আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুলিশের হাতে-পায়ে ধরেও ভাইকে রক্ষা করতে পারল না স্বর্ণা

সিলেট নগরীর জিন্দাবাজার থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া ছোট বোন নুসরাত জাহান স্বর্ণাকে নিয়ে খুলিয়াপাড়ায় বাসায় ফিরছিল সোহান। লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির কাছে যাওয়ার পরই সোহানের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে ৮-১০ জন যুবক। তারপরই শুরু করে মারধর। ভাইকে মারধরের দৃশ্য দেখে স্বর্ণা দৌড়ে ঢুকে পুলিশ ফাঁড়িতে। ভাইকে বাঁচাতে পুলিশের হাতে-পায়ে ধরে।

কিন্তু ছোট্ট মেয়েটিকে পাত্তা দেননি ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা। লোকজনের চিৎকারে ব্যারাক থেকে যখন পুলিশ সদস্যরা বের হন তখন সোহানের নিথর দেহ পড়ে আছে রাস্তায়। দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান স্বর্ণার ভাই মদনমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র শেখ সোহান ইসলাম। সে নগরীর খুলিয়াপাড়া নীলিমা ৫২/৪ নম্বর বাসার সাবেক নারী কাউন্সিলর ও মহিলা দলের কেন্দ্রীয় নেত্রী শাহানা বেগম শানু এবং স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা তাজুল ইসলামের ছেলে। গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

স্বর্ণা জানায়, সে পুলিশের কাছে কাকুতি-মিনতি করলেও পুলিশ সময়মতো তার ভাইকে উদ্ধারে আসেনি। তাই তার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। সোহানের বাবা তাজুল ইসলাম জানান, জিন্দাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ছোট বোন স্বর্ণাকে নিয়ে বাসায় ফিরছিল সোহান। লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির কাছে আসার পর সাবেক কাউন্সিলর প্রার্থী গুলজার আহমদ ও ছাত্রদল নেতা শাকিলের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক তার গতিরোধ করে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে সোহানকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।

সোহানের মা শাহানা বেগম শানু জানান, আগামীকাল (আজ সোমবার) ছিল সোহানের জন্মদিন। জন্মদিন উপলক্ষে সে আত্দীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের দাওয়াত করেছিল। কিন্তু জন্মদিনের একদিন আগেই ঘাতকরা তার ছেলের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। লামাবাজার ফাঁড়ির দায়িত্বরত কর্মকর্তা এসআই মনির হোসেন দাবি করেন, সোহানের বোন পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়েছিল বলে আমার জানা নেই। তবে পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা না নিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হতো।

এতে আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারত।

তিনি জানান, আশঙ্কাজনক অবস্থায় সোহানকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে সালাহউদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রোকন উদ্দিন আহমদ পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পুরো ঘটনাটি ঘটেছে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে। পূর্ব বিরোধের জের ধরে সোহানের ওপর হামলা হয়েছে।

হামলাকারীরা ছুরিকাঘাত করেই পালিয়ে যায়। সোহানের বোন এ সময় ঘাবড়ে গিয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে কান্নাকাটি করছিল। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে বের হয়ে এলেও এর আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত গোলজার আহমদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

 

 



সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/index.php     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.