আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সেভেন পাউন্ড। (সিনেমা)

I'm searching that I've lost...



আপনার কি গ্রামের রাস্তায় মোটর সাইকেল চালানোর অভিজ্ঞতা আছে?
আপনি তাহলে ব্যাপারটা বুঝবেন...

বলতে গেলে রাস্তা প্রায় নির্জন । মাঝে মাঝে দু-একটি বচ্চা ছেলে মেয়ে চোখে পড়ছে..
মটর সাইকেলের হর্নের শব্দে চমকে উঠে এদিক সেদিক দৌড়াদৌড়ী করছে।
পেছনে বসা মুসা মামা সাবধান করলেন, স্লো যা,
স্লো’ই যাচ্ছি.. .. ..
সামনে ৪/৫ জন মহিলা, সাথে ২টি বাচ্চা মেয়ে। হর্ন দিলাম। বাচ্চা দুইটি রাস্তার অপর পাশে দৌড় দিল।

মহিলাদের একজন হাত ইশারা করে ওদেরকে তাদের পাশে ডাকছেন। এরা আসি আসি ভাব করছে।
ভাল মুসিবত তো ! মামা বললেন হর্ন দে...
পিপ্ পিপ্.. . .
ব্যাস, যে মহিলা বাচ্চাদের ডাকছিলেন তিনি এবার বচ্চাদের পাশে দৌড় দিলেন। বচ্চা দুটি দৌড় দিল তাদের উল্টো দিকে... ..।
গাড়ি আর এদের মাঝে দূরত্ব ২০/২৫ গজের মতো।



অনেক চেষ্টা করেও পারলামনা। একটা বাচ্চা হেডলাইটের সাথে ধাক্কা খেয়ে ডান দিকে পড়ে গেল। মাথায় লেগেছে। মামা দাঁড়াতে বললেন। দাঁড়ালাম না, ঝামেলায় জড়ানোর মানে হয় না।

গাড়ি বায়ে কেটে বেড়িয়ে যাচ্ছি।
দাঁড়া. . . . .
আমি স্পিড বাড়িয়ে দিলাম. . .

বাচ্চাটা বেঁচেছিল ? নাকি. . ... ?

I don't know.
জানতে ইচ্ছা করেনি। প্রথম বেশ কিছুদিন কেমন কেমন লেগেছে। মনে মনে শান্তনা দিয়েছি - ধুর সামান্য আঘাতে মারা যাবে কেন ? ঠিক বেঁচে গেছে, আর গ্রামের বাচ্চাগুলি এত সহজে মরে না, এদের কই মাছের প্রান... ... ..ইত্যাদি।

এসব দশ বছর আগের ঘটনা।

ভুলেই গিয়েছিলাম প্রায়। মামারও মনে থাকার কথা নয়। কিন্তু সন্দেহ হচ্ছে তিনি ভুলে তো যানই’নি বরং আমাকে ঘটনাটা স্মরণ করিয়ে দিতে চাচ্ছেন। মামার স্বভাব হচ্ছে কথা কম বলা। আকার ইংগিতে বুঝানো।

অনেকটা এরকম-আপনার বিশেষ কিছু কাজে তিনি বেশ বিরক্ত, আপনাকে কখনো তিনি তা বুঝতে দিবেন না। বরং আপনাকে এমন একটি বই বা সিনেমা দেবেন যা দেখার পড় মনে হবে- আরে তাইতো! সামথিং ইজ রং। আমিতো ভুল করছি !

সকালে মামা একটি সিনেমা দিয়ে গেলেন। নাম “সেভেন পাউন্ড” । আমেরিকান ছবি।

পরিচালকের নাম গ্যাব্রিয়েলে মাসিনো। এই লোকের ছবি আগেও দেখেছি তবে এটা দেখা হয়নি।

টিম থমাস নামের এক যুবক ৭ জন মানুষের চরম উপকার করে। এদের সবাইই তার অপরিচিত।
উপকারের ধরণ অভিনব ! প্রত্যেককে সে তার একটি করে অঙ্গ দান করে।

কিডনি, লিভার, এমনকি হার্টও। সর্বশেস এবং ৭ম জনের নাম এমিলি। তার হার্ট প্রায় অকেজো। টিম ঠিক করে এবার সে তার হার্ট দিয়ে এই মানুষটিকে বাঁচাবে। কিন্তু জীবিত অবস্থায় সেটা করা সম্ভব না।

এজন্য তাকে মরতে হবে। এবং মরার আগে উইলে হার্ট দানের কথাটা লিখতে হবে। আর একটা কাজ করা দরকার, হসপিটালের ইমারজেন্সিতে খবর দিতে হবে, (মারা যাবার পরে যাতে তারা ইমিডিয়েটলি আমার হার্ট নিয়ে নিতে পারে )।
হ্যালো...
জি বলুন, কি সাহায্য করতে পারি ?...
আমার বাসার ঠিকানায় একটা এ্যম্বুলেন্স পাঠানো দরকার.. . জরুরী।
একটু ধরুন, আপনার ঠিকানাটা লিখে নিই।

আর কারনটা বলুন প্লিজ, কেউ কি অসুস্থ?
অসুস্থ না। সুইসাইড!
বলেন কি ? সুইসাইডার কে?
আমি.. . ..
খট্ (টিম রিসিভার নামিয়ে রাখল)।

মারা যাবার আগে সবার মতো টিমও একনজর অতীতে ফিরে যায়। ফাশ ব্যাকে দেখা যায় টিম অসতর্কভাবে ড্রাইভিং করে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটায়। দুটি গাড়ি দুমড়ে মুচড়ে যায়।

তার স্ত্রীসহ ৭ জন ডেড্। সাতজনকে অঙ্গ দান করার কারন পরিস্কার হলো এবার। তবে ছবির শুরুতে কালো পর্দায় একটা কোটেশন ভেসে ওঠে। “গড সাতদিনে দুনিয়া সৃষ্টি করেছেন. . . . ..” সম্ভবত এটা বাইবেল থেকে কোট করা। ছবির সাথে এর সংশ্লিষ্টতা বুঝলামনা।


সুইসাইড করার প্রক্রিয়া ভয়ংকর! পানিভর্তি বাথটাবে শুয়ে তাতে পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত প্রানী* ছেড়ে দেয় টিম. . . ব্যাস। “কি সহজে হয়ে গেল বলা. .. .’র মতো করে টিম মরে যায়। এমিলি বেঁচে থাকে।
সিনেমা শেষ।

* পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত প্রানী জ্যালি ফিস ।



সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিবছর কতো লোক মারা যায় ?
বাংলাদেশের পরিসংখ্যান জানি না, (“নিরাপদ সড়ক চাই”র প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন জানতে পারেণ) তবে বিশ্বব্যাপী এর সংখ্যা ভয়াবহ...
৯,৭০,০০০ জন।
আঁতকে ওঠার মতো না ?
এই নিহত লোকগুলির হত্যাকারী কতজন জানা নেই।
“টিম থমসন” নামের এক লোক ৭ জনকে মেরেছেন।
আর অন্য একজন (মূসা মামার ভাগিনা). . .. . ..

টিম থমসন ৭ জন মৃতপ্রায় লোককে বাঁচিয়েছেন , অতপর ৮ম একজনকে জেলি ফিস মেরেছে।
অন্য একজন কৌতুহল নিয়ে জেলি ফিসে কামড়ানোর দৃশ্যটা পিছনে টেনে বারবার দেখছে -পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত প্রানী (জেলি ফিস) কিভাবে কামড়ায় ! অক্টোপাসের মতো অদ্ভুত এই প্রানীটির কি দাঁত আছে ? এর মুখই-বা কোথায় ? দেখতে কিন্তু খারাপ না।

কেমন নরম তুলতুলে। ছুয়ে দেখতে ইচ্ছা করে। আবার ঘেন্নায় গা কেমন শিরশির করে। ঝোকের মতো দেখতে !!!!

মানুষ এতো কৌতুহলী !!!!!


 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।