দেশ ঘৃণ্য ও পরিত্যজ্য ধর্ম বর্ণের ভেদাভেদ তুলেছে ওরাই আজ মাথা উচু করে দাড়িয়েছে। আমাদের প্রতিবেশি ভারতে একসময়ে এই ভয়াবহ নৈরাজ্য দাঙ্গা হাঙ্গামাতে ভরপুর ছিল।

ভারতে প্রায় ২৮-৩০ টি রাজ্য, ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি ঐতিহ্য ভাষা এখানে তাই বিভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দাদের মধ্যে চিন্তার কিছু ফারাক থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু আজ ভারতে এসব দুর হয়েছে। কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে জাতী উপজাতীয় হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রীষ্টান শিখ সালে দেশকে ভালবেসে বিশ্ব নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার প্রতিযোগীতায় ব্যস্ত। তাইতো, ভারত আজ পরাশক্তি।

আর পাকিস্থানে উল্টাচিত্র।

ক্ষতবিক্ষত, উগ্র জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় উন্মাদনা আজ আর্ন্তজাতিক শক্তির লীলাভুমিতে পরিণত হয়েছে। যেখানে হিংসা আর হানাহানি বিদ্যমান। তাই পাকিস্তান আজ বিশ্ব মানচিত্রের এক পশ্চাদভূমি হিসেবে পরিচিত। এক সময় আমরা পাকিস্তানী শাসকদের প্রায় এক নব্য উপনিবেশ ছিলাম। এ কারণেই, এখনো বাংলাদেশের সামান্য একশ্রেণীর মানুষের মস্তিস্কে পেয়ারা পাকিস্তানী ভুত চেপে আছে।

এরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সম্পর্কেও কটুক্তি করতে পিছ পা হয় না। এদের অনেকেই বলে থাকেন মুক্তিযোদ্ধারা ৭১ এ মুক্তিযোদ্ধ করে নাই! এত বড় দৃষ্টতা তারা এখনো দেখিয়ে থাকে। আর এর জন্যে অনেকাংশে দায়ী আমাদের রাজনীতিবিদরা। মুক্তিযুদ্ধের দাবীদার অনেক নেতা নেত্রী ও সংগঠনের দুর্বলতার ও ভুল সিদ্ধান্তের কারণে এই ধরণের লোকেরা ক্রমশই তাদের অবস্থান শক্তিশালী করে চলেছে এবং স্বাধীনতার জন্যে হুমকি স্বরূপ দাড়িয়েছে। এখনি সময় আমাদের সকলকে সব ভেদাভেদ ভুলে দেশ ধ্বংসের এই অপসংস্কৃতিকে অপসারণে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পথ চলতে হবে।

এই সোনার বাংলাদেশকে শান্তির পথে উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে হবে। কেবল মাত্র তরুণ প্রজন্মই পারে সব ভেদাভেদ ভুলে দেশকে এগিয়ে নিতে।

এই একই ধারায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই দুই শ্রেণীর সুবিধাবাদী ও অতি জেহাদী মনোভাবে নেতা ও কমীর কুআগমন ও কুবিচরণ বাংলাদেশের শান্তির পরিবেশকে ধ্বংস করে চলেছে। পবিত্র অঙ্গনকে কলুষিত করেছে। এদের প্রতিরোধ প্রতিহত করতে হবে কঠিন আইনের মাধ্যমে।



আর সংখ্যালঘু বলে যারা নিজেদের ভেবে থাকে তারা তো ৯৫% বাঙালীর অংশ, ঐতিহ্য। ধর্মীয় উন্মাদনা ও অধর্মেল পাকিস্থানের বিরুদ্ধে যারা স্বাধীন অর্জন করেছিলো তারা তো মুক্তিযোদ্ধের গর্বিত জাতীয়, মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তারা কেন প্রতিরোধ করতে পারবে না? দাঁত ভাঙা জবাব দিতে পারবে না?

জনগণ তো তাদের সাথে আছে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে। নারী পুরুষ, যুব যুবতী, চাষা, জেলে, কামার, কুমার, ব্যবসায়ী, শ্রমিক সবাই প্রতিরোধের আদর্শের নাঙা তলোয়ার হাতে অপশক্তিকে ধ্বংস করবে। পালিয়ে নয়, ভীত সন্ত্রস্ত্র হয়ে নয়, নব শক্তিতে নব যৌবনে শাণিত হয়ে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.