আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নুহাশ পল্লীতে কিছুক্ষণ

ইচ্ছেটা অনেকদিন যাবৎ মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিলো, নুহাশ পল্লী তে যাবো। ঢাকা থেকে দূরে কোথাও নিয়ে যাবার জন্যে মেয়ে হিমিকা'র আবদার সেই ইচ্ছেটাকে আরো জোরালো করে দিলো। সেই সাথে বাবা-মা এর ইচ্ছেতো ছিলোই। ২৮ তারিখ সকাল ১১টায় রওনা হলাম নুহাশ পল্লীর উদ্দেশ্যে। পথ যেন আর শেষ হচ্ছিলো না আমাদের।

গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে হোতাপাড়া যেতেই প্রায় ১ ঘণ্টা লেগে গেলো। তবে খারাপ লাগেনি ঐ পথ টুকু। পথের দুপাশে ঘন সবুজ বন যেন দু বাহু মেলে আলিঙ্গন করে নিয়ে যাচ্ছিলো আমাদের কে। হোতাপাড়া এলো, বাঁ দিকে মোড় নিলাম আমরা। ।

বনের মাঝখান দিয়ে এগিয়ে চলেছে আঁকা বাকা সরু পথ। দু পাশে নিবিড় বনভূমি, আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম স্বপ্নের জগতে। অতঃপর পৌঁছুলাম নুহাশ পল্লী। প্রথমেই গেলাম লিচুতলায় অবস্থিত হুমায়ুন আহমেদ-এর কবর দেখতে। নড়তে পারছিলাম না, অনেকক্ষণ অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম ঐ দিকে।

তারপর ঘুরে ঘুরে দেখলাম পুরো নুহাশ পল্লী। বুকের ভেতর একটা ব্যথা অনুভব করছিলাম, চারদিকের অযত্ন আর অবহেলা দেখে। সবথেকে বেশী আঘাত পেয়েছি বৃষ্টিবিলাসের চরম খারাপ অবস্থা দেখে, জানিনা কর্তৃপক্ষ কিভাবে এটা সহ্য করেন. জানতাম না আরো বেশী কষ্ট আমার জন্যে অপেক্ষা করছে,একটু সামনে এগিয়েই দেখলাম কী নির্মমভাবে স্যারের লাগানো গাছগুলোর পাতা ছিড়ছে কিছু অবিবেচক লোকজন। এভাবে যদি চলতে থাকে কদিন পর দেখা যাবে গাছগুলো সব পাতাশূণ্য। দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়েই কিছু ছবি তুলেছি, সেগুলোই শেয়ার করছি এখানে।

এই ছবিগুলো সবার কাছেই পরিচিত, তাই আমি ছবিতে নতুন করে কোন বর্ণনা দেইনি, ইচ্ছে করছিল স্যারের নিজহাতে লাগানো গাছগুলো একটু ছুঁয়ে দেখতে, কিন্তু ওটাতো সম্ভব নয়, পুরো সপ্তাহ লাগবে সব গাছ ছুঁয়ে দেখতে গেলে। ফিরে আসবার সময় প্রধান ভবনের সিঁড়িতে একটু সময়ের জন্যে বসেছিলাম, এই সিঁড়িতেই তো কত পদধুলি পড়েছে আমাদর প্রাণপ্রিয় লেখকের। ফিরে আসতে ইচ্ছে করছিলনা। হিমিকাতো আসবেইনা, অনেকটা জোর করেই ওকে বের করে আনলাম। ইতোমধ্যে সূর্য ডুবে চারদিক অন্ধকার প্রায়, নিরিবিলি বুনো পথে অন্ধকারে নানরকম বিপদের আশংকা করে বাবা আমাকে তাড়া দিচ্ছিলেন শিগগির বের হতে, তাই নুহাশ পল্লীর ফটক বন্ধ হবার আগেই বের হতে হলো আমাদের ।

পরিশেষে সবার জ্ঞাতার্থে একটি তথ্য দিচ্ছি, সেটা হলো প্রতি বছর নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত বিনা অনুমতিতে নুহাশপল্লীতে প্রবেশ করা যায়না। অন্যসময় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এখানে যে কেউ যেতে পারবে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।