আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাম্প্রদায়িক হামলার বিরুদ্ধে সাতকানিয়ায় শপথ

শনিবার বিকালে সাতকানিয়া কেরানিহাট এলাকায় ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সমন্বয় পরিষদ’ আয়োজিত লং মার্চ শেষে জনসভায় এই শপথ নেয়া হয়।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, সাতকানিয়ায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, নারী নির্যাতন ও হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ বাঙ্গালি জাতির জন্য লজ্জাজনক ও কলঙ্কজনক।

এসব কাজকে ‘দানবীয়’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “আগামীতে এই দানবীয় কাজ আর করতে দেব না। অন্যায় জুলুম-নির্যাতন, সাম্প্রদায়িকতা করলে চট্টগ্রামের মানুষ হিসেবে নিশ্চুপ থাকতে পারি না। ”

“নারী নির্যাতন, হিন্দুদের ওপর নির্যাতন ও জঙ্গি চক্রান্ত মহাপাপ।

মানবতাবিরোধী এসব কাজ পশুত্বের লক্ষণ।

এসব কর্মকাণ্ড পরিহার করে ভ্রাতৃত্বের মনোভাব নিয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

জনসভায় সমবেত সকলকে হাত তুলে ওয়াদা করার আহ্বান জানিয়ে মহিউদ্দিন বলেন, “ওয়াদা করুন- হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ভ্রাতৃত্বের মনোভাব নিয়ে শান্তিতে বসবাস করব। আর কোনো হামলা হবে না। ”

সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধের দাবিতে গত ২০ জানুয়ারি নগরীর লালদীঘি মাঠের জনসভায় নবগঠিত সমন্বয় পরিষদের পক্ষ থেকে শনিবারের লং মার্চের ঘোষণা দেন মহিউদ্দিন।



গত বছর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াত ইসলামীর নেতাদের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার পর থেকে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া এলাকায় বিভিন্ন সহিংস ঘটনা ঘটে।

যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর লোহাগাড়ায় জামায়াত-শিবির কর্মীদের হামলায় এক পুলিশ সদস্য নিহত হন।

এরপর গত ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে ও পরে ওই এলাকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়। ভোটের দিন ঢেমশা বড়ুয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্রে আগুন দেয়া হয়। তাদের হামলায় তিন নির্বাচনী কর্মকর্তা ও দুই পুলিশ গুরুতর আহত হন।



১৭ জানুয়ারি সাতকানিয়া উপজেলার উত্তর ঢেমশা মুহুরী পাড়ায় দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে পুড়ে যায় সাতটি বসতঘর। এসব ঘটনায় জামায়াত-শিবির কর্মীদের দায়ী করেছে পুলিশ।

আগামী ১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী সাতকানিয়া সফর করে হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেবেন বলে জানান মহিউদ্দিন।

জনসভায় নগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, “সব ধর্মের মানুষ একযোগে রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। যারা অন্য ধর্মের মানুষের ওপর হামলা চালাচ্ছে তারা ইসলামকে কলঙ্কিত করার জন্যই হামলা করছে।

সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহম্মদ, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলার সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার সাংসদ আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী, চন্দনাইশের সাংসদ নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জহিরুল আলম দোভাষ।

বেলা সাড়ে এগারটায় নগরীর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদসংলগ্ন ওয়াসার মোড় থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সমন্বয় পরিষদের আয়োজনে লংমার্চ শুরু হয়।

যাত্রাপথে পটিয়া ও চন্দনাইশের দোহাজারিতে পৃথক দুটি পথসভা হয়। এতে সংগঠনটির নেতাকর্মী ছাড়াও নগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন সংগঠনের প্রায় দশ হাজার নেতাকর্মী অংশ নেয়।
 
বাস, ট্রাক ও মাইক্রোবাসসহ প্রায় দেড়শতাধিক গাড়ির বহর নগরী থেকে সাতকানিয়ার উদ্দেশ্যে লং মার্চে অংশ নেয়।



শনিবার সকালে লং মার্চ শুরুর আগে নগরীর লালদীঘি ও জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ মাঠের পাশের সড়কে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.