আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আত্মসমর্পণের নির্দেশ তারেক রহমনকে

বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিচারিক আদালতে আত্দসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তাকে খালাস দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আপিল গ্রহণ করে গতকাল বিচারপতি মো. নিজামুল হক ও মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বিচারিক আদালতের মামলার নথিও তলব করেছেন হাইকোর্ট।

সিঙ্গাপুরে ২০ কোটি টাকা পাচারের মামলায় গত ১৭ নভেম্বর তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মো. মোতাহার হোসেন। মামলা দায়ের থেকে রায় পর্যন্ত পুরো বিচার প্রক্রিয়ায়ই তিনি অনুপস্থিত ছিলেন।

ফলে পলাতক দেখিয়েই বিচার কার্যক্রম চলে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান চিকিৎসার জন্য ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাজ্যে আছেন। তার বিরুদ্ধে মোট ১৬টি মামলা রয়েছে।

তারেক রহমানকে এ মামলায় খালাস দেওয়া হলেও তার বন্ধু ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে সাত বছর কারাদণ্ড ও ৪০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। দুদক গত ৫ ডিসেম্বর খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন করে।

হাইকোর্টে ১৬ জানুয়ারি এ আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে শুনানি শুরু হয়। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। মামলায় তারেক রহমান পলাতক থাকায় তার পক্ষে কোনো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়নি। অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, 'আদালত আপিল গ্রহণ করে তারেক রহমানকে বিচারিক আদালতে আত্দসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন।

আত্দসমর্পণ করলে তিনি সেখানে জামিন চাইতে পারবেন। ' দুদক ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এ মামলাটি দায়ের করে। তারেক ও মামুনকে অভিযুক্ত করে ২০১০ সালের ৬ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়। আদালত ২০১১ সালের ৮ আগস্ট অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, টঙ্গীতে ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ পাইয়ে দিতে নির্মাণ কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের মালিক খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা নেন।

২০০৩ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন উপায়ে এ টাকা সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংকে মামুনের হিসাবে পাচার করা হয়, যার মধ্যে তিন কোটি ৭৮ লাখ টাকা তারেক রহমান খরচ করেন। খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো ও সাবেক নৌ-পরিবহনমন্ত্রী প্রয়াত কর্নেল (অব.) আকবর হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মনকে ২০১১ সালের ২৩ জুন অর্থপাচারের আরেকটি মামলায় ছয় বছর করে কারাদণ্ড দেন একই আদালত। তাদের ৩৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়।

তারেকের বিরুদ্ধে যত মামলা : তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৭ মার্চ রাতে ঢাকা সেনানিবাসের শহীদ মইনুল রোডের বাসভবন থেকে গ্রেফতার হন তারেক রহমান। তার বিরুদ্ধে এর পর বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দুটি মামলা করে পুলিশ। একটি হত্যা এবং অন্যটি বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দায়ের করা। দুটি মামলায়ই সম্পূরক অভিযোগপত্রে তারেক রহমানকে আসামি করা হয়েছে। এখানেও তাকে পলাতক দেখিয়ে বিচারকাজ চলছে। তারেকের বিরুদ্ধে সর্বশেষ মামলা হয় ২০১২ সালের ২ অক্টোবর।

ঋণখেলাপির অভিযোগে এ মামলাটি করে সোনালী ব্যাংক। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেফতারের পর তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মোট ১২টি মামলা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়কর ফাঁকির অভিযোগে একটি মামলা করে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে এসব মামলার কার্যক্রম স্থগিত। এর মধ্যে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা আটটি।

২০০৭ সালে বিভিন্ন ব্যক্তি বাদী হয়ে রাজধানীর গুলশান, কাফরুল, শাহবাগ ও ধানমন্ডি থানায় এসব মামলা দায়ের করেন।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.