আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নুহাশ পল্লীতে

সত্যি কথা, ওখানে যেতে পাসপোর্ট ভিসা লাগেনা, শুধু ভালবাসা লাগে। যাবার ব্যবস্থা সহজ। ভাবলাম সম্পত্তি নিয়ে মামলা মোকদ্দমা শুরু হতে কতক্ষণ। তখন হয়তো মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওখানে দর্শণার্থী প্রবেশ স্থগিত হয়ে যেতে পারে। তাই রোজার মধ্যেই রওনা হলাম।

জয়দেবপুর চৌরাস্তা পার হয়ে ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ককে ডানে রেখে একটু এগোলেই হোতাপাড়া। সেখানে বাঁয়ে (পশ্চিমে) গিয়ে, খতিব খামার বাড়ি পার হয়ে যেতে হবে। এরপর বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টরী আর তাদের কিনে রাখা জমিজমা। ভাওয়াল এরপরই পিরুজালী গ্রামের শুরু। নেংড়া নামের এক অদ্ভুত মার্কেটে পৌছে সেখান থেকে আবার ডানে (উত্তরে) যেতে হবে।

নেংড়া জায়গাটায় দু’চারটার বেশি দোকান নেই। আসলে ওটা একটা মোড়। হোতাপাড়া ওখান থেকে মাত্র তিন কিলো গেলেই নুহাশ পল্লী। এই মসজিদের পাশ দিয়ে তিন কিলো যেতে হবে যারা ইট কাঠের শহরে থেকে মনটাকে বিষিয়ে ফেলেছেন তাদের গেট পেরিয়ে ঢুকতেই মন ভালো হয়ে যাবে। নুহাশ পল্লীর প্রবেশ পথ শুরুতেই সবুজ বাগান।

আসলে পুরোটাই একটা বাগান। মাঝে মাঝে ছোট ছোট স্থাপনা। ডানে কংকাল পুকুর। গেটে ১৫ মিনিটের কথা লেখা থাকলেও যতক্ষণ ভালো লাগে ততক্ষণই থাকা যায়। কেউ কিছু বলেনা।

একপাশে ঝাউয়ের সাড়ি। মাঝে লিচু গাছ। তাতে রয়েছে ছোট্টসোনামনিদের জন্য ট্রি-হাউজ। ভালুকছানা কংকালের কাছে যেতে ভয় পাচ্ছিলো ছোটদের জন্য টুকিটাকি দোলনা, স্লাইড ইত্যাদি রয়েছে। ট্রি-হাউজ কিছু ডাইনোসর ইত্যাদির রেপ্লিকা বানানো রয়েছে।

একপাশে শায়িত আছেন অবিসংবাদিত জনপ্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদ। নুহাস পল্লীর শেষপ্রান্তে লীলাবতী দীঘি। মাঝে ছোট্ট এক দ্বীপ। কাঠের ব্রীজ দিয়ে যাতায়াত। দু’পাশে বাধানো ঘাট।

ভালুকছানার স্পাইডারম্যানে রূপান্তর দিঘীর একপাশে ভূতবিলাস বাংলো। ভূতবিলাস বাংলো মৎসকন্যা লতায় ছাওয়া গাছ, অদ্ভুত সুন্দর নুহাশ পল্লীর আশপাশের গ্রামের দৃশ্য কোন টিকিট লাগেনি। খাবার নিয়ে প্রবেশের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ভেতরে আর্মড পুলিশ থাকায় আইন শৃংখলা বা পরিবেশ নিরাপদ। যারা গাড়ি নিয়ে বা সিএনজি/ক্যাব ভাড়া করে যাবেন তারা সরাসরি চলে যেতে পারবেন।

যারা বাসে যাবেন তারা প্রভাতী-বনশ্রী বা সুপ্রভাতের বাসে হোতাপাড়া যাবেন। ওখান থেকে ব্যাটারী চালিত রিক্সায় নুহাশ পল্লী। ভাড়া ১০০/- থেকে ১৫০/-। অথবা হোতাপাড়া থেকে ম্যাক্সীতে নেংড়া মার্কেট। সেখানে রিক্সায় নুহাশ পল্লী।

দু’তিন জনের দল হলে ঐ তিন কিলো হেঁটেই চলে যেতে পারেন। জায়গাটাকে আমার কাছে বিনোদনের স্থান হিসেবেই মনে হয়েছে। এটাকে কবরস্থান বানানোটা হয়তো ঠিক হয়নি। যাগগে; যাদের সহজে বেড়াবার সুযোগ আর সময় আছে তারা দেখে আসতে পারেন। ভালই লাগবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।