আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'কে বেশি দেশপ্রেমিক'?

আমি কার পক্ষে নই, আমি সেই পক্ষে, যে পক্ষে ঘুমিয়ে আছে ৩০ লক্ষ শহীদ শিরোনামের কথাটি আমার না, এটি বর্তমান সময়ের প্রধানমন্ত্রীর মুখের কথা, কনোকো-ফিলিপসের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের প্রেক্ষাপটে ১৮ জুন তিনি বলেছেন, ঠিক এখন দেশেপ্রেমিকে ভেসে গেছে আমাদের দেশ, হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির ভোজা মাথায় নিয়ে মন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করলে আরও বেশি দেশ প্রেমিক হওয়া যায়, একে একে আমাদের গ্যাস ব্লক গুলো সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে ইজারা দিয়ে জনগনের প্রাপ্য অধিকার হরন করছে। ফুলবাড়িতে কয়লা খনির কাজ এখনও শুরু করতে পারে না, কারন সেখানকার মানুষ হচ্ছে টোকাই, টোকাই বললাম এই কারনে দেশপ্রেমিকরা বলে যারা এইসব চুক্তির বিরুদ্ধে কথা বলে তারা নাকি টোকাই। তাই ফুলবাড়িতে টোকাইয়ের সংখ্যা বেশি, সেখানে গিয়ে প্রেম দেখানো এতো সহজ না, আবার দেশের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আমাদের সুরমা কুশিয়ারা নদীর উপর টিপাই মুখে বাধ দিয়ে আমাদের পরিবেশকে হুমকির মুখে পেলে দেয়, এই রকম অসংখ্য দেশ প্রেমের বৈশিষ্ট্য আছে, কিন্তু এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি আলোচ্য বিষয় যেটি সেটা হলো, আমাদের সুন্দর বনের পাশে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র এটা ভারতের সাথে চুক্তি হয়েছে,এ চুক্তি অনুযায়ী, ভারতীয় কোম্পানির মুনাফা হবে অনেক উঁচু হারে, সেই মুনাফার ওপর বাংলাদেশ করও নেবে না বলে জানিয়েছে। অন্যদিকে বিদ্যুতের দাম, ব্যয় নির্বাহ ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশের অনেক আর্থিক ক্ষতি হবে। কিন্তু তার চেয়েও বড় সর্বনাশ হবে বাংলাদেশের, যার কোনো ক্ষতিপূরণ সম্ভব নয়।

আমাদের একমাত্র সুন্দরবন বাংলাদেশের সর্বশেষ বন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে সফল প্রাকৃতিক রক্ষাবর্ম, জীববৈচিত্রের অসাধারণ আধার এবং বিশ্ব-ঐতিহ্য। এ প্রকল্পের কারণে সেই সুন্দরবন ধ্বংস হবে! নিজেদের এ অতুলনীয় এবং অনবায়নযোগ্য সম্পদ ধ্বংস করে, মানুষের জীবন বিপন্ন করে, দেশী কিছু লুটেরার স্বার্থ রক্ষা আর ভারতীয় কোম্পানির মুনাফার ব্যবস্থা করতে বাংলাদেশ সরকার উদগ্রীব। বাংলাদেশের সরকার ভরসা পাচ্ছেন কোথায়? ভরসা হলো, কথায় ‘গায়েবি’ আশ্বাস! ভারতের সরকারের লোকজন বলেছেন, রামপাল বিদ্যুৎ প্লান্টে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না। খুলনা ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটো বিশেষজ্ঞদলসহ বহু বিশেষজ্ঞ হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, কিন্তু তাতে কোনো কর্ণপাত নেই। টিপাইমুখ নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হবে না।

বাংলাদেশের ক’জন সরকারি প্রতিনিধি হেলিকপ্টারে করে ওপর থেকে বর্তমান টিপাইমুখ স্থল দেখে নিশ্চিত হয়েছেন, কোনো ক্ষতি হবে না! বাংলাদেশ ও ভারতের বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন, এতে বাংলাদেশের নদীপ্রবাহে ভয়াবহ সংকট তৈরি হবে। তাদের কথা শোনার কেউ নেই। কারন ওনাদের হাতে বেস কিছু লোক বিশেষজ্ঞ আছেন যারা তাদের মত করে রিপোর্ট তৈরি করবেন। যার কারনে কাজ করার সময় বলবে কিছু হবে না, বাস্তবতা হচ্ছে এই যে বাংলাদেশে এখন আস্তে আস্তে নদী গুলু মরে যাচ্ছে , তার কারন হচ্ছে ভারত তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য ছোট বড় বেশ কয়েকটি বাঁধ নির্মাণ করার ফলে আজ আমাদের এই অবস্থা, তাই বলি এই দেশে শুদু দেশপ্রেমিক আছে তা নয়, এই দেশে অল্প কিছু টোকাই ও আছে তাই তারা তাদের জীবন দিয়ে এই দেশপ্রেমিকদের কর্মকাণ্ড ঠেকানো চেষ্টা করবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.