দেশটা আমাদের। এর জন্য ভাল কিছু করতে হলে আমাদেরই করতে হবে। Mail:rabiul@gmail.com
তখন ইন্টারমিডিয়েটে পড়ি। পাশের বিল্ডিংয়ের কিশোরীর সাথে নব এবং প্রথম প্রেমে তুমুল মশগূল। ওদের বিল্ডিং এর পিছনের দিকটা আমাদের বিল্ডিংয়ের পিছনের দিকের একবারে মুখোমুখি হওয়াতে আমরা ব্যাপক সুবিধা পাচ্ছিলাম।
সাধারণত দুই পরিবারের সকল সদস্য রাত ১২ টার মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়তো। তখন আমারা দুটি প্রানী পিছনের বারান্দায় চুপিসারে অভিসারে যেতাম।
দুই জনের অভিসারেও ছিল এক্সটা কিছূ বোনাস ! আবেগ-প্রবনীয় বাক্য বিনিময়ের সাথে ফ্লাইং কিস,সম্ভব হলে গ্রিলের ফাঁক গলে হাত বাড়িয়ে হাত ছোঁয়া !!সেই হাত ছূঁলেই শরীরের ভিতর একাটা স্পার্কলিং হত। আনন্দের বিদ্যুতায়িত ঢেউ খেলে যেত সমস্ত শরীরে। (আহ!কি মধূর অনুভুতি!)
সেই অনুভুতির টানে সারাদিন চাতক পাখির মত আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতাম সূর্যটা কখন ডূববে কখন রাত ১২ টার সেই কাঙ্খিত মূহর্ত আসবে !প্রথম প্রেমে পরা, তাই খাওয়া দাওয়া ঘুম সবই হারাম !
আমাদের পরষ্পরের সাথে দেখা করারা জন্য সংকেতের ব্যাবস্থ্যা ছিল রাত ১২ টার পরে নিরাপদ সময় বুঝে আমি আমাদের রান্না ঘরের বাতিটা জ্বালিয়ে আবার কয়েক সেকেন্ডের মধ্য নিভিয়ে দিয়ে পিছনের বারান্দায় অপেক্ষা করা ।
অপেক্ষার ওই সময়টাতে আমি অন্ধকারে মনের আনন্দে ধুমপান করতাম। রান্নাঘরের বাতির আলো ওই কিশোরীর অন্ধকার রুমে যেয়ে পড়তো। তখন ঐ কিশোরীও তার রুম থেকে অন্ধকারে আমার মুখের সিগারেটের জলন্ত আগুন দেখে তাদের পিছনের বারান্দায় এসে হাজির হতো। (উভয় বিল্ডিংয়ের কোন বাসিন্দারা যেনো রাতের বেলায় আমাদের অবস্হান বুঝতে না পারে সে জন্য এই ব্যাবস্থা। )
অন্ধকারে তার নারী অবয়বের ছায়ামূর্তি দেখতাম।
খোলা চুলের সেই ছায়ামূর্তিটা এখনও চোখের সামনে ভেসে উঠলে যথারীতি বুক ধুক-ধুক করে।
বেশ রোমান্স আর আনন্দে কাটছিল আমাদের প্রতিটা দিন। অতঃপর বিপত্তি !
বাবা সধারণত অফিস থেকে সন্ধ্যায়ই বাসায় ফিরে। আর রাত ১২টার অনেক আগেই ঘুমিয়ে পরে। কিন্তু ওই দিন কি একটা কারণে রাত সাড়ে ১২টায় বাসায় ফিরলেন।
বাসার সবাই তখন ঘূমে আর আমি প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম রান্নাঘরের বাতি জ্বালানোর । বাবাকে আমিই দরজা খুলে দেই।
বাবা সধারণত বাসায় ধুমপান করেন না। কিন্তু মন্দ ভাগ্যের পরিনতির কারণে ওই রাতেই কি বাবার ধুমপানের ইচ্ছা জ়াগবে?বাবা রান্নাঘরের বাতি জ্বালালেন ম্যাচ বক্স খোজার জন্য। সেটা পেয়েই বাতি নিভিয়ে পিছনের বারান্দায় চলে গেলেন।
মেয়েটির কাছে সংকেত যা যাবার চলে গেলো। আর আমি অসহায়ের মত দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখলাম। নিশ্চিতভাবেই অন্ধকারে বাবা আর আমার পার্থক্য বূঝবে না কিশো্রীটি!
তারপর যা ঘটল সবই সেই কিশো্রীর মুখ থেকে পরে শুনেছি। বাবা সেই রাতে একবার এসে শুধূ আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল-মেয়েটি কে রে?
আমি যেন ভাজা মাছ উল্টে খেতে জানিনা। বললাম- কোন মেয়ে?
বাবা আর কিছু বলল না,মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেল।
পরদিন রাত থেকে আমার রুমটা মা বাবার বেডরুমে পরিণত হলো আর মা বাবার বেডরুমটা পরিণত হলো আমার রুমে।
অবশ্য দিনেরবেলায়ই আমি জেনে গেছি সেই রাতে বাবার সাথে মেয়েটির কাহিনী!ফ্লাইং কিস কি জিনিস বাবা জানে কিনা জানি না। তবে বাবার থেকে কোন সাড়া না পেয়ে একপ্রকার বকাঝকা দিয়ে গ্রীলের ফাঁক দিয়ে হাত বাড়ালে বাবা এবার আর তাকে নিরাশ করে নি। বাবার হাত স্পর্শ মাত্রই তারও স্পার্কলিং হয়েছিল। তবে সেই স্পার্কলিংয়েই মুহর্তেই ভো দৌড়!
আর কি কি হয়েছিল মেয়েটি অবশ্য স্বীকার করে নি ।
আমি শূধু ভাবলাম যেই কিস এ একমাত্র আমার অধিকার সেই কিসও বাবা দখল করে নিল !!!
(বিঃ দ্রঃ গতকাল ভালোবাসা দিবসে তাকে অনেক মনে পরাতে এই লিখার অবতারনা...। )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।