আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পতিতাদের মানবাধিকার রক্ষা ও আমাদের প্রগতিশীলদের মায়াকান্না !!



পতিতাদের অধিকারের সপক্ষে কথা বলতে গিয়ে অনেক সময় আমাদের সুশীল সমাজের অনেক ব্যক্তিবর্গ, বুদ্ধিজীবি, প্রগতিশীল(?) সাংবাদিক সমাজ এবং বিশিষ্ট অনলাইন এক্টিভিস্টরা সচেতন বা অবচেতনভাবে এই পেশাটাকে অনেকটা বৈধতা বা মৌন সমর্থন দিয়ে থাকে। আবার সাম্প্রতিককালের কিছু নাট্য পরিচালক ও চলচ্চিত্র পরিচালকরাও তাদের নির্মিত নাটক, টেলিফিল্ম বা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মনের সবটুকু আবেগ ও মাধুরি মিশিয়ে দর্শকশ্রোতা বৃন্দদেরকে এদের করুণ কাহিনী তুলে ধরে এদের জন্য দেশবাসীর সহানুভূতি আদায় করার চেষ্টায় তৎপর হয়ে উঠেছেন। তাদের কথাবার্তা বা লেখনীর মাধ্যমে তারা এটা বোঝাতে চান যে, এই পেশায় যারা আসে তাদের কোন দোষ নেই, তারা পরিস্থিতির শিকার।

এই পেশার উপর এবং এই পেশায় নিয়োজিত মানুষগুলোর উপর দিন দিন আমাদের সহমর্মিতা, সহানুভূতি এত ব্যপক হারে বেড়েই চলছে মনে হচ্ছে (আমার আশঙ্কা যদি মিথ্যা না হয়) অদূর ভবিষ্যতে এই পেশার সামাজিক কদর আরো বৃদ্ধি পাবে এবং এটি আমাদের সমাজের নতুন এক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র হিসাবে চিহ্নিত হবে। কারণ, এই পেশায় বিনিয়োগকারীর (পতিতালয়ের মালিক) পুঁজির দরকার হয় অনেক কম, পণ্যের কদর বেশি, ভোক্তার উপযোগ ও চাহিদা বেশি।

ততদিনে কাঁচামালও অনেক সহজলভ্য হয়ে যাবে, কারণ একপ্রকার বিনাশ্রমে নগদ অর্থপ্রাপ্তি, (সাথে শারিরীক এবং মানসিক বিনোদন তো রয়েছেই) এইরকম সুবর্ণ সুযোগ অন্য কোন পেশায় নেই। আর সেইরকম অবস্থা যদি সৃষ্টি হয় তাহলে সামাজিক এই কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে যারা লেখালেখি, তথ্যচিত্র, চলচ্চিত্র ইত্যাদির মাধ্যমে অবদান রেখেছেন তাদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ তাদের জন্য নানা অভ্যন্তরীন (বাছাই করা পণ্যসমূহ তাদের জন্য নির্ধারিত থাকবে) এবং বাহ্যিক (বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পদক) সুযোগ সুবিধাতো থাকবেই।

প্রথমত: আমি কেন এইসব প্রগতিশীল লেখক এবং চলচ্চিত্র নির্মাতাদের বিরোধিতা করি? কারণ এইসব লেখক এবং চলচ্চিত্র নির্মাতারা তাদের লেখা এবং চলচ্চিত্রের বাহ্যিক উদ্দেশ্য দেখিয়ে থাকেন যে তাদের এইসব লেখালেখি এবং চলচ্চিত্রের মাধ্যমে যেন সমাজের এইসব অবহেলিত ও বঞ্চিত নারীদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হয় এবং সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে যেন এইসব নারীদেরকে যেন এই জীবন থেকে ফিরিয়ে এনে সামাজিকভাবে পুনর্বাসন করা যায়।
এর প্রতিক্রিয়ায় আমি বলবো- প্রথমত: তারা বাহ্যিকভাবে যেই উদ্দ্যেশ্য দেখিয়ে থাকেন তা তাদের মূল উদ্দ্যেশ্য নয়, লেখকদের মূল উদ্দ্যেশ্য থাকে তার লেখাটা যেন জনপ্রিয়তা পায় এবং তাদেরকে সবাই মানবদরদী লেখক হিসাবে মূল্যায়ন করে এবং চলচ্চিত্র বা নাট্য পরিচালকদের উদ্দ্যেশ্য থাকে- পতিতালয়ের অভ্যন্তরীন বিভিন্ন যৌন উন্মাদনামূলক দৃশ্য দেখিয়ে তরুণসমাজকে চলচ্চিত্রটির প্রতি আকৃষ্ট করা এবং একটা ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র হিসাবে সেটাকে প্রতিষ্ঠিত করা। উদ্দ্যেশ্য যাইহোক ফলাফল যদি ভালো হতো তাহলে আমার কিছু বলার ছিল না, বরং সেটাকে অভিনন্দন জানাতাম।

কিন্তু এক্ষেত্রে ফলাফল অনেক ভয়াবহ। এমনকি কারো যদি প্রকৃতপক্ষে উদ্দেশ্যও ভালো হয়ে থাকে কিন্তু এর ফলাফল প্রকৃতপক্ষে উদ্দ্যেশ্যের বিপরীত হয়ে থাকে।

বর্তমান সময়ে এইসব পতিতালয়ের নারীদের মানবেতর জীবন যাপনের করুণ কাহিনী বর্ণনা করে যেই হারে লেখালেখি এবং চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে সেই হারে কি তাদের পুনর্বাসন হচ্ছে তথা পতিতালয়ের সংখ্যা কি সেই হারে কমছে? কিংবা আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজের ভোগবাদী মানসিকতা এর ফলে কি কিছুটাও কমেছে তথা আমরা কি পতিতালয়ে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছি? বরং দেখা যাচ্ছে এইসব লেখালেখি বা চলচ্চিত্র নির্মাণ যেই হারে বেড়ে চলছে সেই হারে পাল্লা দিয়ে দিন দিন পতিতালয়ের সংখ্যাও বাড়ছে এবং এইসব পতিতালয়ে গমনকারী পুরুষের সংখ্যাও বাড়ছে। এমনকি যারা এইসব ক্ষেত্রে লেখালেখি বা সচেতনতা সৃষ্টিতে তৎপর রয়েছেন তাদেরও অনেককে এইসব পতিতালয়ের সাথে যেকোনভাবে যুক্ত থাকতে দেখা যায়।

বাংলাতে একটা প্রবাদ আছে প্রচারেই প্রসার- এই নিয়মানুসারে যেইসব ছেলেমেয়েরা পতিতালয় সম্পর্কে কিছু জানতো না, কেউ কেউ নাম শুনে থাকলেও ঘৃণ্য একটা ধারণা থাকা ছাড়া আর বেশি কিছু জানার সুযোগ ছিলোনা এখনকার এইসব লেখালেখি কিংবা এই সম্পর্কিত নাটক, টেলিফিল্ম ও চলচ্ছিত্র সমূহ দেখে উঠতি বয়সের সেইসব তরুণ তরুণীরা এই সম্পর্কে বিস্তারিত সব জানতে পারছে।

সেখানে কি হয়, কারা যায়, কি জন্য যায় এইসবকিছু জানার পাশাপাশি পতিতালয়ের অভ্যন্তরীন বিভিন্ন যৌন উন্মাদনা সৃষ্টিকারী দৃশ্যসমূহ তাদের মধ্যে এটা সম্পর্কে একটা নতুন কৌতুহল সৃষ্টি করে। আর এই কৌতুহল থেকেই তাদেরও একসময় এই পথে পা বাড়ানোর প্রবণতা সৃষ্টি হয়। ১৩-১৮ এই বয়সটাতে আমরা অনেক বেশি আবেগপ্রবণ থাকি, বাস্তবতা বোঝার সক্ষমতা এই সময়টাতে আমাদের হয়না। আর তাই এই সময়টাতে আমাদের বেশিরভাগ গ্রামীন পরিবারসমূহে বিশেষত: মেয়েদের উপরে একধরণের পারিবারিক ও ধর্মীয় অনুশাসনের কড়াকড়ি থাকে যা আমরা মেনে চলতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি। কিন্তু আমাদের আধুনিক প্রগতিশীলদের লেখালেখি কিংবা নির্মিত চলচ্চিত্রসমূহে ব্যক্তিস্বাধীনতাকে এতবেশি প্রাধান্য দেওয়া হয় যে সেখানে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সমাজে প্রচলিত পারিবারিক বা ধর্মীয় অনুশাসনকে আমাদের উন্নয়নে বাধা এবং গোঁড়ামি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।

শুধু তাই নয়, এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার পথও দেখিয়ে দেওয়া হয়। দেখানো হয়- পারিবারিক অনুশাসনকে উপেক্ষা করে কেউবা কোন ছেলের হাত ধরে পালিয়ে যায়, কেউবা আবার পারিবারিক অনুশাসনের যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ হয়ে শহরে কাজের খোঁজে গিয়ে কাজ না পেয়ে পতিতাবৃত্তিতে জড়ায়। এভাবে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির কথা বলে অত্যন্ত সুকৌশলে আমাদের তরুণ সমাজকে এইসব পতিতালয়ের পণ্য এবং ভোক্তা হওয়ার পথটি শিখিয়ে দেওয়া হয় আর পতিতালয়ের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন দৃশ্য প্রদর্শনের মাধ্যমে ভোক্তার উপযোগও সৃষ্টি করা হয়। শুধু তাই নয়, এই পেশার উদ্যোক্তাদেরকে শেখানো হয় সামগ্রিক ব্যবসাটি কিভাবে পরিচালিত হবে। যদিও শেষ দৃশ্যে সংগতি রক্ষার জন্য এর কিছুটা খারাপ পরিণতিও দেখানো হয় কিন্ত সেটা থেকে শিক্ষাগ্রহণ করার নজির খুবই সীমিত প্রায় শুণ্যের কোটায়।



এখন বলতে পারেন- তাহলে সমাজের এই বঞ্চিত নারীসমাজের প্রতি কি আমাদের কিছু করণীয় নেই, আমরা কি তাদের প্রতি কোন সহানুভুতি দেখাবো না? তাদের তো কোন দোষ নেই- তারাতো পরিস্থিতির শিকার। জবাবে আমি বলবো- আমাদের সমাজে যেসব চোর ডাকাতকে আমরা ঘৃণা করি, সামনে পেলে মেরে হাড়গোড় ভেঙ্গে পুলিশে ধরিয়ে দিই তাদের কি দোষ- তারাও তো বেশিরভাগই পরিস্থিতির শিকার, তাদেরকে কেন আমরা মারতে উদ্যত হই। উত্তর দেবেন- তারা তো অন্য পেশায় যেতে পারতো, তারা এই পেশা বেছে নিলো কেন? প্রয়োজনে না পেলে না খেয়ে থাকতো, তাদেরকে তো কেউ এই পেশায় আসতে বাধ্য করেনি। তাহলে একবার ভেবে দেখুন- যারা পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত তাদের কয়জনকে হাত-পা বেঁধে এই পেশায় থাকতে বাধ্য করা হয়েছে? বড়জোর আপনি বলতে পারেন এদের কাউ কাউকে এদের বিশ্বস্ত কেউ (প্রেমিক বিয়ের কথা বলে কিংবা কোন আত্মীয় শহরে কাজ দেওয়ার কথা বলে) প্রথমবার এনে পতিতালয়ে বিক্রি করে দিয়েছে আর সেইথেকে তারা এখানে থাকতে বাধ্য হয়েছে কারণ তাদের পরিবারে ফিরে যাওয়ার মুখ ছিল না বা গেলেও পরিবারে তাদের ঠাঁই হতো না। এক্ষেত্রে আমি বলবো প্রতারিত যে কেউ হতেই পারে, একটা মেয়ে প্রতারিত হয়ে প্রথমবার ধর্ষিত হয় পতিতা হয়না, কিন্তু এরপরও তো সে সেখান থেকে ফিরে আসতে পারতো।

’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে যে আমাদের দুই লক্ষ মাবোন ধর্ষিত হয়েছে তাদেরকে তো কেউ পতিতা বলেনা, বরং তাদেরকে বলা হয় বীরাঙ্গনা। যারা এইভাবে প্রতারিত হয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে তারাও তো ইচ্ছা করলে এরপরও আবার তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারতো, সমাজ তাকে গ্রহণ করবে না? পতিতা হওয়ার পরে বুঝি তাকে সমাজ গ্রহণ করেছে? বরং এর মধ্যদিয়ে তো সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার পথ তার চিরদিনের জন্য রুদ্ধ হয়ে গেছে। কারণ পতিতাবৃত্তিতে একবার যে নিপতিত হয়েছে সেটা তার অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়, সে ইচ্ছা করলেও পরবর্তীতে সেটা আর ছাড়তে পারেনা। কিন্তু প্রথমবার সে ইচ্ছা করলে সমাজে ফিরে আসতে পারতো, সমাজ তাকে প্রথমবার নানা কথা বললেও বাংলাদেশের আইনি কাঠামো এত দুর্বল নয় যে কোন সমাজ জোর করে তাকে তার সমাজ থেকে বের করে দিবে, সামাজিক লাজ লজ্জার কারণে মাবাবাও প্রথমে তাকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানালেও কোন মা বাবা তার সন্তানকে ফেলে দিতে পারে না। বড়জোর এটা হতে পারে যে সমাজে প্রথম প্রথম তার খাপ খাইয়ে নিতে অনেক কষ্ট হবে, নানা জনে নানা কটু কথা বলবে, কিন্ত একটা সময় ঠিকই সয়ে যাবে।

তাছাড়া কোন সমাজ কিংবা কোন মাবাবা একান্ত কাউকে গ্রহণ করে না নিলেও তাই বলে সে পতিতাবৃত্তিকে কেন পেশা হিসাবে গ্রহণ করবে, সে তো পোশাকশিল্প থেকে শুরু করে অন্য আরো দশটা পেশায় যোগ দিতে পারতো, জানি কাজ পাওয়ার তার জন্য প্রথম অবস্থায় অনেক কষ্ট হবে, কিন্তু চেষ্টা চালিয়ে গেলে কোনরকম খেয়ে পরে বেঁচে থাকার মতো একটা কাজ ঠিকই যোগাড় করা যায়। এতদসত্ত্বেও কোন মেয়ে যখন তার বেঁচে থাকার আর দশটা উপায়ের কথা চিন্তা না করে, জীবনের সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকার চেষ্টা না করে পতিতাবৃত্তিকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করে নেয় তখন বুঝতে হবে সে নিরুপায় হয়ে নয় বরং তুলনামূলক সহজ পেশা হিসাবে সেটাকে গ্রহণ করেছে যেমনটা একজন চোর ডাকাত করে থাকে, বরং চোর ডাকাতের পেশায় ঝুঁকি এবং পরিশ্রম বেশি থাকে। তাদেরকে যদি আমরা ঘৃণার চোখে দেখে থাকি তাহলে পতিতাদের কেন সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখে এই পেশাটার প্রতি মৌন সমর্থন দেব এবং নবাগতদেরকে উৎসাহিত করবো? এতক্ষণ যাদের কথা বলা হচ্ছে এদের সংখ্যাটাও কিন্তু খুব একটা বেশি নয় বরং পতিতাবৃত্তি পেশায় জড়িত বেশিরভাগই কিন্তু শখের পতিতা যারা নিছক বিনোদন এবং তুলনামূলক সহজ উপায়ে টাকা উপার্জনের জন্য এটাকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করে থাকে। তাছাড়া শহরের অভিজাত হোটেলগুলোতে কিংবা নামী-দামী রেস্তোরা, হোটেল, পার্কগুলোতে কিছু অভিজাত সম্প্রদায়ের পতিতারও দেখা মেলে যারা আবার খদ্দের পছন্দ না হলে যেইসেই খদ্দেরের সাথে পতিতাবৃত্তিতে জড়িত হয়না। তাদের ব্যাপারে আমরা কি বলবো? তাদের প্রতিও কি সহানুভুতি সহমর্মিতা দেখানো উচিত? আর একপ্রকার পতিতার কথা আপনারা বলতে পারেন যারা মূলত উত্তরাধিকারসূত্রে পতিতা হয়ে জন্মায় বাবা মা পতিতাপাড়ায় থাকার কারণে অন্য কোন সমাজে তাদের ঠাঁই হয়না বলে, তাদের ব্যাপারটা সত্যিই দু:খজনক এবং তাদের ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো উচিত।

কিন্তু তারাও চাইলে একটু উদ্যমী হলে তাদের সমাজ থেকে বের হয়ে অন্য কোথাও গিয়ে ‍সুস্থ সামাজিক জীবনে ফিরে আসার চেষ্টা করতে পারে এবং একটা পতিতাপাড়া থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করার ফলে সমাজের কিছু দয়াবান ব্যক্তি তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতেও পারে।

আপনি হয়তো বলতে পারেন- পতিতাদের জন্য কি আমাদের তাহলে কিছুই করার নেই? বিশেষ করে যারা উত্তরাধিকার সূত্রে পতিতা হয়ে জন্মায় তাদের পুনর্বাসনের জন্যও কি আমরা কিছু করতে পারিনা? হাঁ অবশ্যই- পতিতাবৃত্তির প্রবণতা কমিয়ে আনার জন্য এবং তাদের পুনর্বাসনের জন্য আমরা অবশ্যই কিছু করতে পারি। বিষয়টি সরকারের নজরে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারি, সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানাতে পারি, কেউ যেন শখ বা কৌতুহল বশত: কিংবা বাধ্য হয়ে এই পেশায় পণ্য বা ভোক্তা হয়ে না আসে, ভোক্তার যাতে উপযোগ বৃদ্ধি না পায়, উদ্দ্যেক্তারা যাতে নিরুৎসাহিত হয় সেইজন্য সামাজিক জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সুস্থ সামাজিক বিনোদনের ব্যবস্থা করতে পারি, সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য লেখালেখিও করতে পারি যেখানে তাদের জন্য সহানুভূতি, সহমর্মিতা, মায়াপ্রদর্শন না করে বরং এই পেশার প্রতি একটা ঘৃণা সৃষ্টি করার দরকার এই পেশায় যারা নিয়োজিত আছে তাদের ঘৃণ্য জীবনের প্রতি আলোকপাত করে তাদের বিকল্প পুনর্বাসনের জন্য সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানানো দরকার। নাটক বা চলচ্চিত্রও নির্মাণ হতে পারে যেখানে থাকবেনা কোন অশ্লীলতার ইঙ্গিত, থাকবেনা এই পেশায় জড়িত হওয়ার উপায়, বরং থাকতে পারে তাদের প্রতি জনসাধারণের ঘৃণিত দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে বিকল্প পুনর্বাসনের ব্যবস্থা।

পতিতাবৃত্তিকে বর্তমানে আমাদের সমাজের এক দুর্যোগ হিসাবে অ্যাখ্যায়িত করা যায়।

বর্তমান আকাশ সংস্কৃতির হাতছানি, অশ্লীল চলচ্চিত্র নির্মাণ, প্রগতিশীল লেখকদের লেখায় তরুণ তরুণীদের অবাধ স্বাধীনতা উপভোগের আহবান, পারিবারিক ও ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতি ক্রমবর্ধমান হারে উপেক্ষা প্রদর্শন, সর্বোপরি চারিত্রিক ও নৈতিক অবক্ষয় দিন দিন যে হারে বেড়ে চলেছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে এটি আমাদের সমাজে এক প্রলয়ঙ্করী মহামারীরুপে দেখা দেবে। অতিসত্ত্বর এর আশু প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব না হলে মানব সমাজ অতিদ্রুত ধ্বংসের দিকে ধাবিত হবে এতে কোন সন্দেহ নেই।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.