পাশাপাশি এফডিসির উন্নয়ন এবং আধুনিকায়নে সরকার কর্তৃক অর্থ বরাদ্দের দুই বছর পার হলেও এখনো এ উন্নয়ন আলোর মুখ দেখেনি। যদিও ইতোমধ্যে কিছু যন্ত্রপাতি এসেছে কিন্তু তা দিয়ে পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল এফডিসি গড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
এ অভিযোগ চলচ্চিত্রকারদের। তাই এখন ক্ষুব্ধ চলচ্চিত্র পরিবার। এ প্রসঙ্গে চলচ্চিত্রকারদের মতামত তুলে ধরেছেন আলাউদ্দীন মাজিদ
নায়করাজ রাজ্জাক
[অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক]
চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষণা করা হলেও একমাত্র প্রেক্ষাগৃহের করমুক্তি ছাড়া আর কোনো সুযোগ-সুবিধা এখনো পাওয়া যায়নি।
এটি দুঃখজনক। এ ছাড়া এফডিসির উন্নয়নে সরকার প্রদত্ত টাকা শুধু টেন্ডার আহ্বান ও বাতিলের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রথম কিস্তিতে ক্যামেরা ক্রয়ের নয় কোটি টাকা টেন্ডার জটিলতায় ফেরত গেছে। শুনেছি শীঘ্রই ক্যামেরাসহ নানা যন্ত্রপাতি আসছে এবং কিছু জিনিস ইতোমধ্যে এসে পৌঁছেছে। তবে এভাবে ধীর গতিতে এ প্রকল্পের কাজ চললে নির্মাণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে নির্মাতারা।
শহীদুল ইসলাম খোকন
[সভাপতি, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি]
শিল্পের কোনো সুযোগ-সুবিধা চলচ্চিত্রকাররা এ পর্যন্ত পায়নি। শুধু প্রেক্ষাগৃহের ট্যাঙ্ মওকুফ করা হয়েছে। শিল্প সুবিধার পূর্ণ বাস্তবায়ন হলে চলচ্চিত্র নির্মাণে ব্যাংক ঋণসহ এর উন্নয়নে পূর্ণ শিল্প সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যেত। কিন্তু এ বিলম্ব চলচ্চিত্রকাররা মেনে নেবে না। অন্যদিকে এফডিসির উন্নয়নে প্রাপ্ত সরকারি অর্থ অদূরদর্শী পরিকল্পনার কারণে টেন্ডার আহ্বান, বাতিল ও সরকারের কাছে টাকা ফেরত যাওয়া এবং যন্ত্রপাতি কেনার নামে এফডিসির এমডির ঘন ঘন বিদেশ সফরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।
শাবিক খান
[সভাপতি, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি]
চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষণা শুধু প্রেক্ষাগৃহের ট্যাঙ্ মওকুফের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। অথচ শিল্পের পূর্ণ সুযোগ-সুবিধা বাস্তবায়ন হলে চলচ্চিত্র নির্মাণে ব্যাংক ঋণ পাওয়া যেত। এতে উৎপাদন বাড়ত। ফলে চলচ্চিত্র শিল্পী এবং এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা উপকৃত হতো। চলচ্চিত্রের সোনালি দিন ফিরে আসত।
আসলে চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিলেও এর সুযোগ-সুবিধা এখনো আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। আমরা শুধু বিশ্বাস নিয়েই নিঃশ্বাস ফেলছি।
মিশা সওদাগর
[সাধারণ সম্পাদক, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি]
চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষণা করা হয়েছে শুধু কাগজপত্রে। প্রকৃতপক্ষে এর বাস্তবায়নের কোনো লক্ষণ নেই। তা ছাড়া দুই বছরেরও বেশি সময় আগে এফডিসির উন্নয়নে সরকারের দেওয়া ৫৯ কোটি টাকা কাজে লাগানো হচ্ছে না।
অযোগ্যতার কারণে প্রথম কিস্তির নয় কোটি টাকা ফেরত গেছে। পরবর্তী কিস্তিগুলোরও একই অবস্থা। ইতোমধ্যে কিছু যন্ত্রপাতি ও মেশিন এলেও এফডিসির আধুনিকায়নে বা ডিজিটাল করার ক্ষেত্রে তা একবারেই অপ্রতুল। এভাবে চলতে থাকলে চলচ্চিত্রের পুনর্জাগরণ অচিরেই অন্ধকারে হারিয়ে যাবে।
খোরশেদ আলম খসরু
[সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি, চলচ্চিত্র
প্রযোজক সমিতি]
চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষণা করা হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে।
কিন্তু শিল্পের 'শ'ও এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। কোনো নীতিমালাই এখন পর্যন্ত প্রণয়ন হয়নি। চলচ্চিত্রের প্রতি এটি সরকারের বিমাতাসুলভ আচরণের বহিঃপ্রকাশ। তা ছাড়া এফডিসির উন্নয়নে সরকারি বরাদ্দ টেন্ডার আহ্বান, বাতিল এবং টাকা সরকারের কাছে ফেরত যাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। উন্নয়ন, আধুনিকায়ন বা ডিজিটাল বলে কিছুই হচ্ছে না।
সব মিলিয়ে আমরা ভীষণ ক্ষুব্ধ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।