আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মা+মা= মামা



অনু সকাল থেকেই ভাবছে কি করে বড় মামার সামনে গিয়ে দাঁড়াবে। আর কোন বিষয়ে না, সে এই পরীক্ষায় ইসলাম শিক্ষাতে ফেল করেছে। ফেল করা বড় কথা না, সে বেশি মর্মাহত হয়েছে তার নিজের কপাল দেখে। এবার পরীক্ষার আগে রোজ সে নিয়ম করে নামাজ পড়েছে, কিন্তু কোন গাফিলতির ফলে সে ফেল করল তার মাথায় সেটাই ঢুকছেনা। এই ব্যাপারে তাদের কাজের বুয়ার মতামত এই রকম, “আফা, আফনের কুনু দুষ নাই।

আপনেগর বাসায় একটা খাচ্চর জ্বীন আছে। হের লাইগাই আফনের এই অবস্থা। ” অনু জানে তার বড় মামার সামনে তার এই জ্বীনের থিওরী খাটবেনা। তার মামা একসময় কলেজের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক ছিলেন, পাশাপাশি ছিলেন একজন কড়া প্রিন্সিপাল। অনু এত্তসব চিন্তা বাদ দিয়ে ঠিক করল সে তার বন্ধু রফিককে ফোন দেবে।

এর জন্য তার যেতে হবে ছোট মামার কাছে। সে তাই ছাদের উপর চিলেকোঠার উদ্দেশ্যে যাওয়া শুরু করল।
এই ফাকে বলে নেওয়া ভাল অনু কেন তার মামাবাড়িতে থাকে। অনুর বাবা আর মা দুজন একসাথে থাকতে পারছিলেননা বলে অনুকে মামাবাড়ি রেখে গেছে। কিন্তু আসল ব্যাপার অনু জানে, তারা বাবা-মা আর তাকে নিতে আসবেনা।

কারণ তারা একে অপরকে একদম সহ্য করতে পারেনা। তারা এখন আলাদা থাকেন। তাদের কেউই অনুর দায়িত্ব নিতে রাজি নন। অনুও তাই মামাবাড়িতে গত ৩ বছর ধরে আছে। তার বড় মামা তাকে এখানেই এক স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছেন।

অনুর মনে হয় সে এখানেই ভালো আছে। যাই হোক অনু এখন তার ছোট মামার রুমের সামনে দাঁড়িয়ে। সে তিনবার জোরে জোরে গলা খাকারি দিল। ছোট মামা দরজা খুলে দিয়ে বললেন, “আয়। ” অনু রুমের ভিতর ঢুকে দেখল বরাবরের মতই মামার ঘর অগোছালো অবস্থায়।

সে তার মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল, “মামা একটা ফোন করব। ” ছোট মামা মুচকি হেসে বললেন, “কাকে? রফিককে?”অনু মাথা ঝাকালো। ছোটমামা তার মোবাইল দিতেই অনু তা নিয়ে ঘরের এক কোনায় গিয়ে রফিককে ফোন দিল। রফিক ফোন উঠিয়েই বলল-
-হ্যালো, বল।
-রফিক আমার অবস্থা খারাপ।


-জানি, আমার অবস্থাও খারাপ।
-কেন?
-আব্বুকে বলেছিলাম ফেল করেছি। গালে ঠাটিয়ে এক চড় কসিয়েছে।
-বলিস কি? আমি যদি বড়মামাকে বলি মামাও তো বোধ হয় আমাকে এমন চড় দেবে।
-শোন চড় দেবার সময় গাল একটু নরম রাখবি তাহলে ব্যাথা কম লাগে।


-সত্যি?
-আমি কি তোকে কখনও ভুল বুদ্ধি দেই? তুই আমার কথা মত চড় খেয়ে দেখ। গালে পাউরুটি রাখলে আরো কাজ দেয়।
-ঠিক আছে। আমি তোর কথা মতই চড় খেতে যাই।
- গুডলাক।


এরপর অনু ফোন ছোটমামার কাছে দিল। মামা বললেন, “কিসে ফেল করেছিস?” অনু মুখ গোজ করে বলল, “ইসলাম শিক্ষায়। ”ছোটোমামা হা হা করে এক অট্টহাসি দিলেন। ছোটমামা যখন এমন করে হাসে অনুর খুব ভালো লাগে। হাসি থামিয়ে মামা বললেন, “নাস্তিক মানে জানিস?” অনু ঠোঁট উলটে বলল, “মামা আমি সেভেনে পড়ি।

এটাতো সহজ। এর মানে যে আল্লাহকে বিশ্বাস করেনা। ” ছোটমামা ভেংচি কেটে বললেন, “হ্যাঁ, ঠিক বলেছিস। আমি সেই ছোটবেলা থেকেই নাস্তিক। কিন্তু সারাজীবন আমি ক্লাশে ফার্স্ট হয়েছি।

কোনদিন তো ইসলাম শিক্ষাতে ফেল করলামনা। ” অনু বলল, “বুয়া বলেছে এটা একটা খাচ্চর জ্বীনের কাজ। ” ছোটমামা বললেন, “আরে ধুর! তোর মাথাই গেছে। কই পরীক্ষা, আর কই জ্বীন। এখন ভাগ সামনে থেকে।

” অনু তখন একছুট্টে বের হয়ে এল ঘর থেকে।
অনু সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে নামতে ভাবলো রফিকের কথা মত সে গালে পাউরুটি নিয়েই বড়মামার কাছে যাবে। কারণ রফিক তার বন্ধুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চালাক। অনু আস্তে আস্তে বাড়ির গেটের দিকে গেল। সেখানে দারোয়ান গফুর মিয়া সিগারেট খাচ্ছিল।

অনুকে দেখেই সে সিগারেট দূরে ছুড়ে ফেলে দিল। তারপর একগাল হেঁসে বলল, “অনু ভাই কি খবর? কই যাবেন?” অনু নাক-মুখ কুচকে বলল, “কত্তবার আপনাকে বলেছি সিগারেট খাবেননা। এইবার আমি বড়মামার কাছে নালিশ করব। ” গফুর একটু ভয় খেয়ে বলল, “কসম, আমি আর খামুনা। ” অনু এইবার একটু ভাব নিয়ে বলল, “ঠিক আছে, বলবনা।

আপনি এখন শিগগিরি আমাকে ছোট একটা পাউরুটির প্যাকেট এনে দেন। ” গফুর তো অবাক, “এই দুপুর বেলায় পাউরুটি দিয়া করবেন কি?” অনু বলল, “পাউরুটি গালে নিয়ে একজনের কাছে যাব। সে আমাকে একটা থাপ্পড় দিবে। পাউরুটি গালে থাকলে আমার আর ব্যাথা লাগবেনা। ” গফুর এবার একটু রাগ হয়েই বলল, “কি কন? কার এত্ত বড় কইলজা আফনের গায়ে হাত দিব? আমি হেরে এমুন এক থেক্কান দিমু যে সে আউলায়া যাবগা।

এক বার খালি নাম কন। ” অনু মুচকি হাসি দিয়ে বলল, “বড়মামা আমাকে থাপ্পড় দিবে। ” গফুর এবার একটা বিষম খেল। তারপর সে মন খারাপ করে বলল, “ধূর! খালি বিটলামি করেন। আইচ্ছা, আমি পাউরুটি নিয়া আসতাছি।

” এর কিছুক্ষণ পরেই গফুর মিয়া অনুকে পাউরুটি এনে দিল। অনু পাউরুটি নিয়ে তার রুমে লুকিয়ে রাখল। তারপর সে ভাবল রফিক সাথে থাকলে খুব ভাল হত। অনুর মাঝে মাঝে মনে হয় রফিক বোধহয় অন্য গ্রহের প্রাণী। নাহলে রফিকের মাথায় এত বুদ্ধি আসে কি করে।

অনু হঠাৎ করেই দেখল বিকাল ৩ টা বাজে। তারমানে একটু পরেই অংক স্যার আসবেন। অনুর এই স্যার হাবিবুর আলম প্রচন্ড রাগী মানুষ। গত পরশু দিন স্যার তাকে গুনে গুনে তিনশবার কান ধরে উঠা-বসা করিয়েছে। আজ অনু আগে থেকেই প্ল্যান করে রেখেছে যেস্যারকে একটা টাইট দিতে হবে।


হাবিবুর স্যার যখন অনুর রুমে হাজির হলেন তখন অনু একটু ভয়ই পেল। স্যার এমনিতে ধমক দেন, কান মলা দেন; কিন্তু আজ অনু যা করবে তাতে স্যার যদি তাকে থাপ্পড় কষান তখন কি হবে! অনু ভাবল, “ইশশ, একটু পাউরুটি যদি মুখে নেয়া যেত। ” হাবিবুর আলম বললেন, “কি, হোমওয়ার্ক করেছ?” অনু মাথা নাড়লো। অনু জানে স্যার একটা বিশেষ গাইড বই থেকে অংক মুখস্থ করে অনুকে অংক করতে দেন। এর বাইরে উনি কিছুই পারেননা।

তাই অনু আগেই রফিকের কাছ থেকে একটা ভুল বানানো অংক এনে রেখে দিয়েছে। এরপর যথারীতি অনু স্যার এর কাছ থেকে ঝারি খেতে থাকল। স্যার ঠিক ঘড়ি ধরে এক ঘন্টা পড়ান। স্যার আজ উঠার আগে অনু বলল, “স্যার স্কুল থেকে একটা অংক দিয়েছে। কাল সেটা করে নিয়ে যেতে হবে।

” স্যার একটু অবহেলার হাসি দিয়ে বললেন, “আচ্ছা, দাও করে দেই। নিজে তো আর মাথা খাটাবেনা। অলস কোথাকার। ” হাবিবুর আলম ভেবেছিলেন বই এর কোন অংক হবে। কিন্তু অমন উদ্ভট অংক দেখেই উনি ঘামতে শুরু করলেন।

উনি খাতায় কলম দিয়ে দাগ কাটতে কাটতে অস্থির হয়ে উঠলেন। দশ, বিশ মিনিট পার হয়ে গেল স্যার শুধু পাতার পর পাতাই নষ্ট করলেন। ফল কিছু হলনা। অনু তখন বলল, “স্যার কি হল? মিলছেনা?”স্যার ভয় পেয়ে তোতলাতে তোতলাতে বললেন, “ইয়ে....মানে...মিলছেনা। ” অনু তখন বলল, “স্যার এটা মিলবেনা।

এটা আপনার গাইড বইয়ে নেই। ” স্যার তখন একটু চুপসে গিয়ে ঝিম ধরে বসে থাকলেন। তারপর বললেন, “আমি তোমার বড়মামার সাথে দেখা করতে চাই। ” অনু এইবার বুঝল আসলে সে ধরা খেয়েছে। একে তো ইসলাম শিক্ষাতে ফেল, উপরি আবার অংক স্যার নালিশ দেবেন, আজ আর বাচা হবেনা তার।

এক গালে না আজ দুই গালেই চর খেতে হবে। উফফফ! কেন যে সে এই শয়তানি করতে গেল। এরপর সে স্যার কে বড়মামার রুমে রেখেই আবার তার রুমে চলে আসল। অনু ভাবল তার পালানো উচিৎ। সন্ধ্যার পরে বড়মামা থাপ্পড় দিলেই সে এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে।

তারপর সে স্টেশনে কুলিগিরি করবে। রফিককে বলতে পারলে ভাল হত। কিন্তু ছোটমামার মোবাইল দিয়ে ফোন দিলে সে ধরা খেয়ে যাবে। তার আর তখন পালানো হবেনা। সে একটা ছোট ব্যাগ নিয়ে কিছু জামা-কাপড় ভরে ফেলল।

ঠিক তখনই কাজের বুয়া আলেয়া এসে বলল, “ভাইজান, এখনই ব্যাগ গুছাইতাছেন?” অনু একটু অবাক হয়ে বলল, “কেন কি হয়েছে!” আলেয়া বলল, “আফনের আব্বা আর আম্মা আসছেন। তারা আফনেরে মনে হয় নিতে আসছেন। ” অনুর মাথায় সাথে সাথেই একরাশ চিন্তা খেলে গেল। তাকে যদি তার বাবা-মা নিয়ে যায় এখান থেকে তাহলে তো সর্বনাশ। উনারা সারাদিন ঝগড়া করবেন আর তাকে বন্দি অবস্থায় থাকতে হবে।

তার স্কুল, রফিক, বাড়ির সবাইকে সে অনেক মিস করবে। অনু একটু বিব্রত ভাবেই বলল আলেয়াকে, “ঠিক আছে। আপনি এখন যান। ” আলেয়া চলে যেতেই অনু ভাবল, বাবা-মা তাকে নিতে চাইলেও সে এই বাড়ি ছেড়ে যাবেনা।
অনুর বড়মামা মিজানুর রশিদ একটু বিষণ্ণ ভাবেই বসে সামনে।

তার সামনেই অনুর বাবা আর মা বসে আছেন। অনুর বাবা একটু গম্ভীর ভাবেই বসে আছেন। ঘরের এক কোনেই অনুর ছোটমামা দাঁড়িয়ে আছেন। একটু আগেই গফুর মিয়া অনুকে তার ঘর থেকে ডেকে নিয়ে এসেছে। অনু সোফাতে বসে সবাইকে একপলক দেখে নিয়েছে।

তার বাবাকে তার কাছে মনে হয়েছে অচেনা কেউ আর মা কেও তেমন লাগছে। বড়মামা নিরবতা ভাঙ্গলেন, “তোমার অংক স্যার তোমার পড়ালেখাতে খুশি। তিনি চান জীবনে তুমি যেন অনেক বড় হও। ” অনু অবাক হয়ে গেল। বড়মামা আরো বললেন, “তবে তাকে এইভাবে অপমান না করলেও পারতে।

” অনুর বাবা তখন বলে উঠলেন, “ভাইজান, কাজের কথায় আসা যাক। আমার আবার একটু তাড়া আছে। ” অনুর দিকে তিনি একটু বিরক্তি নিয়ে তাকালেন। বড়মামা তখন বললেন, “ছোট তুই বল। ” ছোটমামা একটু অস্বস্তি নিয়ে শুরু করলেন, “অনু তোর বাবা আর মা আর একসাথে থাকতে চাননা।

তারা এখন ডিভোর্স মানে একদম আলাদা হয়ে গেছেন। এটা এখন তোর ব্যাপার যে তুই কার কাছে থাকতে চাস। ” অনু কিছু বলার আগেই অনুর মা বলে উঠলেন, “ও আবার কি বলবে! অনু আমার কাছে থাকবে। আমি চাইনা অনু ওর বাবার মত হোক। ” অনুর বাবাও রাগত স্বরে বলে উঠলেন, “তোমার কাছে থাকলে সে কি হাতেম তাঈ হবে নাকি? ও আমার কাছেই থাকবে।

” অনু বুঝলো ঘরের পরিবেশ অনেক ভারী হয়ে গেছে। অনু সবার দিকে তাকিয়ে বলল, “আমি একটা ফোন করতে চাই। ” তখন ছোটমামা তার ফোনটা অনুর দিকে এগিয়ে দিলে অনু তা নিয়ে বারান্দায় চলে গেল। তারপর যথারীতি সে রফিককে ফোন দিল। ফোন ধরল রফিকের বাবা,
-হ্যালো কে?
-চাচ্চু আমি অনু।

একটু রফিকের সাথে কথা বলব।
-ও। তুমিও কি ফেল করেছ?
-জ্বী চাচ্চু।
-হুম। আচ্ছা রফিককে দিচ্ছি।


এরপর রফিককে উনি ডেকে দিতেই রফিক চিৎকার করে বলল,
-দোস্ত! আব্বা আমাকে মাফ করে দিয়েছেন।
-গুড। কিন্তু আমি একটা সমস্যাতে পড়েছি।
-তুই কবে সমস্যা ছাড়া ছিলি! বল কি হয়েছে?
-আমাকে বাবাও নিতে চায় আবার মাও নিয়ে যেতে চায়। আমি এখন কি করি বলত!
-এক কাজ কর তুই।

তুই মামাদের কাছে থাকা। ওরাতো তোর ডাবল মা। তোকে অনেক বেশি আদর করবে।
-মানে বুঝলামনা।
-আরে ব্যাটা! মা+মা=মামা, ওরা তোকে তোর বাবা-মা’র থেকে অনেক বেশি আদর করবে।

আমার মনে হয় ওরা অনেক ভাল মানুষ। বুঝলি?
-বাহ। এখন ক্লিয়ার। বাই রাখি পরে কথা হবে।
-বাই দোস্ত।


অনু এরপর আস্তে আস্তে সোফার কাছে গিয়ে বসল। তার মনে অনেক খুশি এসে ভর করেছে। সে একটা বড় দম নিয়ে বলল, “আমি এখানেই থাকব। ” সবাই অবাক হয়ে অনুর দিকে চেয়ে থাকল। অনুর বাবা বললেন, “আসলে তুমি বুঝতে পারছোনা.........” অনু তার কথার মাঝেই বলে উঠল, “আমি এখানেই ভালো আছি।

সবাই আমার অনেক টেক কেয়ার করে। তুমি আর মা সবসময় ঝগড়া কর। আমাকে নিয়ে তোমরা একটুও ভাবনা। এখানে আমার ডাবল মা আছেন দুইজন। ওরাই অনেক ভালো।

” বড়মামা একটু অবাক হয়েই বললেন, “ডাবল মা? সেটা আবার কি?” অনু বলল, “ডাবল মা মানে, মা+মা=মামা। তুমি আর ছোটমামা। ” মিজানুর রশিদ তখন হা হা করে হেঁসে উঠলেন। একটু পরে ছোটোমামাও হাসতে থাকলেন। একটু পর মিজানুর রশিদ বললেন, “অনু যা চায় তাই হবে।

আর কোন কথা নয়। ” এরপর অনুর বাবা- মা অনেক চেষ্টা করলেও অনু আর রাজী হলনা। তারা দুইজনই একসময় হাল ছেড়ে দিয়ে চলে গেলেন। অনু যায়নি বলে গফুর মিয়া ও আলেয়া এত্ত খুশি হল যে গফুর মিয়া ঘোষনা দিয়ে, তওবা করে সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিল আর আলেয়া দুইটা শিক্ষিত মুরগী মানে ফার্মের মূরগী রান্না করে সবাইকে খাওয়ালো।
রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে পরে বড়মামা অনুকে ডেকে পাঠালেন।

অনু তার কাছে গেলে তিনি বললেন, “তুই আজ আমাকে দেখিয়ে দিলি কি করে ভালো মানুষ হতে হয়। আমি তোকে নিয়ে গর্বিত। তোর মন আজ যা চায় বল। ” অনু একটু ভাবল। তারপর সে বলল, “আমি তোমার কাছে একটা কথা বলব।

কথা দাও আমাকে মারবেনা। ” মামা বললেন, “নির্ভয়ে বল। ” অনু একটা ঢোক গিলে বলল, “মামা দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে। ” মামা বললেন, “ তো কি রেজাল্ট?” অনু মুখ কাচুমাচু করে বলল, “মামা, ইয়ে মানে আমি ইসলাম শিক্ষাতে ফেল করেছি। ” এর কিছুক্ষণ পরে দেখা গেল অনু কান ধরে উঠাবসা করছে আর গফুর মিয়া হিসাব করছে সে কত্তবার উঠছে আর বসছে।

বড়মামা বলেছিলেন মারবেননা, কিন্তু এটা বলেননি যে তিনি শাস্তি দেবেননা। অনু উঠাবসা করতে করতে ভাবল, ডাবল মা বলে কথা। যেমন আদর তেমনি শাসন। কিন্তু তারপরেও মা+মা=মামাই ভালো।




এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।