আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বি,এন,পি কি মুসলিম লীগের পথ অনুসরন করছে??

। অনেস্টি ইজ দ্যা বেস্ট পলেসি। জামাত/বি,এন,পির সম সাময়িক আন্দোলনের মুল এজেন্ডা দু'টি। যথা:-১। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নির্দলিয় নিরপেক্ষ সরকার।

২। যুদ্ধাপরাধিদের বিচার/মানবতা বিরোধি অপরাধের বিচার। তাদের দাবী হোচ্ছে বিচারটা হোতে হবে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন,স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ। বিরোধী দলিয় নেত্রী তার বিভিন্ন সভা সমিতিতে বার বার প্রমান করার ব্রত গ্রহণ করেছেন ,আ. লীগ ও জোটের অন্য নেতারা কখন কিভাবে রাজাকারদের সাথে দহররম মহররম করেছেন। এখন আমরাও কিছুটা পেছন ফিরে দেখি।

আ. লীগ একটি সংগ্রামী ও আন্দোলনমুখি দল;তাদের লক্ষই হোচ্ছে গণতান্ত্রিক লড়াই করে ক্ষমতায় যাওয়া এবং ক্ষমতায় গিয়ে তাদের কর্মসুচি বাস্তবায়ন করা। এতে তাদের অনেক ব্যার্থতা ,দুর্বলতা ও ভুল থাকতেই পারে এবং এর জন্য তাদের কঠোর সমালোচনা করা যেতেই পারে। এসব কিছু গণতন্ত্রের অংশ। বর্তমান প্রেক্ষাপটে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারটাই হোচ্ছে মুখ্য বিষয়। জামাত/ শিবির এর বিরোধীতা করবে এটাই স্বাভাবিক।

বি,এন,পি ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে অনেক কথা বললেও এখন পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে তারাও এই বিচারের বিরুদ্ধে। প্রকাশ্যে তাদের সভা সমিতিতে বিচার বন্ধ করার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে দিচ্ছে। বন্দী যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দাবি করছে ও আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালকে বিতর্কিত করে বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছে। এবং এসব দাবির ক্ষেত্রে বি,এন,পি-র কর্মিরাও সরব। এবার ইতিহাসের দিকে দেখলে আমরা কি দেখতে পাই।

দেশ ও জাতির যতটুকু অর্জন তা আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমেই অর্জিত হোয়েছে। কোনটাই কোন রাজনৈতিক দলের এজেন্ড ছিলোনা প্রথমে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে যত আন্দোলন হোয়েছে এই বাংলার মাটিতে তার প্রত্যেকটাই শুরু করেছে এদেশের শিল্পী-সাহিত্যিক, ছাত্র,কৃষক,শ্রমিক ও বুদ্ধিজিবী সমাজ। প্রতিটি আন্দোলনেই প্রত্যেকের সুযোগ ছিলো যোগ দেওয়ার ,প্রত্যেকের জন্যই দরজা খোলা ছিলো। মুসলিম লীগ সে আন্দোলনে বিরোধীতা করেছে আর আ. লীগ সে আন্দোলনের সাথে একাত্ততা ঘোষণা করেছে: আন্দোলনের নেতৃত্ত গ্রহণ করে বেগবান করেছে আন্দোলনকে।

আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের সুচনা করেছে ছাত্র- সমাজ। বুদ্ধিজীবী সমাজ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে বৈষম্য। এখান থেকেই শুরু হোয়েছে স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধিকার আন্দোলনের। সেই আন্দোলনেও সবার সমান সুযোগ ছিলো অংশ গ্রহণের। মুসলিম লীগ,ন্যাপ ইচ্ছে করলেই সে আন্দোলনে নেতৃত্ত দিতে পারতো।

সে আন্দোলকেও আ.লীগ গ্রহণ করে নিলো এবং সামনে দাড়িয়ে নেতৃত্ত দিলো। আর তাই তারা আর সবার চাইতে ,জন সমর্থনের দিক দিয়ে এগিয়ে গেলো। পক্ষান্তরে মুসলিম লীগ ষড়যন্ত্রের রাজনীতির পথে পা বাড়িয়ে অবলুপ্তির পথে হারিয়ে গেলো। যে কোন আন্দোলন যখন দানা বাধতে থাকে তখন আন্দোলনের সাথে জড়িত নেতারা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকে। এক সময় মাহমুদ আলী,নুরুল আমিন,শাহ আজীজদের সাথে ঘনিস্ঠতা ছিলো আ.লীগের অনেক নেতাদেরই।

আবার অনেকে খোদ আ. লীগের রাজনিতির সাথেই জড়িত ছিলেন। এখন তাদের সাথে বঙ্গবন্ধুর ছবি দেখিয়ে যদি এটা প্রমাণ করার চেস্টা করা হয় যে কোলাবরেটরদের সাথে বন্ধুত্ব আছে । সেটা কি যুক্তিযুক্ত হবে, না ধোপে টিকবে। এবার বর্তমান বাস্তবতার দিকে তাকালে আমরা কি দেখতে পাই। জামায়াত সহ সকল ধর্মভিত্তিক রাজনৈতি দল নিষিদ্ধ ছিলো কোলাবরেটর এ্যাক্ট বলবৎ হোয়েছিলো।

যারা সরাসরি খুন,জখম,ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মত ঘটনার সাথে জড়িত ছিলো তাদের বিচারও চলছিলো। আদর্শগত ভাবে মিল থাকায় যারা পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিলো কেবল তাদেরকেই ক্ষমা করা হোয়েছিলো। জিয়া একে একে জামাত সহ সকল নিষিদ্ধ দলগুলোর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় এবং তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসন করেন। শধু তাই নয় দালাল আইন বাতিল করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে দেয়। জিয়ার দেখানো পথেই হেটেছেন জে. এরশাদ।

জিয়া তার দলকে দাড় করিয়েছেন জামাতের সহায়তায়, পাকিস্তানপন্থী দল হিসেবে। এবং তার প্রতিপক্ষ ও প্রধান বাধা হিসেবে টার্গেট করেছেন আ. লীগকে। তিনিই এদেশে গো.আজমকে নিয়ে আসেন,শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানান,যুদ্ধাপরাধী আবদুল আলীমকে মন্ত্রীত্ব দেন। দেশ পরিচালনার মুলমন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী আদর্শ। অন্যদিকে আ. লীগ ও কমিউনিস্ট পার্টির নাতা কর্মিরা হোতে থাকেন জেলজুলুম,মামলা, হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার।

ছাত্র রাজনীতির কালো অধ্যায়ও শুরু হয় তখন থেকেই। জিয়া ও এরশাদ মিলে সত্যিকার অর্থেই রাজনিতিটাকে কঠিন করে দেন প্রকৃত রাজনীতিবিদদের জন্য। এরপর জাহানারা ইমামের নেতৃত্তে শুরু হয় আরেক অধ্যায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার আন্দোলন। লক্ষ করে দেখুন এখানেও শুরুটা অরাজনৈতিক ভাবেই। যদিও ব্যাক্তিগতভাবে আ. লীগের কিছু নেতা এর সাথে জড়িত ছিলেন কিন্তু এটা আ. লীগের আন্দোলন ছিলোনা।

সবার জন্য দরজা জানালা সব খোলা ছিলো আপামর জনসাধারনই ছিলো আন্দোলনের মুল শক্তি। সময়ের দাবীকে সন্মান জানাতে ভুল করেনি আ. লীগ আবারও তা প্রমাণীত হোলো। ক্ষমতার রাজনীতির জন্য জিয়া ,এরশাদ আমাদের রাজনীতিটাকে কতটা কলুষিত করেছে তা ইতিহাসই একদিন প্রমান করবে। যুদ্ধাপরাধ ইস্যুটা আমাদেরকে এক হওয়ার বিরাট সুযোগ করে দিয়েছিলো। কিন্তু বি,এন ,পি যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধি দল তা আজ তারা প্রমান করে দি্যেছে।

এখন বাকিটা ইতিহাসের হাতে, মুসলিম লীগের পথেই যায় কিনা আগামি দিনের বি,এন, পি সেই অপেক্ষা করছে সমগ্র জাতি। পরিশেষে হাসিনা অথবা ইনুর ছবি দেখিয়ে আর যাই হোক যুদ্ধাপরাধের বিচার থেকে রেহাই পাওয়া যাবেনা এটুকু নিশ্চিত। বিঃ দ্রঃ-আবুল মোমেন _এর লেখাকে অনুসরন করে লেখা হোয়েছে। আজকাল পত্রিকায় । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.