আমি হাজারবার জেনেশুনে হেরে গিয়েছি,কেবল তোমায় একবার জিতে নেব বলে!
রবিবাবু টাইট টি-শার্ট পরে বিব্রত ভঙ্গিতে বসে আছে। রবিবাবু মানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। মুজতবা ভাইয়ের দেওয়া টি-শার্ট তিনি খুলে ফেলতেও পারছেন না নিচে কিছু পরে নেই বলে।
-সৈয়দ,এহেন বস্ত্রের উপকারিতা কি হে?
সৈয়দ মুজতবা আলীর কোন হুঁশ নেই,যে জিনিস ঢেলেছেন পেটে তাতে হুঁশ থাকার কথা নয়। পৃথিবীতে না হয় মেপে মেপে খেয়েছেন,স্বর্গে কি আর মাপামাপি চলে?তাঁর উপর মধুসূদনের মত অষ্টপ্রহর এক করে খাওয়া মানুষ যদি সাথে থাকে।
সৈয়দ সাহেবের হয়ে উত্তম’দা উত্তর দিতে যাবেন,এমন সময় কোথা থেকে সত্যজিৎ বাবু এসে ইয়া মোটা এক বই ধাম করে ফেললেন একদম আড্ডার মাঝখানে। নজরুলদা খুব যত্ন করে গেটস বে হার্ড জেল দিয়ে বাবরী চুলে স্পাইক করার চেষ্টায় ছিলেন,তাঁর কষ্টে করা স্পাইক বামদিকে হেলে গেল। রবিবাবুর বয়স হলেও হার্ট শক্ত। খালি চোখ তুলে তাকালেন,গায়ের হলুদ রঙের এংরি বার্ডের ছবি দেওয়া টি-শার্টের কুঁচকে যাওয়া অংশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে কিছু অভিশাপ দিলেন। দুই খোর,মধুসূদন আর সৈয়দ খালি চোখের পাতা একটু কাঁপিয়ে আবার এক পেগ করে গলায় ঢেলে দিলেন।
-দেখুন রবিবাবু,আমাদের লেখা মানুষ আর পড়ছে না।
সত্যজিতের গলায় ক্ষোভ,ওপাশ থেকে বিনয় কাকু গলা খাকারি দিলেন কেবল।
আড্ডার মাঝে একেবারে মৃত্যুপুরীর নিরবতা।
উত্তম’দা মনে মনে গান গাইছেন,শব্দ মাধ্যম বেশি ঘন হওয়ায় তা বাইরে চলে এলো,
-এই পথ যদি না শেষ হয়,তবে কেমন...
সত্যজিৎ রাগী রাগী চোখে তাকিয়ে চেঁচিয়ে উঠলেন,
-এই গান গাইলে তোমার পিছে এখন ঠাটিয়ে একটা দেবে...
মাইকেল আর সৈয়দ একসাথে বলে ওঠে,
-দোষ সব এই মদের!ব্যাটারা মদ খায় না,গেলে মাত্র!
দুইজন বলা মাত্র খেয়াল করে আর এক পেগ মদ আছে। একজন আরেকজনের জন্য ছেড়ে দেন নিজের অংশ।
বিনয় কাকু বলেন,
-মদ নিয়ে এহেন সম্প্রীতি এই যুগে বড়ই দুর্লভ!
রবিবাবু কিছু বলেন না। টি-শার্টের কোণা দিয়ে চোখের কোণা মুছতে গিয়ে নিজের ধবধবে পেট সবাইকে দেখিয়ে ফেলেন।
সম্মানী মানুষ বিধায় সবাই চোখ নামিয়ে নেয়। আড্ডার শেষকথা তিনি নিজেই বলেন,
“সেলুকাস ইতিহাসে ঠাই পেয়ে গেছে ভাগ্যক্রমে,অন্য কোন সেনাপতি থাকলে তার নাম চলে আসত। আমরা ইতিহাসে ঠাই পেয়েছি নিজের কাজ দিয়ে।
পরিবর্তন আসবেই,কিন্তু সেটা ইতিবাচক না হলেই বিপদ!”
কথা শেষ হতেই তুমুল আলোচনা শুরু হলে যায়,কারো কথা কেউ শুনতে রাজি নন।
আমি সবাইকে রেখে বেরিয়ে আসি নাগরিক জীবনে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।