আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিভিন্ন ধর্মে নারীর অবস্থান

নিজের করি নিজে খাই, বলার তেমন কিছু নাই । তার পর ও বলতে চাই যুদ্ধাপারাধীদের বিচার চাই ।

কিছু দিন যাবত নারী স্বাধীনতার/ নারী মুক্তির শ্লোগান শোনা যাচ্ছে। আধুনিক নারীরা স্বাধীনতার দাবী তুলেছে। জাতিসংঘ প্রতি বছর ৮ মার্চ কে বিশ্ব নারী -দিবস ঘোষণা করেছে।

বিশ্বের নারী সংগঠন সমুহ নারী মুক্তি নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচী ঘোষণা দিচ্ছে। আসলেই কি নারী সমাজ মুক্তির অভিষ্ট লক্ষে পৌঁছাতে পারছে? আমার ধারণা মতে নারী মুক্তির বাহানা দিয়ে এক উৎকণ্ঠ পুরুষবাদীতা আধুনা-নারীবাদীদের তাড়িত করছে। মনে হচ্ছে উগ্র নারী সংগঠনসমুহ যা কিছুই পুরুষরা করে তা নারীরাও স্বাধীনভাবে করতে পারার মধ্যেই নারীর স্বাধীনতা খুঁজে বেড়াচ্ছে। নারী জাতি বিশ্ব মানবজাতির অর্ধাংশ। দুনিয়াতে বিভিন্ন ধর্ম বিভিন্নভাবে নারীকে নিজের মত সামাজিক অবস্থান ও অধিকার দান করেছে।

কোন ধর্ম বা সম্প্রদায়ই তার সঠিক মর্যাদা ও অধিকার দিতে পারেনি। কেউ করেছে দেহ পসারিনী, কেউ করেছে ভোগের সামগ্রী, কেউ করেছে দাসী, কেউ করেছে দেবী। কোন কালে, কোন ধর্মে বা কোন সমাজে নারীর যথাযথ মুল্যায়ন করা হয়নি বরং যে যেভাবে পেরেছে হেয় প্রতিপন্ন করেছে। একমাত্র ইসলামই নারীকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করেছে। ইসলাম ধর্ম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান।

এখানে পুরুষকে যতটুকু অধিকার দান করা হয়েছে তেমনি নারীকে তার চেয়ে বেশী অধিকার দান করেছে। যারা পৃথিবীতে নারী জাতির মুক্তির ইতিহাস সম্পর্কে খোঁজ খবর রাখেন তারা জানেন ইসলাম না হলে নারী জাতির মর্যাদা স্বীকার করা হত না। বিভিন্ন ধর্মের নারীর অবস্থান সম্পর্কে আমি বেশী কিছু জানি না, তবে তার পরও যেটুকু জানি তা না লিখে পারছি না।


ইয়াহুদী ধর্মঃ
ইয়াহুদী ধর্মের অভিমত এমন মানুষ কে? যে নাপাক থেকে পাক হতে পারে? যে নারী থেকে জন্ম নিয়েছে সে কিভাবে সত্যবাদী হতে পারে? অর্থাৎ নারী নাপাক, নারী সত্তার মধ্যে সত্যবাদীতা নেই। এ কারনে তার থেকে যার জন্ম সে সত্যবাদীতা শুন্য।

মানুষ যেহেতু নারী থেকে জন্ম তাই সে পবিত্র হতে পারেনা। কেননা নারীর মাথা থেকে পা পর্যন্ত সব নাপাক। ডঃ গেসটাউলীবান বলেন কিতাবে মোকাদ্দাস গ্রন্থে রয়েছে, নারী জাতি মৃত্যু হতেও অধিক তিক্ত। প্রাচীন যুগের ওয়াজের অধ্যায়ে রয়েছে যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রিয় সে যেন নারী থেকে নিজেকে দুরে রাখে। আমি সহস্র মানুষের মাঝে একজন খোদার প্রিয় পেয়েছি কিন্তু সারা বিশ্বের নারী জাতির মধ্যে একজনকেও খোদার প্রিয় পাইনি।




হিন্দু ধর্মঃ
এদেশেরই সখ্যালঘু অপর একটি ধর্ম, হিন্দু ধর্ম। যেখানে সেদিন পর্যন্ত নারীকে বিবাহের পর স্বামী হাজার অত্যাচার করলেও বিবাহ বিচ্ছেদের কোন উপায় ছিলনা। আজীবন স্বামীর চরনের দাসী হিসেবে বিবেচনা করা হত। তাছাড়া উত্তরাধিকার লাভের কোন অধিকার নারীর ছিলনা, স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর স্বতীত্ব প্রমানের জন্য স্বামীর চিতায় আত্মদান ছিল বাধ্যতামুলক। বর্তমান দু’ একদিনের বিবাহ কোন নারী যদি বিধবা হয় তাহলে তার আর সারা জীবনে পুর্ণ বিবাহের অধিকার নেই।

বিবাহের সময় বাবা, ভাই থেকে সে সম্পদ নিয়ে শুশুর বাড়ীতে উঠবে, তারপর আর বাবা-ভাইদেরকে সম্পদের কথা বলতেও পারবেনা। হিন্দু ধর্মে নারীদের কোন অধিকার নেই। পুরুষের জন্য একই সময়ে দশজন স্ত্রী রাখার অনুমতি আছে। তালাকের সাথে সম্পর্ক নেই, যে কারনে নারীর ক্ষতিই বেশী, কারণ নারীর ভাল না লাগলে বা স্বামীর অত্যাচারে সে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে পারেনা। যত কষ্ট হোক, শত অত্যাচার করা হোক, স্বামীর কাছেই থাকতে হবে।

সমস্ত ক্ষমতা স্বামীর, নারী দিন রাত্রীর কোন সময় স্বাধীন থাকতে পারবেনা। হিন্দু ধর্ম মতে তাকদীর, তুফান, মৃত্যু, জাহান্নাম বিষ ও বিষাক্ত সাপ এত ক্ষতিকর নয় যত ক্ষতিকর নারী।


খৃষ্টান ধর্মঃ
খৃষ্ট ধর্মের মতে নারী পুরুষ কেউ পবিত্র না, বিশেষ করে নারী জাতি। কারণ আদম (আঃ) হাওয়া (আঃ) উভয়ে নিষিদ্ধ খাবার খেয়েছিল, আদম আঃ পাপের দাগ মুছার জন্য একজন খোদার প্রিয় ব্যক্তির প্রয়োজন ছিল। যিশু এসে নিজে শুলিতে চড়ে সে পাপ হতে নিস্কৃতি পেলেও নারীদের ভিতর কেউ এমন হয়নি বিধায় নারীর অস্পৃশ্য/ পাপী।

তাছাড়া খৃষ্টীয় ধর্মে মেয়ে সন্তান জন্ম দেওয়ার কারনে অনেক নির্দোষ সুন্দরী নারীকে জীবন্ত আগুনে জালানো বা ফাসিঁতে ঝুলানো হয়েছে, আবার খৃষ্ট ধর্মে তালাক প্রথা নেই, যে কারনে হিন্দু নারীদের মত খৃষ্ট ধর্মে নারীরা নির্যাতন ভোগ করে। সে কষ্টের শেষ নেই। পশ্চিমা খৃষ্টীয় সভ্যতায় প্রকৃত পক্ষে মানব মনের উপর কোন দাগ কাটতে পারেনি। কারণ তা সার্থপরতা ও ভোগান্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। ইসায়ী জগতের এক ধর্ম সাধক বলেন, নারী ছলনার কন্যা।

তা থেকে দুরে থাক। নারী শয়তানের শক্তি। অজগর সাপের মত রক্ত পিপাসু। তার মধ্যে সাপের বিষ নিহিত রয়েছে। সমস্ত ত্রুটির উৎস শয়তানের বাদ্যযন্ত্র, শয়তানের সাহায্য কারিনী।

যাকে বলে তুমি কে? আমার কাছে তোমর কি প্রয়োজন? গ্রেট পোলো একজন খৃষ্টীয় পুর্ণবান নেতা বলে খ্যাত। তিনি বলেন, পুরুষ নারীর জন্য সৃষ্টি হয়নি, নারীই পুরুষের জন্য সৃষ্টি হয়েছে, নারীর কোন অধিকার নেই, কুমারী মেয়েদের সম্পত্তিও বিয়ের পর স্বামীর বলে গন্য হতো। এমনকি স্ত্রীর নিজ নামটি পর্যন্ত স্বামীর নামের সাথে পরিচিত হতে হয়।


জাহেলিয়্যাতের যুগঃ
জাহেলী যুগে মেয়ে জন্ম নিলে জীবন্ত অবস্থায় তাকে মাটি চাপা দেয়া হত, নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হত। পাহাড় থেকে নিক্ষেপ করা হত।

পাথর মেরে রক্তাক্ত করে মেরে ফেলা হত। মেয়েদের দাসী হিসাবে ক্রয় বিক্রয় করা হত। মেয়ে জন্ম হওয়াতে অসম্মান বোধ করত।
ইসলামী যুগঃ
নারীদের প্রতি জুলুম ও অপমান ইসলাম বরদাস্ত করতে পারেনি। ইসলাম তাই মেয়েদের কে বিভিন্ন ভাবে সম্মান ও মর্যাদা দান করেছে।

যেমন ১. কন্যা হিসাবে মর্যাদা ২. বোন হিসাবে মর্যাদা ৩. মা হিসাবে মর্যাদা ৪. স্ত্রী হিসাবে মর্যাদা ।


কন্যা হিসাবেঃ
রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যখন তোমাদের ঘরে কেউ সর্ব প্রথম কন্যা সন্তান জন্ম দেয় সে বরকত ওয়ালা। অন্য এক হাদীসে আছে, যে ব্যক্তি দুটি কন্যা সন্তানকে বয়োপ্রাপ্ত হওয়া পর্যন্ত লালন পালন করবে সেও আমি কেয়ামতের দিন এতটুকু কাছাকাছি থাকবো এই বলে রাসুল (সাঃ) ইশারায় তার দুই আঙ্গুল কে মিলিয়ে নৈকট্যের পরিমাণ প্রদর্শন করলেন। আরো একটি হাদীসে আছে, হুজুর সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি তিনটি কন্যা বা তিনজন বোনকে প্রতিপালন করে, তাদেরকে ইসলামী আদব কায়দা শিক্ষা দেবে এবং তাদের প্রতি স্নেহ মমতা প্রদর্শন করবে, তাদের বিয়ে দিয়ে আত্মনির্ভরশীল করে দেবে সে ব্যক্তির জন্য বেহেশত নির্ধারিত রয়েছে। এই হাদিস শুনে এক ব্যক্তি দাড়িয়ে বলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ।

যদি দুটি মেয়ে বা বোন লালন পালন করে? হুজুর (সাঃ) উত্তরে বললেন, তাহলেও ঐ পুরস্কার পাবে। অন্যত্র বলেন, তোমরা কন্যা সান্তানদের ঘৃণা করনা, কারণ আমি নিজেও চার কন্যার জনক।


বোন হিসাবে মর্যাদাঃ
হাদিসে রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তির তিনজন কন্যা সন্তান বা তিনজন বোন থাকে/ দুইজন কন্যা সন্তান বা দুইজন বোন থাকে, একজন কন্যা বা বোন থাকে আর সে তাদের হক আদায়ে সচেতন থাকে, তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করে এবং আল্লাহকে ভয় করে তার জন্য জান্নাতের সুসংবাদ আছে। যদি কোন মেয়ের বাবা মা বেঁচে না থাকে তবে তার লালন পালন শিক্ষা দিক্ষা সহ সকল ব্যায়ভারের দায়িত্ব ভায়ের উপর । হুনাইনের যুদ্ধে বন্দী ছিল কয়েক হাজার।

তারমধ্যে রাসুল (সাঃ) এর বোন শীমাও ছিলেন। সবাই যখন তাকে গ্রেফতার করে তখন তিনি বললেন, আমি তোমাদের পয়গম্বরের বোন। সাহাবায়ে কেরাম সত্যায়নের জন্য রাসুল (সাঃ) এর খেদমতে নিয়ে এলেন, মুহব্বতে অতিশয্যে রাসুল (সাঃ) এর চোখে অশ্রু ভরে যায় এবং তাকে বসার জন্য নিজের চাদর বিছিয়ে দিলেন। তার সাথে হৃদতাপূর্ণ আলোচনা করলেন, কয়েকটি উট ও ছাগল দান করলেন। তার পর বললেন আপনার যদি মনে চায় আমার সাথে থাকেন অন্যথা আপনার ঘরে চলে যেতে পারেন।

তিনি ঘরে যাওয়াকে পছন্দ করলেন। রাসুল (সাঃ) পূর্ণ ইজ্জত ও সম্মানের সাথে তাঁকে পৌঁছিয়ে দিলেন।
মা- হিসাবে মর্যাদাঃ
মাকে সম্মান করা কোন কোন ধর্মে থাকলেও আমরা দেখেছি খৃষ্টান সন্নাসীদেরকে মায়ের সাথে অন্যায় আচরণ করতে, ইসলামে সবখানে মায়ের সাথে সম্মান সুচক ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে। পবিত্র কুরআনের বহু জায়গায় সে বিষয়ে উল্লেখ আছে। যেমন আল্লাহপাক ঘোষণা করেছেন, তুমি আল্লাহ ছাড়া আর কারো ইবাদত করবেনা এবং মা-বাবার সাথে সদ্ব্যবহার করবে।

যদি তোমার সামনে তাদের কেউ অথবা দুজনেই বৃদ্ধাবস্থায় পৌঁছেন তবে তাদের সামনে উহ্ শব্দটি বলোনা এবং তাদেরকে তোমার কথার দ্বারা কষ্ট দেবেনা, তাদের জন্য বিনয় ও নম্রতা সহকারে শ্রদ্ধার সাথে বাহু প্রসারিত করবে এবং আল্লাহর কাছে বলবে, হে প্রভু তাদের প্রতি আপনি সদয় হোন, যেভাবে তারা আমার শিশুকালে দয়ার সাথে আমাকে প্রতিপালন করেছেন। হাদিসে আছে, এক ব্যক্তি হুজুর সাঃ এর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, সন্তানের কাছে পিতামাতার কি হক আছে? হুজুর সাঃ উত্তরে বললেন মা বাবা তোমার বেহেশত ও দোযখ। তুমি মা বাবাকে সন্তষ্ট রাখতে পারলে বেহেশতে যেতে পারবে, আর যদি তাদের কষ্ট দাও তবে দোযখ নির্ধারিত আছে। হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ ) থেকে বর্ণিত। একদা জনৈক ব্যক্তি রাসুল (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ।

আমার সৎ ব্যবহারের সব চেয়ে বড় হকদার কে? রাসুল (সাঃ) বললেন, তোমার মা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে আবার বলল তারপর কে? তিনি বললেন তোমার মা। সে বলল তারপর কে? চতুর্থবার বললেন, তোমার পিতা। তারপর তোমার নিকটে অতঃপর যে তোমার নিকটে (বোখারী)।

এখানে বাবা থেকে মায়ের স্থান তিনগুন উর্ধেŸ বলে প্রমাণ করেছেন তিনটি কারনে ১. মা সন্তান গর্ভে ধারণ করার কষ্ট করেন ২. সন্তান প্রসবের সময় কষ্ট করে ৩. সন্তানকে দুই বছর পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ায় এবং লালন পালন করার কষ্ট করে। এক ব্যক্তি হুজুর সাঃ এর কাছে এসে বললো, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ)। আমি জিহাদে যাওয়ার আশা করছি সে বিষয়ে আপনার পরামর্শ চাই। এতে হুজুর (সাঃ) বললেন, তোমার কি মা আছেন? লোকটি উত্তরে বললেন, হ্যা। তখন হুজুর (সাঃ) বললেন, যাও এখন তুমি মায়ের খেদমত করবে।

কেননা মায়ের পায়ের নিচেই সন্তানের বেহেশত। ইসলাম মা হিসাবে নারীর মর্যাদা এত বেশী দিয়েছে যে, পুরুষ কোন ভাবেই সে মর্যাদা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবেনা।


স্ত্রী হিসাবে মর্যাদাঃ
ইসলাম স্বামীর কাছে স্ত্রীর স্বতন্ত্র মর্যাদার কথা জোর দিয়ে বলেছে। দুই দেহ এক মন প্রাণ হয়ে স্বামী স্ত্রী বসবাস ও সংসার করবে বটে কিন্তু প্রত্যেকের মর্যাদার প্রতি প্রত্যেকের খেয়াল অবশ্যই থাকতে হবে। স্ত্রীকে ভালবাসা তার মান মর্যাদা হানিকর কোন কাজ বা বাক্য প্রয়োগ করবে না, তার খোর পোষের ব্যবস্থা করা ইত্যাতি।

একজন মুসলিম স্বামীর প্রতি অনবহেলিত কর্তব্যঃ ইসলামের বিচারে স্ত্রীর প্রতি স্বামী কেমন ব্যবহার করে তা দিয়ে স্বামীর ভালো মন্দের বিচার প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন নারীদের অধিকার রয়েছে পুরুষদের উপর তেমনি যেমন রয়েছে পুরুষদের অধিকার নারীদের উপর ন্যায় সঙ্গত ভাবে। অন্যত্র আছে তোমরা স্ত্রীদের সাথে সদভাবে জীবন যাপন কর। হাদিসে রাসুল (সাঃ) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যারা নিজেদের স্ত্রীর কাছে ভালো, তারা ইসলামের কাছে ভালো, আমি আমার স্ত্রীদের কাছে ভালো ব্যক্তি। হুজুর সাঃ আরো বলেছেন, সৎচরিত্র ও স্বীয় স্ত্রীদের প্রতি সহৃদয় ব্যক্তি নিশ্চয় পূর্ণ ঈমানদার। অন্যএক হাদীসে বর্ণিত আছে, এক সাহাবী হুজুর সাঃ কে জিজ্ঞাসা করলেন, আমাদের কাছে আমাদের স্ত্রীদের কি কি প্রাপ্য আছে? হুজুর (সাঃ) উত্তরে বললেন, তুমি যখন খাবে তখন তাকেও খাওয়াবে, তুমি যখন কাপঁড় পরবে তখন তাকেও কাপড় পরাবে।

তার মুখ মন্ডলে আঘাত বা প্রহার করবে না। তার সাথে বিরক্তিকর ব্যবহার করবেনা বা তার দোষ খুঁজে বেড়াবে না। যদি আদব কায়দা শিক্ষা দেবার জন্য সাময়িক ভাবে তার সঙ্গ
ত্যাগ করতে হয় তবে তাকে ঘরে রেখেই তা করবে। পবিত্র কুরআন শরীফে আছে নারীরা তোমাদের পোশাক পরিচ্ছেদ আর তোমরা নারীদের পোষাক পরিচ্ছেদ। এখানে প্রেম ভালোবাসা ও পবিত্রতা রক্ষায় নারীকে পুরুষের সমান মর্যাদা দান করা হয়েছে।

হুজুর সাঃ আরো বলেছেন, যাকে চারটি জিনিষ দান করা হয়েছে তাকে দুনিয়া ও আখেরাতের শ্রেষ্ঠ বস্তুদান করা হয়েছে। ১.কৃতজ্ঞ আত্মা ২.জিকরকারী বসনা ৩. বিপদে ধৈর্যধারী শরীর ৪. বিশ্বস্ত স্ত্রী। অন্য এক যায়গায় হুজুর (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, পৃথিবীর সব কিছুই সম্পদ, এই সম্পদগুলির মধ্যে নারীই হলো সর্বশ্রেষ্ট সম্পদ। প্রিয়নবী হুজুর সাঃ বলেছেন, দুনিয়াতে তিনটি জিনিষ আমার নিকট প্রিয়, সুগন্ধি, নারী, নামাজ। আবার অন্যত্র বলেছেন, পুরুষ যখন স্ত্রী গ্রহণ করে তখন তার অর্ধেক ঈমান পূর্ণ হয় , অতঃপর বাকী অর্ধেক ঈমান রক্ষার জন্য আল্লাহকে ভয় করা দরকার।

এছাড়াও উচ্চ মর্যাদাশালী নারীকে কোন কোন জায়গায় পুরুষের উপরেও স্থান দেয়া হয়েছে। যেমন কুরআন পাকে মারিয়াম আঃ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলতে গিয়ে বলেন, এবং পুরুষ নারীর সমান নয়। অর্থাৎ সব পুরুষ সব নারীর সমান নয়, বরং কোন কোন নারীর চেয়ে পুরুষ আরো নিম্নমানের আছে। রাসূল (সাঃ) বলেন, যখন স্বামী স্ত্রী পরস্পরের সাথে প্রেম চাহনির বিনিময় করে তখন আল্লাহ পাক উভয়ের দিকে করুনার দৃষ্টি দেন। অতঃপর যখন স্বামী স্ত্রীর হাত ধারন করে তখন তাদের আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে পাপরাশি ঝরে পড়ে।

অন্য এক হাদিসে আছে নারীর অধিকার সম্পর্কে তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। কেননা তোমরা নারীদেরকে আল্লাহর আমানত হিসাবে গ্রহণ করেছো এবং আল্লাহর প্রতি সম্পর্ক যুক্ত খুৎবা দ্বারা হালাল করে দিয়েছে। হুজুর সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি স্ত্রীর অন্যায়ে ধৈর্য ধরবে আল্লাহপাক তাঁকে ততোখানি সাওয়াব দান করবেন, যতোখানি সাওয়ার রোগ ও বালা মছিবতে সবর করার কারনে হযরত আইয়ুব আঃ কে দিয়েছিলেন। আর যে নারী স্বামীর অন্যায়ে সবর করবে আল্লাহপাক তাকে (হযরত আইয়ুব আঃ স্ত্রী) বিবি রহিমার সমান সাওয়াব দান করবেন। অন্য এক হাদীসে আছে, যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর একটি কটু কথা শুনে ধৈর্য ধারণ করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে এক হাজার শহীদের সাওয়াব দান করবেন এবং তার কবরের অন্ধকার ও সংকীর্ণতা দুর করে দেবেন।

হুজুর (সাঃ) বলেছেন, কোন মুমিন তার মুমিনা স্ত্রীর এক আধটা অন্যায় আচরণ দেখেই তার প্রতি বিরূপ হয়ে বসবে না, কেননা স্ত্রীর অন্যান্য সদাচরণ আবার তাকে খুশি করবে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.