আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'বাংলাদেশ রেলওয়ে' -লাইনে উঠবে কবে?



হরতাল, অবরোধ এবং সডক পথে মাত্রাতিরিক্ত জ্যামের কারবে বর্তমানে অনেকেই রেল এর সাথে মোটামুটি পরিচিত। আমিও মাঝে মাঝে যাতায়াতের সুবিধার্থে ইদানিং রেল যোগাযোগকেই প্রধান্য দিচ্ছি। কিন্তু একটা জিনিস কিছুতেই বুঝতে পারিনা এতো মানুষ রেল এ যাতায়াত করে তারপরও রেল ব্যবস্থা আধুনিক হয়না কেন? কয়েকবার যাতায়াতের পরে এর কয়েকটা কারন খুজে পেয়েছি। দেশের সবকিছুই আধুনিক হয়েছে কিন্তু রেল এর ব্যবস্থাপনা এখনো সেই মান্দাত্তার আমলেই চলছে। যতটা মানুষ রেল এ টিকেট নিয়ে যাতায়াত করেন, তার চেয়ে তিন গুন বেশী মানুষ টিকেট ছাডাই বাদুর ঝুলা হয়ে যাতায়াত করেন।

এর পিছনে মুল কারন রেল এর কিছু অসাধু কর্মচারী আর আমাদের অসচেতনতা। আমাদের অসচেতনতা ততদিন দুর হবে না, যতদিন কর্তৃপক্ষ সুযোগ দিয়ে যাবেন। চট্টগ্রাম ষ্টেশনে প্রায় প্রতিটা ট্রেনই দেখি ষ্টেশনে ঢোকার প্রায় এক/দুই কি: মি: আগে মিনিট দুই/তিনেকের জন্যে কাল্পনিক কোন কারনে থেমে যায়। প্রথম প্রথম ব্যাপারটা আমি বুঝতাম না, ভাবতাম হয়তো রেল এর কোন সিষ্টেম। কিন্তু পরে জানতে পারি এইটা অবৈধ যাত্রীদের অঘোষিত প্লাটফর্ম।

ষ্টেশনে এত যাত্রী নামে না, এইখানে যত জন নামেন। কারন ষ্টেশনে টিকেট চেক এর একটু ঝামেলা থাকে, তবে সেইটাও মাঝে মাঝে কন্ট্রাকটারি সিষ্টেমে শেষ করে ফেলা যায়। যাই হোক আমার কথা এতোগুলি লোক টিকেটবিহীন ট্রেন এ আসলো কিভাবে? তাহলে ট্রেন এ কি টিকেট চেক হয়না? হয়, টিকেট চেক হয়.. তবে যাদের টিকেট আছে তাদেরটা চেক হয় না। অর্থাত্‍ যারা সিটের যাত্রী দেখবেন প্রায় তাদের টিকেট চেক হয় না। পরে বুঝলাম যারা সিটে বসা থাকেন অঘোষিত ভাবে তারা সবাই বৈধ যাত্রী, তাই তাদের টিকেট চেক এর প্রয়োজন পরে না।

যারা ষ্টান্ডিং পজিশনে থাকেন, তাদের সাথে চলে দর কষাকষি। দেখা যায় একশত টাকার ভারা বিশ/ত্রিশ টাকা নির্ধারিত হয়। এতে দুজনই খুশি, কারন দুজনই লাভবান। অখুশি হতে হয় টিকেট কাটা যাত্রীদের, কেননা এই মাত্রাতিরিক্ত টিকেট বিহীন যাত্রীই দেখা যায় তাদের কাধের উপর চডে বসে, টয়লেট এর দরজা আগলে রাখে, হাটা-চলার জায়গা ব্লক করে রাখে, ট্রেন এর দডজায় দাডিয়ে দাডিয়ে সিগারেট টানে। তখন আর এইসব দেখার কেউ থাকে না।

তাহলে ট্রেন এর পরিবেশ টা কি একবার কল্পনা করতে পারছেন? কর্তৃপক্ষের অসচেতনতার কারনে অনেক সচেতন মানুষকেউ আমি দেখেছি টিকেট ছাডা যাতায়াত করতে, কারন এতেই সাশ্রয়। সাশ্রয় এর সুযোগ যদি খোলাই থাকে, কে বাডতি খরচ করতে যাবে? টিকেট ব্ল্যাকিং এর কথাতো বলে শেষ করা যাবে না। কাউন্টারের চেয়ে বেশী টিকেট পাওয়া যায় আশেপাশের দোকানগুলিতে। আন অনলাইন টিকেটিং সিষ্টেমতো আর এক হয়রানির নাম। অন্য শ্রেনীর কথা জানি না, তবে শোভন শ্রেনীতে দুইবার টিকেট কেটেই ধরা খেয়েছি।

প্রতি টিকেটে বিশ টাকা ব্যাংক চার্জ দিয়ে সিট পাওয়া যায় টয়লেট এর পাশের লম্বা টুল এ। যেখানে পরিবার নিয়ে যাতায়াত করা প্রায় অসম্ভব। তার উপর ব্যাংক চার্জ বেশী দেয়ার পরও অরজিনাল টিকেট এর জন্যে আবার ষ্টেশনে যেতে হয়। পরপর দুইবার এমন সিট পাওয়ার পর ধরে নিয়েছি ই-টিকেট এর কোটা বাথরুমেই পাশেই নির্ধারিত। এখন আর ই-টিকেট করার সাহস পাইনা।

আমার মনে হয় ই-টিকেট সিষ্টেমটা আরো মান সম্মত করা দরকার। সব মিলিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় রেল এর ভুমিকা খুব গুরুত্বপুর্ন তাই সরকারের উচিত রেল যোগাযোগ কে আরো আধুনিক ও দুর্নীতি মুক্ত করা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.