আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দ্বিতীয় ধাপে ১১৬ উপজেলায় ভোট গ্রহণে প্রস্

দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচন উৎসবমুখর করতে সব প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণে ব্যালট পেপার ছিনতাই, জাল ভোটসহ কিছু অঘটন ঘটায় দ্বিতীয় ধাপে সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে ভোটারদের মধ্যে সংশয় রয়েছে। কমিশনও এবার সতর্কভাবেই কাজ করবে বলে জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ধাপে ৫২ জেলার ১১৬ উপজেলায় এ ভোট গ্রহণ হবে। কাল সকাল থেকেই সংশ্লিষ্ট উপজেলায় ভোট গ্রহণের মালামাল পাঠিয়ে দেবে ইসি। দ্বিতীয় ধাপে ১১৬ উপজেলায় ১ হাজার ৩৭৬ জন চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন।এদিকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ১১৬ উপজেলায় আজ থেকে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী। সঙ্গে থাকছেন পর্যাপ্ত র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্য। আজ মঙ্গলবার মধ্যরাতেই শেষ হচ্ছে মিছিল-মিটিংসহ সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা। একই সঙ্গে বন্ধ হচ্ছে সব ধরনের যান্ত্রিক যান চলাচল। ইসি কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন উপজেলা পরিষদের এ নির্বাচন দলীয় ব্যানারে না হলেও দলীয় প্রভাব রয়েছে সবখানেই। আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের পছন্দমতো প্রার্থী দিয়েছে। রয়েছে প্রধান দুটি দলেরই অসংখ্য বিদ্রোহী প্রার্থী। নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মাঝে রয়েছে ব্যাপক উৎসাহ। এ নির্বাচনকে ঘিরে ইসির কেন্দ্রীয় মনিটরিং কাজে আসছে না। ভোট গ্রহণ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোয় বৃহস্পতিবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ দিন সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে টানা ভোট গ্রহণ। তবে দ্বিতীয় ধাপে ১১৭ টি উপজেলায় ভোটগ্রহনের কথা থাকলেও আদালতের নির্দেশনায় কঙ্বাজারের মহেষখালী উপজেলা ভোট হবে ১ মার্চ। ফলে দ্বিতীয় ধাপে ১১৬টিতে ভোটগ্রহণ হবে বৃহস্পতিবার।

নামছে সেনা, র্যাব, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী : সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন সম্পন্ন করতে আজ থেকে ১১৬ উপজেলায় নামছে সেনাবাহিনী। নির্বাচনের আগে ও পরে মিলিয়ে মোট পাঁচ দিন তারা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে থাকবে তারা। প্রতি উপজেলায় এক প্লাটুন করে সেনা সদস্য টহল দেবেন। বড় উপজেলায় এ সংখ্যা বাড়তে পারে। পাশাপাশি প্রতি উপজেলায় সেনাবাহিনীর দুই থেকে তিনটি গাড়ি থাকবে। সঙ্গে সেনাবাহিনীর কমান্ডিং অফিসার ও একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। এ ছাড়া মোবাইল ফোর্স হিসেবে পর্যাপ্ত র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকছেন। তা ছাড়া প্রতি কেন্দ্রে একজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার একজন (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার ১০ জন (মহিলা চার, পুরুষ ছয় জন) এবং আনসার একজন (লাঠিসহ) ও গ্রামপুলিশ একজন করে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকবেন। হাওর, দ্বীপাঞ্চল ও পার্বত্য এলাকায় এ সংখ্যা শুধু পুলিশের ক্ষেত্রে দুজন হবে।

মধ্যরাতেই বন্ধ হচ্ছে প্রচার-প্রচারণা

আজ মঙ্গলবার মধ্যরাতেই বন্ধ হচ্ছে মিছিল-মিটিংসহ সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা। দশম সংসদ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশ না নিলেও উপজেলা নির্বাচনে তারা অংশ নিচ্ছে। যে কারণে উপজেলা নির্বাচন বরাবরের চেয়ে এবার হয়ে উঠেছে আরও জমজমাট। ফলে এ নির্বাচনকে ঘিরে বিরাজ করছে জাতীয় নির্বাচনের আমেজ। এ বিষয়ে ইসি সচিবালয়ের এক সহকারী সচিব জানান, নির্বাচনের ৩২ ঘণ্টা আগে সব প্রচার-প্রচারণা বন্ধ থাকবে। তা অব্যাহত থাকবে নির্বাচনের পর ৬৪ ঘণ্টা পর্যন্ত। কেউ আইন ভঙ্গ করলে কারাদণ্ড ও আর্থিক দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এমনকি প্রার্থিতাও বাতিল হবে।

প্রার্থী, ভোট কেন্দ্র, ভোটার ও ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার সংখ্যা : দ্বিতীয় ধাপে ১১৭ উপজেলায় ৮ হাজার ১৩১টি ভোট কেন্দ্রের ৫১ হাজার ৬৯৮টি ভোট কক্ষে ভোট গ্রহণ করবেন নির্বাচন কর্মকর্তারা। ১১৭ উপজেলায় এবার ১ কোটি ৯৮ লাখ ৫১ হাজার ১৭৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে মহিলা ৯৯ লাখ ১৩ হাজার ৪৩৫ আর পুরুষ ভোটার ৯৯ লাখ ৩৭ হাজার ৭৪১ জন।

সতর্কভাবে কাজ করছি : শাহ নেওয়াজ

নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেছেন, প্রথম পর্বের অভিজ্ঞতা নিয়ে এবার আরও সতর্কভাবে কাজ করবে নির্বাচন কমিশন। গতকাল ইসি সচিবালয়ের নিজ কার্যালয়ে সংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচনের ত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়েছি। তাই দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্বাচন আরও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য এখন আরও সতর্ক হয়ে কাজ করছি। শাহ নেওয়াজ জানান, প্রথম পর্যায়ের ভোট গ্রহণের জন্য পুলিশ প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সব বাহিনী তাদের সহযোগিতা করেছে। দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের ভোট গ্রহণের জন্য কঠোর হতে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রিসাইডিং অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছি। অপরাধীদের বিধি অনুযায়ী শাস্তি দিতে আমরা সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির বিষয়ে তিনি জানান, রিটার্নিং কর্মকর্তারা দলমত নির্বিশেষে আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য শাস্তি দিচ্ছে। আশা করছি, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হবে।

বাসাইল উপজেলা নির্বাচন পেছাতে পারে

টাঙ্গাইল-৮ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন ২৯ মার্চ আর বাসাইল উপজেলা নির্বাচন ৩১ মার্চ। বাসাইল উপজেলা নির্বাচনের বিষয়ে মো. শাহ নেওয়াজ বলেন, টাঙ্গাইল-৮-এর উপনির্বাচনের দুই দিনের মাথায় বাসাইল উপজেলা নির্বাচন। এ জন্য এ উপজেলা নির্বাচন পেছানো যায় কি না আমরা পরীক্ষা করে দেখছি।

চতুর্থ ধাপে ১ হাজার ৫১২ জনের মনোনয়নপত্র জমা : উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে ৯৩ উপজেলায় ১ হাজার ৫১২ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। রবিবার এসব উপজেলার মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন ছিল। ইসির জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানান, চতুর্থ পর্বের উপজেলাগুলোয় চেয়ারম্যান পদে ৫৬৫, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬১০ ও সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৩৭ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর বৈধ প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় রয়েছে ৬ মার্চ পর্যন্ত। এরপর ভোট হবে ২৩ মার্চ।

দ্বিতীয় ধাপে ১১৭ উপজেলায় ১ হাজার ৩৭৬ জন চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষ হওয়ার পর চেয়ারম্যান পদে ৫১৫, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫২১ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন ৩৪০ প্রতিদ্বন্দ্বী। তৃতীয় ধাপের ৮৩ উপজেলায় ভোট হবে ১৫ মার্চ, চতুর্থ ধাপের ২৩ মার্চ ও পঞ্চম ধাপের ৭৪ উপজেলায় ৩১ মার্চ ভোটের সময়সূচি রয়েছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.